ঢাকা, বুধবার, ২০ ভাদ্র ১৪৩১, ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০০ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিক্ষা

পড়ালেখায় আগ্রহ হারাচ্ছে চা শ্রমিক সন্তানরা 

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯৫০ ঘণ্টা, নভেম্বর ১, ২০১৭
পড়ালেখায় আগ্রহ হারাচ্ছে চা শ্রমিক সন্তানরা  পড়ালেখায় আগ্রহ হারাচ্ছে চা শ্রমিক সন্তানরা 

মৌলভীবাজার: কিশোর বয়েসেই লেখাপড়ার প্রতি হারাচ্ছে আগ্রহ চা শ্রমিক সন্তানরা। অল্প বয়সে জীবিকার তাগিদে কর্মসংস্থানে জড়িয়ে ইতি টানছে শিক্ষা জীবনের। পড়ালেখায় সরকারি নানা সুযোগ-সুবিধার পরও সফলতা আসছে না চা-বাগান অধ্যুষিত শ্রীমঙ্গল উপজেলায়।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, চায়ের নগরী শ্রীমঙ্গল উপজেলায় এবার জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট (জেএসসি) ও জুনিয়র দাখিল সার্টিফিকেট (জেডিসি) পরীক্ষায় ৫১৩৭ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে অনুপস্থিত ১০৬ শিক্ষার্থী। এদের বেশির ভাগই চা শ্রমিকদের সন্তান।


 
বুধবার (১ নভেম্বর) অনুষ্ঠিত বাংলা প্রথমপত্র পরীক্ষায় উপজেলার ২৮টি শিক্ষার্থী প্রতিষ্ঠানে ৪৭৬৩ জন জেএসসি এবং ৫টি মাদ্রাসায় ৩৭৪জন জেডিসি পরীক্ষার্থী রয়েছে। উপজেলার মোট পরীক্ষার্থীর মধ্যে মেয়ের সংখ্যাই বেশি। মেয়েদের সংখ্যা ২৮৬০ এবং ছেলে ২২৭৭ জন।
 
অনুপস্থিত শিক্ষার্থীর বেশিভাগই চা বাগান অধ্যুষিত এলাকার বিদ্যালয়গুলোতে পড়াশোনা করে। এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের চা শ্রমিক সন্তানরা নানা কারণে নিজ নিজ বিদ্যালয়ে রেজিস্ট্রেশন বা ফরম পূরণ করেও শেষ পর্যন্ত চূড়ান্ত পরীক্ষায় উপস্থিত হচ্ছে না। ফলে বিদ্যালয়গুলো শতভাগ পাশের হার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
 
বুধবার (১ নভেম্বর) দুপুর ১২টায় ভিক্টোরিয়া উচ্চ বিদ্যালয়, শ্রীমঙ্গল উদয়ন উচ্চ বালিকা বিদ্যালয় ঘুরে দেখা যায় শান্তিপূর্ণ পরিবেশে পরীক্ষা চলছে।
 
ভিক্টোরিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক অয়ন চৌধুরী এ প্রসঙ্গে বলেন, পড়াশোনার প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলছে চা শ্রমিকদের সন্তানরা। তারা কিশোর বয়সেই কর্মসংস্থানের প্রতি বেশি ঝুঁকছে। দোকানে দোকানে পার্টটাইম কাজ করছে এরা। এদের সামান্য মাসিক উপার্জনকে তাদের বাবা-মা বেশি গুরুত্ব দিয়ে শিক্ষাজীবনের প্রতি অনিহা গড়ে তুলছেন।
 
তিনি উদাহরণ হিসেবে বলেন, ভৈরবগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয়ের ২০৬ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে উপস্থিত ২০০ জন। যে ছয়জন অনুস্থিত তারা প্রত্যেকেই চা শ্রমিক সন্তান।
 
শ্রীমঙ্গল উদয়ন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কবিতা দাস বলেন, আমার স্কুলে ৩৪১ জন শিক্ষার্থী জেএসসি পরীক্ষার ফরম পূরণ করে ৭ জন অনুপস্থিত। এই ৭ জন শিক্ষার্থীর বেশির ভাগই চা শ্রমিক সন্তান।

চা শ্রমিক সন্তানদের পড়াশোনার প্রতি অনাগ্রহের বিষয়টি স্বীকার করে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা দিলিপ কুমার বর্ধন বলেন, অন্য বছরের তুলনায় এবার অবশ্য কিছু কম।
 
বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক এবং চা শ্রমিকনেতা রামভজন কৈরি বাংলানিউজকে বলেন, আমরা বিষয়টি নিয়ে বিভিন্ন বাগানে বাগানে কাউন্সিলিং করি, যেন চা শ্রমিকরা তাদের সন্তানদের নিয়মিত স্কুলে পাঠায় এবং তাদের শিক্ষাজীবনের সুযোগ করে দেয়।
 
সন্তানদের শিক্ষার সুযোগদানের বিষয়টি চা বাগান মালিকপক্ষের সঙ্গে চুক্তিতে রয়েছে বলেও জানান রামভজন কৈরি।
 
 বাংলাদেশ সময়: ১৫৪৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ০১, ২০১৭
বিবিবি/এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।