সমাপনী পরীক্ষা উপলক্ষে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রী মোস্তাফিজুর রহমান ফিজার বুধবার (১৫ নভেম্বর) সচিবালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান।
এ বছর দেশের সাত হাজার ২৬৭টি এবং বিদেশের ১২টি কেন্দ্রে ১৯ নভেম্বর পরীক্ষা শুরু হয়ে শেষ হবে ২৬ নভেম্বর।
পরীক্ষায় গত বছর ৩২ লাখ ৩০ হাজার ২৮৮ জন অংশ নিয়েছিলো। সে হিসেবে এবার পরীক্ষার্থী কমেছে এক লাখ ৩৪ হাজার ২১৩ জন।
২০১৫ সালে পঞ্চমের সমাপনীতে ৩২ লাখ ৫৪ হাজার ৫১৪ জন পরীক্ষা দিয়েছিল। ২০১৬ সালে পরীক্ষায় বসে ৩২ লাখ ৩০ হাজার ২৮৮ জন, যা আগের ২০১৫ সালের থেকে ২৪ হাজার ২২৬ জন কম।
২০১৭ সালের মাধ্যমে পঞ্চমের সমাপনী পরীক্ষায় টানা দুই বছর পরীক্ষার্থী কমলো।
পরীক্ষার্থী কমার প্রশ্নে মন্ত্রী বলেন, আগে এনরোলমেন্টের মধ্যে কিছু ফেক ছিল। এখন আমরা শহর, বন্দর, নগর, মহানগরে শতভাগ বৃত্তি দিচ্ছি, কোনো জায়গা উপবৃত্তির বাইরে নেই। কম্পিউটারাইজড পদ্ধতি ও অনলাইন ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে কাজগুলো করা হচ্ছে। এর মধ্য দিয়ে কোনো কোনো জায়গায় যে ল্যাপসেসগুলো ছিল তা ক্লিয়ার করতে পেরেছি।
মন্ত্রী জানান, এবার ছাত্রদের চেয়ে এক লাখ ৮৯ হাজার ৮০১ জন বেশি ছাত্রী সমাপনীতে অংশ নেবে। এটি আশাব্যাঞ্জক যে, মেয়েরা প্রতিটি ক্ষেত্রে ক্রমশ এগিয়ে যাচ্ছে।
প্রাথমিক সমাপনীতে দুই হাজার ৯৫৩ জন এবং ইবতেদায়িতে ৩৭৯ জন বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন পরীক্ষার্থী অংশ নেবে। তারা অতিরিক্ত ২০ মিনিট সময় পাবে।
পরীক্ষা সুষ্ঠুভাবে শেষ করতে যাবতীয় প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, প্রশ্নপত্র বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থায় জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। পরীক্ষার দিন উপজেলা থেকে কেন্দ্র সচিবের কাছে প্রশ্ন পৌঁছে দেওয়া হবে। দুর্গম এলাকার ২০৪টি কেন্দ্রে বিশেষ ব্যবস্থায় প্রশ্ন পাঠানো হয়েছে।
পরীক্ষার দায়িত্ব পালনে ন্যূনতম অবহেলা বা অনিয়মের বিষয়ে ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি গ্রহণ করা হয়েছে বলে জানান মন্ত্রী।
তিনি বলেন, প্রশ্ন ফাঁসরোধে সব ধরনের সতর্কতা নিতে সংশ্লিষ্টদের বলা হয়েছে। পরীক্ষাকেন্দ্রে মোবাইল ব্যবহার করা যাবে না। পরীক্ষা সুষ্ঠুভাবে নেওয়ার জন্য যতো ধরনের ছিদ্র এখন পর্যন্ত আবিষ্কার হয়েছে সবটাই বন্ধ করার আমরা চেষ্টা করছি।
পঞ্চম শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের জন্য ২০০৯ সাল থেকে প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষা শুরু হয়। আর ইবতেদায়িতে এ পরীক্ষা হয়েছে ২০১০ সাল থেকে।
প্রথম দুই বছর বিভাগভিত্তিক ফল দেওয়া হলেও ২০১১ সাল থেকে গ্রেডিং পদ্ধতিতে ক্ষুদে শিক্ষার্থীদের সমাপনীর ফল দেওয়া হচ্ছে।
আগে এ পরীক্ষার সময় দুই ঘণ্টা থাকলেও ২০১৩ সাল থেকে পরীক্ষার সময় আধ ঘণ্টা বাড়িয়ে আড়াই ঘণ্টা করা হয়।
প্রশ্ন ফাঁস ঠেকাতে গত বছর থেকে দেশের ৬৪ জেলাকে বিশেষ আটটি অঞ্চলে ভাগ করে আট সেট প্রশ্ন ছাপিয়ে প্রাথমিক ও ইবেতেদায়ী শিক্ষা সমাপনী নিচ্ছে সরকার।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা সচিব মোহাম্মদ আসিফ-উজ-জামান, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. আবু হেনা মোস্তফা কামাল ছাড়াও মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।
পরীক্ষা সূচি
প্রাথমিক সমাপনীতে ১৯ নভেম্বর ইংরেজি, ২০ নভেম্বর বাংলা, ২১ নভেম্বর বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচয়, ২২ নভেম্বর প্রাথমিক বিজ্ঞান, ২৩ নভেম্বর ধর্ম ও নৈতিক শিক্ষা এবং ২৬ নভেম্বর গণিত।
আর ইবতেদায়ীতে ১৯ নভেম্বর ইংরেজি, ২০ নভেম্বর বাংলা, ২১ নভেম্বর বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচয় এবং বিজ্ঞান, ২২ নভেম্বর আরবি, ২৩ নভেম্বর কুরআন ও তাজবিদ এবং ২৬ নভেম্বর গণিত।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৩৮ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৫, ২০১৭
এমআইএইচ/জেডএস