ইবি: আগামী ১৯ জুন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কাউন্সিল (এসি)। বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন শিক্ষাবর্ষের আটকে থাকা চূড়ান্ত পরীক্ষা নেওয়ার বিষয়ে সেদিনই সিদ্ধান্ত হবে।
জানা যায়, সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমশিন (ইউজিসি) পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে অনলাইন ও স্বশরীরে পরীক্ষা নেওয়ার অনুমতি দেয়। ইউজিসি থেকে নির্দেশনা দেন যে, বিশ্ববিদ্যালয়গুলো যে পদ্ধতিতে পরীক্ষা গ্রহণ করুক না কেন তা অবশ্যই সিনেট কিংবা একাডেমিক কাউন্সিলে পাস হতে হবে।
সে লক্ষ্যে পরীক্ষা নেওয়ার বিষয়ে মতামত চেয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বিভিন্ন অনুষদভুক্ত বিভাগগুলোকে চিঠি দেন। প্রশাসনের চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে বিভাগগুলো তাদের নিজস্ব একাডেমিক সভা ডাকে। ইতোমধ্যে বেশিরভাগ বিভাগ তাদের একাডেমিক সভা শেষ করেছে। বিভাগীয় একাডেমিক সভায় বিভাগগুলো প্রশাসনের কাছে পরীক্ষা নেওয়ার ব্যাপারে মত দিয়েছেন। তবে বেশিরভাগ বিভাগ স্বশরীরে পরীক্ষা নেওয়ার পক্ষে মত দিয়েছেন।
এখন একাডেমিক কাউন্সিলে পরীক্ষা নেওয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় বিভাগগুলো। একাডেমিক কাউন্সিলে পরীক্ষা নেওয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত (অনলাইন কিংবা স্বশরীরে) আসলেই পরীক্ষা নিবে বলে জানিয়েছন বিভিন্ন বিভাগের সভাপতিরা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগের সভাপতি ড. আনিসুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, বিভাগের ক্লাসরুমসহ আনুসাঙ্গিক সবকিছু প্রস্তত করে রেখেছি স্বাস্থ্যবিধি মেনে পরীক্ষা নেওয়ার জন্য। তাছাড়া প্রশাসন থেকে সুপারিশ জানতে চাইলে আমরা পরীক্ষা নেওয়ার ব্যপারে সুপারিশ জানিয়েছি। একাডেমিক কাউন্সিল পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত দিলে আমরা পরীক্ষা নেব।
সম্প্রতি বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত দেখে ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মনেও পরীক্ষা দেওয়ার ব্যাপারে আশার সঞ্চার জেগেছে। এরই মধ্যে শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের পার্শ্ববর্তী মেসে চলে আসতে শুরু করেছে। শিক্ষার্থীরা তাকিয়ে আছেন ১৯ তারিখের একাডেমিক কাউন্সিলের দিকে। একাডেমিক কাউন্সিলের সিদ্ধান্ত অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনও পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেবে বলে আশা শিক্ষার্থীদের।
বিশ্ববিদ্যালয়ের লোক প্রশাসন বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী ফয়সাল মীর বাংলানিউজকে বলেন, আমরা দুই বছরের বেশি চতুর্থ বর্ষে আছি। এতদিনে মাস্টার্স শেষ হয়ে যাওয়ার কথা ছিলো। ইতোমধ্যে বিভিন্ন চাকরির আবেদন আমাদের হাতছাড়া হয়ে গেছে। তাই একাডেমিক কাউন্সিলে দ্রুত পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত যেনো হয় এটাই প্রত্যাশা আমাদের।
এদিকে আসন্ন একাডেমিক কাউন্সিলে দ্রুত পরীক্ষা নেওয়ার পাশাপাশি সিলেবাস কমিয়ে আনার দাবি জানিয়েছ শিক্ষার্থীরা। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ব্যবসায় প্রশাসনভুক্ত বেশ কয়েকটি বিভাগে অনার্সের চুড়ান্ত পরীক্ষার পর ইন্টার্নশিপ করতে হয়ে। অপরদিকে, ইঞ্জিনিয়ারিং, বিজ্ঞান ও জীব বিজ্ঞান অনুষদের বিভিন্ন বিভাগের মুল পরীক্ষার পাশাপাশি ল্যাব পরীক্ষা দিতে হয়। তাছাড়াও আইন অনুষদভুক্ত বিভাগের অনার্স চুড়ান্তবর্ষের শিক্ষার্থীদের ইন্টার্নশিপে করতে হয়। যারফলে মূল কোর্সের সঙ্গে বাকি কাজগুলো সম্পন্ন করতে অধিক সময় লেগে যায়।
ফলিত পুষ্টি ও খাদ্য প্রযুক্তি বিভাগের মাস্টার্সের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী বিল্লাল হোসে বলেন, আমাদের মাস্টার্সের দুই সেমিস্টারের পরীক্ষা এখনো শুরুই হয়নি। মূল পরীক্ষার পাশাপাশি রয়েছে ল্যাব। স্বাভাবিকভাবে ল্যাবসহ দুই সেমিস্টারের পরীক্ষাগুলো দিতে আমাদের অন্তত তিনমাসের সময় লেগে যেতে পারে। তাই প্রশাসনের কাছে প্রত্যাশা, একাডেমিক কাউন্সিলে স্বশরীরে পরীক্ষা গ্রহণের পাশাপাশি কিছু কোর্স কমানোর সিদ্ধান্ত নিবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. আলমগীর হোসেন ভুঁইয়া বাংলানিউজকে বলেন, আমরা বিভাগীয় একাডেমিক কমিটির কাছে সুপারিশ চেয়েছি, সুপারিশের ভিত্তিতে একাডেমিক কাউন্সিলে সিদ্ধান্ত হবে। ইতোমধ্যে বিভিন্ন বিভাগ পরীক্ষা নেওয়ার ব্যাপারে সুপারিশ জানিয়েছে। সে আলোকে একাডেমিক কাউন্সিল পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেবে বলে আমি আশাবাদী।
বাংলাদেশ সময়: ০৮৪৭ ঘণ্টা, জুন ১০, ২০২১
এনটি