শুক্রবার (১৫ সেপ্টেম্বর) বিকেল ৩টা থেকে ৪টা পর্যন্ত ব্যবসায় অনুষদভুক্ত ‘সি’ ইউনিটের পরীক্ষার মধ্যদিয়ে এবারের ভর্তি পরীক্ষা শুরু হয়েছে।
জানা যায়, ভর্তি আবেদনে অধিক জিপিএ চাওয়া ও প্রথমবারের মত অন্য শাখা বাদ দিয়ে কেবলমাত্র 'বানিজ্য' শাখার শিক্ষার্থীদের জন্য 'সি' ইউনিটকে সেট করায় পরীক্ষার্থী কমেছে কয়েকগুণ।
এছাড়া প্রতিবার ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থী বেশি থাকায় যেখানে ২৫-৩০টি কেন্দ্রে পরীক্ষা নেওয়া হতো এবার সেখানে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়সহ ৬টি কেন্দ্র- ইউনিভার্সিটি ল্যাবরেটরি স্কুল অ্যান্ড কলেজে, উদয়ন উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়, পোগোজ ল্যাবরেটরি স্কুল অ্যান্ড কলেজে, ঢাকা গভর্নমেন্ট মুসলিম হাই স্কুল, বাংলাবাজার সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, ঢাকা কলেজিয়েট স্কুলে ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
পরীক্ষার্থীর সংখ্যা কম হলেও প্রায় বেশিরভাগ কেন্দ্র পুরান ঢাকায় হওয়ায় দুপুরের মধ্যেই পরীক্ষার্থী ও অভিভাবকরা ভির জমাতে থাকেন। একই দিন সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা থাকায় সেটি শেষ করার পরপরই পুরান ঢাকামুখী হতে থাকে পরীক্ষার্থী ও তাদের সঙ্গে আসা অভিভাবকরা। ফলে দুপুর ১২টার দিকেই লোকে লোকারণ্য হয়ে ওঠে ভিক্টোরিয়া পার্ক ও এর আশপাশের এলাকা। এরপর পরীক্ষার্থীদের কেউ দাঁড়িয়ে বা কেউ বসে শেষ মুহুর্তে চোখ বুলিয়ে নেন হাতে থাকা ছোট্ট বুলেটিন কিংবা শীটে। আর অবিভাবকরা সাহস যোগাচ্ছেন তাদের।
এমন সময় কথা হয় ময়মনসিংহ থেকে আসা আনন্দমোহন কলেজের শিক্ষার্থী রেদওয়ানুল আহসানের সঙ্গে। রেদওয়ানুল বাংলানিউজকে বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) পরেই এখন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থান। তাই আমারও সেকেন্ড চয়েস জবি। যদিও ঢাবির পরীক্ষা ভালো হয়েছে তবুও যদি সেখানে চান্স না হয়, তাহলে এখানে ভর্তি হয়ে আমার স্বপ্নপূরণ করতে চাই।
রেদওয়ানুলের সঙ্গে আসা তার বাবা ইমতিয়াজ আহমেদ বলেন, এবার এখানে ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীদের জন্য জিপিএ চাওয়া হয়েছে অনেক বেশি, যা সচরাচর অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ে চাওয়া হয়না। তাই আমার মনে হয় এবার বেশ জমজমাট লড়াই হবে পরীক্ষার্থীদের মধ্যে, কারণ এখানে প্রায় সবাই সেরাদের কাতারে থাকা শিক্ষার্থী।
এদিকে পরীক্ষার্থীদের সুবিধার্থে হেল্প ডেস্ক খুলেছে বিভিন্ন জেলার ছাত্র সংগঠন। নবীন শিক্ষার্থীদের শুভকামনা জানিয়ে ব্যানার টেনেছে অনেক সংগঠন। এর বাইরে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কাউট টিম ও বিএনসিসি টিমের উদ্যোগে রয়েছে বেশ কিছু হেল্প ডেস্ক। সব সময় জবিতে প্রবেশে একটি গেট ব্যবহৃত হলেও পরীক্ষার্থীদের সুবিধার্থে কলা অনুষদের পাশে একটি গেট চালু করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
অপরদিকে, ভর্তি পরীক্ষায় জালিয়াতি ঠেকাতে পরীক্ষা শুরুর ১৫ মিনিট আগেই সব কেন্দ্রের মূলফটক বন্ধ করে দেওয়া হয়। তবে এরপরেও বেশ কয়েকজন পরীক্ষার্থীকে ‘মানবিক’ কারণে পরীক্ষা কেন্দ্রে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়েছে।
এছাড়া যেকোনো ধরনের অনিয়ম ঠেকাতে ও পরীক্ষা সুষ্ঠুভাবে সম্পাদনের জন্য পরীক্ষার হলে মোবাইল ফোনসহ টেলিযোগাযোগ করা যায় এরূপ কোনো ইলেক্ট্রনিক্স ডিভাইস/যন্ত্র সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। ভ্রাম্যমাণ আদালত পরীক্ষার সময় দায়িত্ব পালন করছে।
এ বিষয়ে ‘সি’ ইউনিট ভর্তি কমিটির সভাপতি ও ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদের ডিন ড. মনিরুজ্জামান বলেন, এখন পর্যন্ত আমাদের কাছে কোনো ধরনের নৈতিকতা খবর আসেনি। আশা করছি সুন্দরভাবে পরীক্ষা শেষ হবে।
ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীর সংখ্যা এবার হঠাৎ কমে যাওয়ার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা এবার জিপিএ বাড়িয়ে ৮.৫০ দিয়েছি। যাদের জিপিএ পয়েন্ট বেশি এবং ভালো শিক্ষার্থী শুধু তাদেরই জবিতে পড়ার সুযোগ পাচ্ছে। পয়েন্টের পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের ভর্তি পরীক্ষায় ভালো করতে হবে। এজন্য ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থী হয়তো কিছুটা কম। এছাড়া ভর্তিচ্ছু কম হলে আমাদের কন্ট্রোলিং সিস্টেমটা ভালো থাকে, কন্ট্রোল করা সহজ হয়।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৩০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৫, ২০১৭
ডিআর/ওএইচ/