ঢাকা, রবিবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিক্ষা

এমসিকিউ পুরোপুরি তুলে দেয়া উচিত: শিক্ষাসচিব

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৭৫২ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১২, ২০১৭
এমসিকিউ পুরোপুরি তুলে দেয়া উচিত: শিক্ষাসচিব এমসিকিউ পুরোপুরি উঠিয়ে দেয়া উচিত

ঢাকা: পাবলিক পরীক্ষায় বহুনির্বাচনী (এমসিকিউ) প্রশ্ন শিক্ষার্থীদের ধ্বংস করছে মন্তব্য করে তা সম্পূর্ণভাবে উঠিয়ে দেওয়ার পক্ষে মত দিয়েছেন শিক্ষাসচিব সোহরাব হোসাইন। এমসিকিউ অংশ উঠিয়ে দেওয়ার বিষয়ে শিক্ষাবিদ ও সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলোচনায় বসা হবে বলেও জানান তিনি।

মঙ্গলবার (১২ সেপ্টেম্বর) সচিবালয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে মাধ্যমিক স্তরের পরিমার্জিত ছয়টি বই হস্তান্তর অনুষ্ঠানে নিজের মতামত ব্যক্ত করেন সোহরাব হোসাইন।
 
বর্তমানে এসএসসি ও এইচএসসিতে শুরুতে এমসিকিউ অংশের পরীক্ষা নেওয়া হয়ে থাকে।

দুই পরীক্ষায় এমসিকিউ থেকে ১০ নম্বর কেটে সৃজনশীল অংশে যোগ করা হলেও এমসিকিউ অংশের উত্তর মেলানো নিয়ে অনেক দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে।
 
তিনি বলেন, এমসিকিউটা বোধহয় পরিপূর্ণভাবে উঠিয়ে দেওয়া উচিত, এটা আমার ব্যক্তিগত অভিমত। আমরা নিশ্চিয়ই আগামীতে আপনাদের সঙ্গে বসব।
 
‘কেন বলছি, এমসিকিউ কিভাবে ধ্বংস করছে? বেশ কিছু প্রতিষ্ঠান শিক্ষককে যে কোনো উপায়ে কনভিন্স করে ওই কক্ষের সব ছাত্রছাত্রী ৩০ মার্কস পেতে পারেন সেই ব্যবস্থা করে দিচ্ছেন। একজনকে বলে দিচ্ছেন তিনি আবার পাস করে দিচ্ছেন। এটা অর্থের বিনিময়ে হচ্ছে বলে আমাদের কাছে রিপোর্ট আসছে’।
 
এমসিকিউয়ে ভুল উত্তর দেওয়ার ঘটনাও ঘটছে বলে জানান শিক্ষাসচিব।
 
তিনি বলেন, আরেকটা ধ্বংস হচ্ছে যে ভুল আনসার দিচ্ছেন। অনেকগুলো ঘটনা এমন ঘটেছে, সবগুলো সবজেক্টে যে আশির উপরে পেয়েছে কিন্তু একটা সাবজেক্টে গিয়ে দেখা গেছে মূল প্রশ্নে ঠিকমত পেয়েছে কিন্তু এমসিকিউতে গিয়ে সাত পেয়েছে, আট পেয়েছে। সেখানে ১০ পাওয়ার বাধ্যবাধকতা আছে, রাজউক কলেজে এ ঘটনা ঘটেছে। ১০জন ছাত্র ফেল করেছে, কারণ তারা এমসিকিউতে ৭-৮ পেয়েছে।
 
তবে তারা অন্য অভিযোগ করে বলেছে জানিয়ে শিক্ষাসচিব বলেন, সংশ্লিষ্ট শিক্ষক তাদের খাতা নিয়ে গেছে। নিশ্চয় কোনো কারণ ছিল নইলে খাতা নিয়ে গেল কেন? এরপরেও ঢাকা বোর্ডকে বিষয়টি তদন্ত করতে বলেছি যে তারা কি ৩০ নম্বরের উত্তর দিয়ে ৮ পেয়েছে নাকি ১০ নম্বরের উত্তর দিয়ে ৮ পেয়েছে। ধারণা করতে পারবো, খাতা নেওয়াটাই কারণ কি না? নাকি আসলেই কম পেয়েছে। তারা কম পাওয়ার মতো ছাত্র না।
 
প্রশ্ন ফাঁসের সূত্র পেলে পাওয়ার আহ্বান জানিয়ে শিক্ষাসচিব বলেন, আমরা সেটা ধরার চেষ্টা করি। কিন্তু অনেকেই সেই সূত্র দিতে চান না।
 
এজন্য পরীক্ষার হলে প্রশ্ন ছাপানোর পরিকল্পনার কথাও বলেন শিক্ষাসচিব।
 
‘পরীক্ষার হলে তাৎক্ষণিকভাবে প্রশ্নপত্র ছাপিয়ে পরীক্ষা নেওয়া যায় কি না। এটা কায়কোবাদ স্যারকে (বুয়েট অধ্যাপক) সমন্বয় করে উনার সহযোগিতা নিতে হবে। আমরা চেষ্টা করেছি দেশের সেরা মানুষ যারা তাদের সহযোগিতা নেওয়ার জন্য’।
 
শিক্ষামন্ত্রী এবং শিক্ষাবিদদের সামনে শিক্ষাসচিব বলেন, আমাদের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ কাজ নিয়ে সমালোচনা হয়, আমরা জবাব দিতে পারি না। যেমন ধরুন, আমাদের প্রশ্নপত্র নিয়ে অনেক সমালোচনা হয়, কেউ কেউ এমনও লিখেছেন মন্ত্রী, সচিব, উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তারা টাকার বিনিময়ে প্রশ্ন আউট করে দিচ্ছেন। কিন্তু বোর্ডের চেয়ারম্যানেরও প্রশ্নপত্র দেখার কোনো সুযোগ নেই।
 
শিক্ষা আইন মন্ত্রিসভায় উপস্থাপনের জন্য প্রস্তুত হয়েছে বলেও জানান শিক্ষাসচিব।
 
তিনি বলেন, প্রায় ছয় বছর ধরে কাজ চলছে। শিক্ষা আইনের অভাবে আমরা অনেক কিছু করতে পারি না। সেটি বোধহয় এ সপ্তাহে মন্ত্রিসভায় তোলার জন্য মোটামুটি রেডি হয়ে গেছে।
 
‘খুব কঠিন কঠিন কিছু বিষয় আছে সেখানে আপনাদের সাহায্য লাগবে, আপনাদের লেখালেখিতেও সাহায্য লাগবে। বেশ কঠিন কিছু বিষয় আছে যেটা অনেক প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি হতে পারে। সেজন্য আমরা সব মহলের মতামত, সবার সমর্থন, সবকিছু নেওয়া চেষ্টা করেছি। এবং সেগুলো মন্ত্রিসভারও বিভিন্ন সদস্য অত্যন্ত গুরুত্বসহকারে দেখবেন, কারণ বিষয়টি সবাইকে স্পর্শ করবে’।
 
বাংলাদেশ সময়: ১৩৫০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১২, ২০১৭
এমআইএইচ/এসএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।