রাবি: রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের স্নাতক প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষা স্থগিত করেছেন রুটিন দায়িত্বপ্রাপ্ত উপাচার্য অধ্যাপক সুলতান-উল-ইসলাম। এ বিষয়ে ভর্তি পরীক্ষা কমিটির সভা ও ডিনদের মৌখিক অনুমতি ছাড়া এমন সিদ্ধান্ত গ্রহণে অনেকে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
এছাড়া কয়েকটি অনুষদের ডিন গণমাধ্যমে ভর্তি পরীক্ষা স্থগিতের বিষয়ে জানলেও বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো চিঠিতে আগে থেকে জানতে পারেননি বলে নিশ্চিত করেছেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের জ্যেষ্ঠ অধ্যাপকরা বলছেন, ভর্তি পরীক্ষার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের সব বিভাগের চেয়ারম্যান, অনুষদের ডিন ও একাডেমিক কাউন্সিলের সিনিয়র অধ্যাপকদের সমন্বয়ে দুটি কমিটি আছে। যারা পরীক্ষার তারিখ নির্ধারণ থেকে শুরু করে যাবতীয় সিদ্ধান্ত গ্রহণে মতামত দেন। কোনো সিদ্ধান্ত গ্রহণ অথবা পরিবর্তন করতে হলে অবশ্যই তাদের সঙ্গে সভা অথবা সম্মতির প্রয়োজন পড়ে। কিন্তু রুটিন উপাচার্য এমন কিছু না করে নিজেই বিষয়টির সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। রুটিন দায়িত্বের মধ্যে এমন গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত পড়ে কিনা সেটি নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন অধ্যাপকরা।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, চলতি বছরের গত জুন মাসে ভর্তি পরীক্ষা গ্রহণের সিদ্ধান্ত হয়েছিলো। কিন্তু করোনা ভাইরাসের পরিস্থিতি বিবেচনায় পরীক্ষার তারিখ পুনঃনির্ধারণ হয় আগস্টে। করোনার দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবিলায় লকডাউন শুরু হলে পরীক্ষা গ্রহণ সম্ভব নয় বলে জানান অধ্যাপক সুলতান-উল-ইসলাম।
এ বিষয়ে আওয়ামীপন্থী শিক্ষক সমাজের আহ্বায়ক অধ্যাপক হাবিবুর রহমান বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় হলো ভর্তি পরীক্ষা গ্রহণ। এ সংক্রান্ত কমিটি পরীক্ষার তারিখ নির্দিষ্টকরণসহ নানা দায়িত্ব পালন করেন। ভর্তি পরীক্ষা সংক্রান্ত যেকোনো সিদ্ধান্তের পরিবর্তন নিয়ে আসতে হলে অবশ্যই সে কমিটিকে জানিয়ে ও সম্মতিতে করতে হবে। কিন্তু বর্তমান বিশ্ববিদ্যালয়ের রুটিন উপাচার্য কাউকে না জানিয়ে নিজে সিদ্ধান্ত নিয়ে পরীক্ষা স্থগিত করেছেন। এটি কোনো রুটিন উপাচার্যের দায়িত্বের মধ্যে পরে কিনা জানা নেই।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ভর্তি পরীক্ষা মূল কমিটির সদস্য জ্যেষ্ঠ এক অধ্যাপক বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষার বিভিন্ন সিদ্ধান্তের জন্য দুটি কমিটি আছে। একটি মূল কমিটি যেখানে উপাচার্য, উপ-উপাচার্য, রেজিস্ট্রারসহ প্রাশসনের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি ও বিভিন্ন অনুষদের ডিনগণ থাকেন। অন্য একটি উপ-কমিটি যেখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের সব বিভাগের সভাপতি ও সিনিয়র অধ্যাপকরা থাকেন। ভর্তি পরীক্ষার বিষয়ে যেকোনো সিদ্ধান্ত গ্রহণ অথবা পরিবর্তনের জন্য সভা করা সম্ভব না হলেও মৌখিক সম্মতির প্রয়োজন হয়। তাদের সম্মতি ছাড়া উপাচার্য নিজে একা এমন সিদ্ধান্ত গ্রহণ করলে সেটি ভালো কিছু হয় না।
বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অধ্যাপক আবদুস সালাম বলেন, করোনা সংক্রমণরোধে লকডাউনে বিশ্ববিদ্যালয়ের সব কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। তাই রুটিন উপাচার্য নির্বাহী আদেশে এটিকে স্থগিত করেছেন। তবে লকডাউন পরবর্তী বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রম স্বাভাবিক হলে ভর্তি পরীক্ষা কমিটির মাধ্যমে নতুন তারিখ জানানো হবে।
জানতে চাইলে রুটিন দায়িত্বপ্রাপ্ত উপাচার্য অধ্যাপক সুলতান-উল-ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, লকডাউনের কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ের অফিস ছুটি থাকায় নিবার্হী আদেশে পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ে কার্যক্রম শুরু হলেই কমিটির সঙ্গে সভা করে নতুন পরীক্ষা গ্রহণের তারিখ জানানো হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৪০ ঘণ্টা, আগস্ট ০২, ২০২১
আরএ