রোববার (০২ জুলাই) শহরের গোলাহাট বাজারে মিষ্টিকে শাক বিক্রি করতে দেখা গেছে। উত্তর জনপদের অত্যন্ত জনপ্রিয় ও সুস্বাদু ঢেঁকিয়া শাক বিক্রি করছিল সে।
মূলত জংলি ঢেঁকিয়া শাক মেলে বাঁশঝাড়, ইটের স্তুপ, পুরনো বিল্ডিং, খাল-বিলের ধারে। ওই শাক তুলে বিক্রি করে মিষ্টি।
মিষ্টি জানায়, প্রতিদিন মাদ্রাসা ছুটির পর সে নেমে পড়ে শাক সংগ্রহে। দেশের বৃহত্তম রেলওয়ে কারখানার অভ্যন্তর, গোলাহাট কবরস্থান ও আশেপাশের জঙ্গল তার শাকের উৎস। শাক তুলে আঁটি বেঁধে পরের দিন মাদ্রাসায় যাওয়ার আগে বাজারে বিক্রি করতে নিয়ে যায়।
শাকের প্রতি আঁটি বিক্রি হয় ১০ টাকা দরে। সারাদিনে ২৫ থেকে ৩০ আঁটি শাক বেচে মিষ্টি। এ থেকে আয় হয় প্রায় ৩০০ টাকা। যা দিয়ে নিজের ও দুই ভাইয়ের পড়ার খরচসহ খাবার যোগায় সে। মিষ্টির বাবা সৈয়দপুর রেলগেট বাজারের ভাঙারি দোকানের কর্মচারী ইসমাইল হোসেন (৩০)। অল্প আয়ে ছেলে-মেয়েদের পড়াশোনার খরচ চালাতে পারেন না তিনি।
মিষ্টি পরিবারের বড় মেয়ে। তার দুই ছোট ভাই সোহেব ও মহিউদ্দিন পড়ে পাশের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ২য় ও শিশু শ্রেণিতে।
মিষ্টিদের বাড়ি গোলাহাট কবরস্থান এলাকায়। রেলের পতিত জমিতে ছাপড়া তুলে থাকে পরিবারটি।
ওই বাড়িতে তার মা সোনি বেগম (২৫) বলেন, ‘মিষ্টির ইচ্ছে, সে লেখাপড়া শিখে অনেক বড় হবে। বাবা- মায়ের অভাব ঘোচাবে। তাই অভাব সত্ত্বেও তাকে মাদ্রাসায় ভর্তি করে দিয়েছি। নিজের খরচ নিজেই চালায় মিষ্টি। সেই সঙ্গে ছোট দুই ভাইয়ের দায়িত্বও কাঁধে তুলে নিয়েছে সে’।
মিষ্টির মাদ্রাসার সুপার রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘লেখাপড়ার জন্য এতো কষ্ট করে, তা জানতাম না। শুধু জানি, সে খুব ভালো ছাত্রী। দেখি, তার জন্য কি করা যায়’।
বাংলাদেশ সময়: ০৪০৪ ঘণ্টা, জুলাই ০৪, ২০১৭
এএসআর