ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিক্ষা

থাকবে না গণিত ভীতি, মুজিব বর্ষে রিডিং পড়বে শতভাগ

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৪২ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৯, ২০১৯
থাকবে না গণিত ভীতি, মুজিব বর্ষে রিডিং পড়বে শতভাগ

ঢাকা: সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিশু শিক্ষার্থীদের বাংলা ও ইংরেজিতে রিডিং পড়ার দক্ষতা বাড়ানোর পাশাপাশি গণিতের ভীতি দূর করতে উদ্যোগ নিয়েছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়।

গণিত ভীতি দূর করে দক্ষতা বাড়াতে আগামী বছরের শুরু থেকে সারাদেশের প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে চালু হতে যাচ্ছে গণিত অলিম্পিয়াড। এই প্রকল্পের মাধ্যমে গণিতের খুঁটিনাটি শিখিয়ে শিশু শিক্ষার্থীদের দক্ষ করা হবে।


 
মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিত করতে সম্প্রতি প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. আকরাম-আল-হোসেন বাংলানিউজের সঙ্গে আলাপকালে মন্ত্রণালয় এবং তার পরিকল্পনার কথা তুলে ধরেন।  
 
আকরাম-আল-হোসেন বলেন, এ বছর গণিতে দক্ষতা বাড়াতে বিশেষ প্রকল্পের মাধ্যমে ৮০টি স্কুলে গণিত অলিম্পিয়াড চালু করেছিলাম। সেই প্রকল্প সফল হয়েছে। আমরা আগামী বছর ১ জানুয়ারি থেকে দেশের সব স্কুলে গণিত অলিম্পিয়াড চালু করতে যাচ্ছি। গণিত অলিম্পিয়াড ২০২১ সালে চালু করার কথা ছিল, তবে আমরা এক বছর এগিয়ে এনেছি।
 
২০২০ সালের জানুয়ারি থেকে সারা দেশের ৬৫ হাজার ৬২৬টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এ প্রকল্প চালু করা হবে। এতে শিক্ষার্থীদের মধ্যে বাংলা ও ইংরেজির মতো গণিত-ভীতিও দূর হবে।
 
এই প্রকল্পের মাধ্যমে বাচ্চারা খেলেতে খেলতে গণিত শিখবে। গণিতের প্রতি যে ভীতি সেটা দূর হয়ে যাবে বলেন প্রাথমিক মন্ত্রণালয়ের সচিব আকরাম।
 
এভাবে বাংলা ও ইংরেজিতে যেমন রিডিংয়ে দক্ষতা অর্জন করবে তেমনি গণিত অলিম্পিয়াডের মাধ্যমে গণিতের সমস্যা কেটে যাবে। আমরা টার্গেট করেছি প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থীদের। ফাউন্ডেশন সফল হলে পরবর্তী ক্লাসগুলোতেও শিক্ষার্থীরা সফল হবে।
 
মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিত করার জন্য এই পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে বলে জানান প্রাথমিক শিক্ষা সচিব।
 
মুজিব বর্ষে রিডিং পড়বে শতভাগ
আকরাম-আল-হোসেন বলেন, এক বছর আগে বিশ্বব্যাংক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছিল যে, প্রাথমিকের তৃতীয় ও পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের ৬৫ শতাংশ বাংলায় রিডিং পড়তে পারে না।
 
গত এক বছরে আমরা প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় বিভিন্ন রকম কার্যক্রম গ্রহণ করেছি। যার ফলে আমরা এখন বলছি ৬৫ শতাংশ শিক্ষার্থী রিডিং করতে পারে। জেলা ও থানাওয়ারি ডাটাবেজের ভিত্তিতে এতথ্য জানান সচিব।
 
প্রাথমিক সচিব বলেন, চলতি বছরে মন্ত্রিপরিষদ সচিবের সঙ্গে যে বার্ষিক কর্ম সম্পাদক চুক্তি এপিএ স্বাক্ষর করেছি সেখানে বলেছি যে, এই বছরের মধ্যে ৭০ শতাংশ বাচ্চা রিডিং পড়তে পারবে। আমাদের টার্গেট হচ্ছে এ বছর ৭০ শতাংশ। আগামী বছরে মুজিব বর্ষে শতভাগ শিক্ষার্থী রিডিং পড়তে পারবে- এটা আমাদের জন্য চ্যালেঞ্জ।
 
শতভাগ রিডিং সংখ্যা অর্জনের পথে অটিস্টিক শিশু, দুর্গম এলাকার শিশুর পাশাপাশি দারিদ্রতার জন্য অভিভাবকদের স্থানান্তর বাধা বলে মনে করেন সচিব।
 
সচিব বলেন, শতভাগ রিডিংয়ের আওতায় আনতে আমরা স্কুলভিত্তিক স্বাভাবিকভাবে যারা বাংলা পড়তে পারবে তাদের একটা তালিকা এবং যারা দুর্বল বাচ্চা তাদের পৃথক তালিকা তৈরি করবো। এরপর শ্রেণিভিত্তিক দুর্বল বাচ্চাদের ওপর ফোকাস দেওয়া হবে যাতে তারা সাবলীলভাবে রিডিং পড়তে পারে।
 
যেসব স্কুলের বাচ্চাদের ৬০ শতাংশের নিচে রিডিং পড়তে পারে সেগুলো দুর্বল এবং যেগুলোতে ৬০ শতাংশের ওপরে রিডিং পড়তে পারে সেগুলোকে সবল স্কুল হিসেবে চিহ্নিত করা হবে বলে জানান সচিব।
 
শিক্ষকদের সম্পৃক্ত করার কথা জানিয়ে সচিব বলেন, বাংলা ও ইংরেজিতে রিডিংসহ দক্ষতা বাড়াতে স্কুলের শিক্ষকরা যেমন ক্লাসের দুর্বল বাচ্চাদের ফোকাস করবে, তেমনিভাবে এটিওদের বলেছি, তাদের ক্লাস্টারে যে দুর্বল স্কুল আছে, সেগুলো চিহ্নিত করে ভিজিট করে তারা সবল করার ব্যবস্থা করবে।
 
সচিব বলেন, শুধু শিক্ষার্থীদের নয়, দুর্বল শিক্ষকদেরও তালিকা তৈরি করা হবে। পরে এসব শিক্ষকদের বিশেষ প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দক্ষ করে গড়ে তোলা হবে। মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিত করতে দক্ষ শিক্ষকের বিকল্প নেই।
 
বাংলাদেশ সময়: ১৬৪১ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৯, ২০১৯
এমআইএইচ/আরবি/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।