জাবি: জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের আবাসিক শিক্ষার্থী জুবায়ের হত্যাকাণ্ডের ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীদের চলমান আন্দোলন ও ছাত্রলীগের কর্মকাণ্ডে অচল হয়ে পড়েছে দেশের একমাত্র আবাসিক উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষাব্যবস্থা।
গত সোমবার থেকে বেশির ভাগ বিভাগে কোনো ক্লাস-পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হচ্ছে না।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সাধারণ সভার ফলে কোনো বিভাগে ক্লাস না হওয়া, ছাত্রলীগের মিছিলের চাপ ও পারিবারিক চাপের ফলে অনেক শিক্ষার্থী ইতোমধ্যে হল ছেড়েছেন। আবার অনেকে রয়েছেন আতঙ্কের মধ্যে।
শিক্ষার্থীরা জানান, পাঁচদিন যাবত ছাত্রলীগ তাদের জোরপূর্বক মিছিলে করতে নিয়ে যাচ্ছে।
এছাড়া বিভিন্ন গণমাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের অস্থিরতার সংবাদ প্রকাশ হওয়ায় অভিভাবক-স্বজনরা ফোন করে বাড়ি চলে যেতে বলছেন শিক্ষার্থীদের।
অপরদিকে, কোনো ক্লাসও হচ্ছে না বেশির ভাগ বিভাগে। এসব কিছু চিন্তা করে অনেকে বাড়ি চলে গেছেন। বাকিরাও যাওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা জানান, তারা যে দাবিতে আন্দোলন করছেন তা যৌক্তিক এবং শিক্ষার্থীদের মঙ্গলের জন্যই এসব দাবি করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন যদি তাদের দাবি মেনে নেয় তাহলে ক্যাম্পাস আবার স্বাভাবিক হয়ে যাবে।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো হচ্ছে- জুবায়ের হত্যার খুনিদের আজীবনের জন্য ছাত্রত্ব বাতিল ও রাষ্ট্রীয় আইনে বিচার, খুনিদের মদদদাতা ও ইন্ধনদাতাদের একই আইনের আওতায় আনা, নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ প্রক্টর ও সিকিউরিটি ইনচার্জের পদত্যাগ ও জরাজীর্ণ মেডিক্যাল সেন্টার ভেঙে হাসপাতাল নির্মাণ।
ছাত্রলীগের স্লোগান ব্যবহার করে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা নিয়মিত বিক্ষোভ মিছিল ও শোডাউন করছেন। যদিও বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগকে অস্বীকার করছেন।
এসব বিষয়ে ছাত্রলীগের বিশ্ববিদ্যালয়ের নেতারা বলছেন, ‘আমরা ছাত্রলীগের ব্যানারে মিছিল করছি না। সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যানারে মিছিল করছি। ’
এদিকে, গত বৃহস্পতিবার শিক্ষক সমিতির সভাপতি লাঞ্ছিত হওয়ার ঘটনায় ৬ দফা দাবি বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত শিক্ষক সমাজ ব্যাানারে অন্তর্ভুক্ত শিক্ষকরা তাদের ক্লাস বর্জন ও পেশাগত নিয়মিত কর্মকা- থেকে অব্যাহতি নেন।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. শরীফ এনামুল কবিরের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
তবে তিনি শিক্ষক সমিতির সভাপতি লাঞ্ছিত হওয়ার বিষয়ে বলেন, ‘আমি ঢাকায় ছিলাম এখন ও পর্যন্ত কিছু জানি না। নিরপেক্ষ শিক্ষকদের সঙ্গে কথা বলে ব্যবস্থা নেবো। ’
বাংলাদেশ সময়: ১২১০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৩, ২০১২