রাবি: চাকরিতে যোগদানের দাবিতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) উপাচার্যের বাসভবনের সামনে লাগাতার অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেছে 'অবৈধ' নিয়োগপ্রাপ্ত।
বুধবার (২৩ জুন) সকাল থেকে তারা এই নতুন কর্মসূচি শুরুর ঘোষণা দেয়।
জানা যায়, পদায়নের দাবিতে লাগাতার অবস্থান কর্মসূচির ঘোষণা দিয়ে নিয়োগপ্রাপ্তরা উপাচার্যের বাসভবনের প্রবেশপথে বসে ও শুয়ে পড়ে। চাকরিতে পদায়ন না করা পর্যন্ত নিজেদের অবস্থানে অনঢ় থাকার ঘোষণা দিয়েছেন তারা। তাদের অধিকাংশই বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক নেতাকর্মী।
নিয়োগপ্রাপ্তরা বলছেন, যোগদানের ওপর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কর্তৃক আরোপিত স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার ও চাকরিতে যোগদান না করা পর্যন্ত উপাচার্যের বাসভবনের সামনে তারা লাগাতার অবস্থানে থাকবেন। কোনোভাবেই তারা দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত কর্মসূচি থেকে সরে দাঁড়াবেন না।
নিয়োগপ্রাপ্ত রাবি ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি আতিকুর রহমান সুমন বলেন, সাবেক উপাচার্য প্রফেসর ড. এম আব্দুস সোবহান স্যার গত ৫ মে আমাদের ১৯৭৩ সালের বিশ্ববিদ্যালয় অধ্যাদেশের ১২(৫) ধারায় অর্পিত ক্ষমতাবলে এডহক নিয়োগ দিয়েছেন। আমরা পরদিন ৬ মে রেজিস্ট্রার অফিসের মাধ্যমে যোগদান করেছি। তিনি বিশ্ববিদ্যালয় অধ্যাদেশ অনুযায়ী নিয়ম অনুযায়ী নিয়োগ দিলেও বর্তমান বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন অতিউৎসাহী হয়ে আমাদের নিজ নিজ দপ্তরে যোগদানের ওপর স্থগিতাদেশ দেন। দেড় মাস ধরে বর্তমান রুটিন দায়িত্বপ্রাপ্ত উপাচার্য অধ্যাপক ড. আনন্দ কুমার সাহা আশ্বাস দিয়েও আমাদের পদায়নের কোন ব্যবস্থা করেননি।
তিনি আরও বলেন, আমরা মানবেতর জীবনযাপন করছি। দুঃশ্চিতায় ঘুমাতে পারছি না। তাই সিদ্ধান্ত নিয়েছি, আমাদের পদায়নের স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার না হওয়া পর্যন্ত লাগাতার কর্মসূচি চলবে। প্রয়োজনে এখানেই মরে যাব, তবুও কর্মসূচি প্রত্যাহার করবো না।
ছাত্রলীগ নেতা মাহাফুজ আল আমিন বলেন, আমরা চাকরিতে যোগদান করতে চাই। তাই আমরা লাগাতার অবস্থান নিয়েছি, যোগদানের ঘোষণা না দিলে অবস্থান ছাড়ব না।
জানতে চাইলে রাবির রুটিন দায়িত্বপ্রাপ্ত উপাচার্য অধ্যাপক ড. আনন্দ কুমার সাহা বলেন, তারা যে দাবিটা (যোগদান) করেছেন, তা পূরণ করা আমার একার পক্ষে সম্ভব নয়। এটার সঙ্গে শিক্ষা মন্ত্রণালয়, সরকার সংশ্লিষ্ট রয়েছে। সেখান থেকে সিদ্ধান্ত না আসা পর্যন্ত আমার পক্ষে কিছুই করা সম্ভব নয়।
জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক এম আব্দুস সোবহান মেয়াদের শেষ দিন গত ৬ মে অস্থায়ী ভিত্তিতে (অ্যাডহক) ১৪১ জনকে নিয়োগ দিয়েছেন। এর মধ্যে শিক্ষক পদে ৯ জন, কর্মকর্তা পদে ২৩ জন, তৃতীয় শ্রেণীর কর্মচারী পদে ৮৫ জন, চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারী পদে ২৪ জনকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে তাদের কর্মস্থলে যোগদান স্থগিত রেখেছেন বর্তমানে দায়িত্বপ্রাপ্ত উপাচার্য অধ্যাপক আনন্দ কুমার সাহা।
বিতর্কিত এই নিয়োগকে অবৈধ উল্লেখ করে এদিন সন্ধ্যায় ৪ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। তদন্ত কমিটি বিশ্ববিদ্যালয়ে এসে তদন্ত করে গত ২৩ মে তদন্ত প্রতিবেদন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে জমা দিয়েছে। এতে এ নিয়োগকে 'অবৈধ' উল্লেখ করা হয়। তদন্ত কমিটি এ নিয়োগে সাবেক উপাচার্যসহ বেশ কয়েকজনের সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ পেয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৫০৬ ঘণ্টা, জুন ২৩, ২০২১
এএটি