ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৯ ভাদ্র ১৪৩১, ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৮ সফর ১৪৪৬

শিক্ষা

‘উপযুক্ত সময়ে বীজ বপন করতে হয়’

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯২২ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ৫, ২০১৭
‘উপযুক্ত সময়ে বীজ বপন করতে হয়’ ঢাবির ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান অরুণ

পাথরঘাটা (বরগুনা): ÔFair seed time’- উপযুক্ত সময়েই বীজ বপন করতে হয়। একজন শিক্ষার্থীর শিক্ষাজীবনে সঠিক সময় সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত। যেমনটি ১৯৭২ থেকে ১৯৭৫ সাল পর্যন্ত জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন’। 

বাংলানিউজকে এসব কথা বলেছেন সদ্য নিয়োগ পাওয়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান অরুণ।  

বরগুনা জেলার পাথরঘাটা উপজেলার কাঠালতলী ইউনিয়নের কালীপুর গ্রামের বাড়িতে সোমবার (০৪ সেপ্টেম্বর) রাতে একান্ত আলাপকালে তিনি বলেন, ‘আজকের বাংলাদেশ শিক্ষাসহ বিভিন্ন উন্নয়নের ক্ষেত্রে যে অবস্থানে, তার প্রত্যেকটির বীজ ১৯৭২ থেকে ১৯৭৫ সাল পর্যন্ত সাড়ে ৩ বছরে বপন করেছেন বঙ্গবন্ধু।

ওই বীজ এমন জায়গায় প্রস্ফ‍ূটিত হয়েছে যে, আজকের অজো পাড়া-গাঁয়েও বিদ্যুৎ জ্বলে, পিচ ঢালাই রাস্তা- এটি অভাবনীয় ও অকল্পনীয়। এটি দেশের সব জায়গাতেই’।  

‘এ সকল সুযোগ-সুবিধার কারণেই প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে আমরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হতে পেরেছি, প্রফেসর হতে পেরেছি। আজকের এখানেও লক্ষ্য করেছি, পাথরঘাটা উপজেলার অসংখ্য শিক্ষার্থী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন নামকরা বিশ্ববিদ্যালয় পড়াশোনা করছে’।  

উপকূলীয় অঞ্চলের সন্তান হিসেবে এ অঞ্চলের শিক্ষার্থী এবং শিক্ষা নিয়ে কতোটুকু ভূমিকা রাখবেন- এমন প্রশ্নের জবাবে আখতারুজ্জামান অরুণ বলেন, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় একটি সার্বজনীন, গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান। এ প্রতিষ্ঠানটি সবার জন্য উম্মুক্ত’।  

‘আমরাই উদাহরণ হলাম। যখন এ অঞ্চল পশ্চা‍ৎপদ ছিল, তখন সেখান থেকেইতো আমরা উঠে এসেছি, আমাদের পুর্বপুরুষেরাও উঠে এসেছেন। এ প্রজন্মের জন্যতো অনেক সুবিধা রয়েছে, তাদের জন্য দ্বার উম্মুক্ত। আমার পরামর্শ থাকবে, যে যেখানেই লেখাপড়া করুক না কেন, ভালোভাবে করবে। তাহলেই সামনের দিনগুলোতে বিভিন্ন উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানেও ভালো করতে পারবে। আর একটি গবেষণায় দেখেছি, বরগুনা জেলা শিক্ষায় অনেক ওপরে। এমন প্রত্যেকটি উদাহরণ নতুন প্রজন্মের জন্য অনুপ্রেরণা’।  

মো. আখতারুজ্জামান কালীপুর গ্রামের মৃত মৌলভী আবুল হাসেম খান ও মৃত ঈরণ ভানুর সন্তান। ৪ ভাই ও ৩ বোনের মধ্যে দ্বিতীয় তিনি।  

আখতারুজ্জামান প্রাথমিকে লেখাপড়া করেন নিজ গ্রাম সংলগ্ন দক্ষিণ-পূর্ব কালীপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। ১৯৭৯ সালে এসএসসি পাস করেন ঐতিহ্যবাহী কালামেঘা মুসলিম মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও ১৯৮১ সালে এইচএসসি পাস করেন বরগুনা সরকারি কলেজ থেকে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অনার্স-মাস্টার্স শেষ করেন।  

আখতারুজ্জামান অরুণ ও সালমা জামান দম্পতির ছেলে আশিক খান রাজধানীর হলিফ্যামিলি মেডিকেল কলেজে এমবিবিএসের তৃতীয় বর্ষে ও  মেয়ে আফিয়া খান হলিক্রস কলেজে একাদশ শ্রেণিতে লেখাপড়া করছেন।

প্রত্যন্ত অঞ্চলের ঐতিহ্যবাহী মুসলিম পরিবারে জন্ম নেওয়া আখতারুজ্জামান অরুণের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য নিয়োগ পাওয়ার খবর ছড়িয়ে পড়লে উৎসুক মানুষ ভিড় জমাচ্ছেন তাকে দেখতে। ছুটে আসছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান ও সাবেক শিক্ষার্থী, স্থানীয় বিশিষ্ট ব্যক্তি, জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসনের কর্মকর্তারা।  

পাথরঘাটা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম রিপন বাংলানিউজকে বলেন, ‘উপকূলের প্রত্যন্ত অঞ্চলের সন্তান আখতারুজ্জামান অরুণকে ভিসি নিয়োগ দেওয়ায় আমরা গর্বিত। পাথরঘাটা উপজেলাবাসী তাকে অভিনন্দন জানাই। তিনি শুধু পাথরঘাটাই নয়, গোটা দক্ষিনাঞ্চলের মুখ উজ্জ্বল করেছেন’।  

১৯৯০ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগে প্রভাষক হিসেবে যোগ দিয়ে ২০০৪ সালে অধ্যাপক হন আখতারুজ্জামান। ১৯৯৭ সালে ফুলব্রাইট স্কলার পিএইচডি করেন ভারতের আলীগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ে। ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের চেয়ারম্যান ও কলা অনুষদে ডিনের দায়িত্ব পালন করা অধ্যাপক আখতারুজ্জামানকে গত বছরের ২২ জুন উপ-উপাচার্য নিয়োগ দেয় সরকার।  

আওয়ামী লীগ সমর্থক শিক্ষকদের নীল দলের প্যানেল থেকে ২০০৪, ২০০৫ ও ২০০৬ মেয়াদে তিনদফা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন তিনি।

বাংলাদেশ সময়: ০১১৯ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ০৬, ২০১৭
এএসআর
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।