ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৮ ভাদ্র ১৪৩১, ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৮ সফর ১৪৪৬

শিক্ষা

বনশ্রী আইডিয়ালের সেই শিক্ষককে শো’কজ করা হচ্ছে

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২০৩ ঘণ্টা, জুলাই ১২, ২০১৭
বনশ্রী আইডিয়ালের সেই শিক্ষককে শো’কজ করা হচ্ছে স্কুলের সঙ্গে কোচিংয়ের পরীক্ষার প্রশ্নপত্রের প্রায় হুবহু মিল। ছবি: বাংলানিউজ

ঢাকা: প্রাইভেট-কোচিংয়ের প্রশ্নে স্কুলের পরীক্ষা নেওয়ার অভিযোগে রাজধানীর আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের বনশ্রী শাখার সহকারী শিক্ষক শহীদুল্লাহ তরফদারকে কারণ দর্শনোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে কর্তৃপক্ষ।

স্কুলের অর্ধবার্ষিক পরীক্ষার প্রশ্নপত্রের সঙ্গে কোচিংয়ের প্রশ্নের প্রায় হুবহু মিলের পর এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রতিষ্ঠানের ড. অধ্যক্ষ শাহান আরা বেগম।

অভিভাবকদের অভিযোগ, নিষিদ্ধ থাকলেও গণিতের ওই শিক্ষক রমরমা কোচিং ও প্রাইভেট বাণিজ্য করে আসছেন।

গত ০৯ জুলাই স্কুলের চতুর্থ শ্রেণির গণিতের অর্ধবার্ষিক পরীক্ষার প্রশ্নপত্রের সঙ্গে এক সপ্তাহে আগে নেওয়া তার কোচিংয়ের পরীক্ষার প্রায় হুবহু মিল পাওয়া যায়।

নিজের বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে ওই শিক্ষক কোচিংয়ের প্রশ্নের ওপরে নিজের নামের জলছাপও ব্যবহার করে আসছেন।

প্রতিষ্ঠানের বনশ্রী শাখার চতুর্থ শ্রেণির প্রায় সাড়ে ছয়শ’ শিক্ষার্থীর পাশাপাশি মতিঝিল ও মুগদা শাখারও ওই শ্রেণির শিক্ষার্থীদের অভিভাবকেরা এজন্য ক্ষোভ প্রকাশ করেন।

অভিভাবকদের অভিযোগের প্রেক্ষিতে মঙ্গলবার (১১ জুলাই) দুই প্রশ্নপত্রের ছবিসহ সংবাদ প্রকাশ করে বাংলানিউজ। এ সংবাদে বেশ সমালোচনার মুখে পড়েন শহীদ‍ুল্লাহ তরফদার।

প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ ড. অধ্যক্ষ শাহান আরা বেগম বুধবার (১২ জুলাই) বিকেলে বাংলানিউজকে বলেন, ‘দুপুরে বনশ্রী শাখার সহকারী প্রধান শিক্ষক মোয়াজ্জেম হোসেনকে ফোন করে বিষয়টি জানতে চেয়েছি। তিনি জানিয়েছেন, ক্লাসের পরীক্ষার প্রশ্নপত্রের সঙ্গে কোচিংয়ের ৬০-৭০ শতাংশ মিল পাওয়া গেছে। এ বিষয়ে অভিভাবকেরা অভিযোগও দিয়েছেন। অভিভাবকরা জানিয়েছেন, শহীদুল্লাহ তরফদার নিজে প্রশ্নপত্র প্রণয়ন করে প্রাইভেট-কোচিং ও ক্লাসের পরীক্ষা নিয়েছেন’।

অধ্যক্ষ ড. অধ্যক্ষ শাহান আরা বেগম বলেন, ‘দুই প্রশ্নপত্র মিলে যাওয়ায় আমরা শহীদুল্লাহ তরফতারকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেবো’।

‘তাকে জবাবদিহি করতেই হবে’।

বৃহস্পতিবার (১৩ জুলাই) তাকে শো’কজ নোটিশ দেওয়া হবে জানিয়ে অধ্যক্ষ বলেন, ‘জবাব পাওয়ার পরে অভিযোগ প্রমাণিত হলে একাডেমিক কমিটির সভায় তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে’।

অভিযোগের বিষয়ে মঙ্গলবার মন্তব্য চাইতে গেলে সহকারী শিক্ষক শহীদুল্লাহ তরফদার চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে বলেছিলেন, ‘আমি প্রাইভেট-কোচিং চালিয়ে যাবো, যা পারেন করেন। সাংবাদিক হয়েছেন তো কি হয়েছে? আপনি কিচ্ছু করতে পারবেন না!’

প্রাইভেট-কোচিং নিষিদ্ধ হলেও শিক্ষার্থীরা শহীদুল্লাহ তরফদারের কাছে প্রাইভেট বা কোচিংয়ে না গেলে নানাভাবে নির্যাতন ও হেনস্তা করা হয় বলেও অভিযোগ করেন অভিভাবকরা। মতিঝিলে প্রতিষ্ঠানটির প্রধান ক্যাম্পাসসহ মুগদায়ও শাখা রয়েছে। ওই শিক্ষকের কারণে সব শাখারই সুনাম ক্ষুণ্ন হচ্ছে বলেও মনে করেন তারা।

ওই শিক্ষকের এসব কর্মকাণ্ডে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন অধ্যক্ষ শাহান আরা বেগমও।

বাংলাদেশ সময়: ১৮০০ ঘণ্টা, জুলাই ১২, ২০১৭
এমআইএইচ/এএসআর

** কোচিংয়ের প্রশ্নে স্কুলে পরীক্ষা! ‘যা পারেন করেন’

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।