গোপালগঞ্জ: গোপালগঞ্জে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বশেমুরবিপ্রবি) কম্পিউটার চুরির ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিটি থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন কমিটির তিন নম্বর সদস্য প্রকৌশলী এস এম এস্কান্দার আলী।
তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার শেষ দিন বৃহস্পতিবার (২০ আগস্ট) বিকেল ৩টার দিকে কম্পিউটার চুরির ঘটনায় গঠিত সাত সদস্যের তদন্ত কমিটি থেকে সরে দাঁড়ান তিনি।
বিকেলে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার বরাবর ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে অব্যাহতি চেয়ে লিখিত আবেদন করেন।
এর আগে, গত ১৮ আগস্ট তদন্ত কমিটির সদস্য পদ থেকে সহকারী রেজিস্ট্রার মো. নজরুল ইসলামকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। তিনি ওই তদন্ত কমিটির সর্বশেষ নম্বর সদস্য ছিলেন। তদন্ত কমিটির সদস্য সচিব প্রফেসর ড. মো. নূরউদ্দিন আহমেদ স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে তাকে অব্যাহতির আদেশ দেওয়া হয়।
গত ৯ আগস্ট এ বিষয়ে গঠিত তদন্ত কমিটিকে সাত কর্মদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। দু’দিন বাকি থাকতে তদন্ত কমিটির সদস্য সহকারী রেজিস্ট্রার মো. নজরুল ইসলামকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। তদন্ত কমিটির বাকি ছয় সদস্যের মতামতের ভিত্তিতে তাকে অব্যাহতি দেয়া হয় বলে চিঠিতে উল্লেখ করা হয়। আর তদন্ত রিপোর্ট জমাদানে শেষ কর্মদিবসে তদন্ত কমিটির আরেক সদস্য এস এম এস্কান্দার আলী স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করলেন।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ও তদন্ত কমিটির সদস্য সচিব প্রফেসর ড. মো. নূরউদ্দিন আহমেদ জানিয়েছেন, ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে প্রকৌশলী এস এম এস্কান্দার আলী কম্পিউটার চুরির ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিটি থেকে পদত্যাগ করেছেন।
তিনি আরো জানান, বৃহস্পতিবার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল হওয়ার কথা থাকলেও সেটি নানা কারণে সম্ভব হচ্ছে না। এ কমিটির মেয়াদ ও কলেবর বৃদ্ধির জন্য ভারপ্রাপ্ত উপচার্যের কাছে সুপারিশ করা হয়েছে।
তদন্ত কমিটির সভাপতি ও আইন অনুষদের ডিন মো. আব্দুল কুদ্দুস মিয়া জানান, কাজের পরিধি বেশি হওয়ায় তদন্ত কমিটির কলেবর বৃদ্ধি ও আরো সময়ের প্রয়োজন। এ ব্যাপারে ভারপ্রাপ্ত উপচার্যের কাছে আবেদন করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, ঈদের ছুটির মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় লাইব্রেরির পেছন দিকের জানালা ভেঙে ৪৯টি কম্পিউটার চুরি হয়। এ ঘটনায় গত ১০ আগস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ড. প্রফেসর নূরউদ্দিন আহমেদ বাদী হয়ে গোপালগঞ্জ সদর থানায় একটি মামলা করেন। মামলা নম্বর-২০।
গত ১৩ আগস্ট ঢাকার ক্রিস্টাল ইন হোটেল থেকে চুরি যাওয়া ৪৯টি কম্পিউটারের মধ্যে ৩৪টি কম্পিউটার উদ্ধার করে পুলিশ। এ সময় দুলাল ও হুমায়ুন কবির নামে দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়। পরে প্রযুক্তির সহায়তায় গোপালগঞ্জ ও নড়াইল থেকে ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৬-১৭ সেশনের শিক্ষার্থী মাসরুল ইসলাম পনি শরীফসহ আরো পাঁচজনকে গ্রেফতার করা হয়। গত ১৫ আগস্ট গ্রেফতারকৃত সাতজনকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়। এর আগে তারা আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি। এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে যুবলীগ নেতা পলাশ শরীফকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
শুক্রবার (১৪ আগস্ট) রাত সোয়া ১২টায় গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার যুবলীগের সভাপতি জাহেদ মাহমুদ বাপ্পী ও সাধারণ সম্পাদক মোল্লা মো. ফিরোজ মাহমুদ স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৫৬ ঘণ্টা, আগস্ট ২০, ২০২০
এসআই