ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৯ কার্তিক ১৪৩১, ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ১২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিক্ষা

দেশে ৪০ লাখ শিশু স্কুলে প্রথম যাওয়ার অপেক্ষায় 

ডিপ্লোম্যাটিক করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৩২ ঘণ্টা, আগস্ট ২৪, ২০২১
দেশে ৪০ লাখ শিশু স্কুলে প্রথম যাওয়ার অপেক্ষায়  ইউনিসেফ

ঢাকা: বাংলাদেশের প্রায় ৪০ লাখ নতুন শিশু শিক্ষার্থী প্রথম বারের মতো স্কুলে গিয়ে সশরীরে শিক্ষার জন্য অপেক্ষা করছে। আর বিশ্বব্যাপী ১৪ কোটি নতুন শিক্ষার্থীর জন্য স্কুল শুরুর প্রথম দিন অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত হয়ে আছে।

মঙ্গলবার (২৪ আগস্ট) ইউনিসেফ এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে।

ইউনিসেফ প্রকাশিত নতুন এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিশ্বের প্রায় ১৪ কোটি শিশুর ক্ষেত্রে স্কুলের প্রথম দিন, যা কিনা বিশ্বব্যাপী সর্বকনিষ্ঠ শিক্ষার্থী ও তাদের বাবা-মায়েদের জন্য একটি বিশেষ মুহূর্ত, কোভিড-১৯ এর কারণে বিলম্বিত হচ্ছে। এই শিক্ষার্থীদের মধ্যে প্রায় ৮০ লাখ এমন স্থানে বসবাস করে যেখানে মহামারির পুরো সময়ে স্কুল বন্ধ রাখা হয়েছে।  
এ কারণে সশরীরে শিক্ষা গ্রহণের প্রথম দিনটির জন্য তারা এক বছরের বেশি সময় ধরে অপেক্ষা করছে এবং এই অপেক্ষা বেড়েই চলেছে। এর মধ্যে বাংলাদেশের প্রায় ৪০ লাখ প্রথম-বারের শিক্ষার্থীও রয়েছে। বাংলাদেশে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো ২০২০ সালের ১৭ মার্চ থেকে বন্ধ রয়েছে, যা কোভিড-১৯ এর কারণে স্কুল বন্ধের ক্ষেত্রে বিশ্বের দ্বিতীয় দীর্ঘতম।

ইউনিসেফের নির্বাহী পরিচালক হেনরিয়েটা ফোর বলেন, স্কুলের প্রথম দিন একটি শিশুর জীবনে উল্লেখযোগ্য এক মুহূর্ত, যা তাদেরকে ব্যক্তিগত শিক্ষা অর্জন এবং বিকাশের ক্ষেত্রে একটি জীবন পরিবর্তনকারী পথে পরিচালিত করে। আমরা বেশিরভাগই স্কুলের প্রথম দিনের অসংখ্য ছোটখাটো স্মৃতি মনে রাখি – যেমন কী পোশাক পরেছিলাম, শিক্ষকের নাম, কার পাশে বসেছিলাম।  
তবে লাখ লাখ শিশুর জন্য সেই গুরুত্বপূর্ণ দিনটি অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত করা হয়েছে। যখন বিশ্বের অনেক জায়গায় ক্লাস পুনরায় শুরু হয়েছে, তখন প্রথম শ্রেণির লাখ লাখ শিক্ষার্থী এক বছরেরও বেশি সময় পর সশরীরে ক্লাসরুমে যাওয়ার অপেক্ষায় রয়েছে। আরও লাখ লাখ শিশুর হয়তো এই মেয়াদেও স্কুলে একেবারেই যাওয়া হবে না। যারা সবচেয়ে ঝুঁকির মুখে রয়েছে তাদের জীবনে আর কখনোই স্কুলে ফিরতে না পারার ঝুঁকিও বাড়ছে।


ইউনিসেফ যত দ্রুত সম্ভব সশরীরে উপস্থিত হয়ে শিক্ষা গ্রহণের জন্য স্কুলগুলো পুনরায় খুলে দিতে এবং শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে সহায়তার জন্য বিস্তৃত পরিসরে পদক্ষেপ গ্রহণে সরকারগুলোর প্রতি আহ্বান জানায়। বিশ্বব্যাংক ও ইউনেস্কোর সঙ্গে মিলে ইউনিসেফ স্কুলগুলো আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনার জন্য সরকারগুলোর প্রতি তিনটি সুপারিশ করেছে।

১.সব শিশু এবং তরুণদের স্কুলে ফিরিয়ে আনার জন্য সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যভিত্তিক কর্মসূচি প্রণয়ন করা, যেখানে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, মনোসামাজিক সুস্থতা এবং অন্যান্য চাহিদা পূরণের জন্য তারা তাদের প্রত্যেকের প্রয়োজন অনুযায়ী উপযুক্ত সেবা গ্রহণের সুযোগ পাবে।

২.শিক্ষার্থীদের লেখাপড়ার ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে সহায়তা করতে কার্যকর প্রতিকারমূলক শিক্ষার ব্যবস্থা করা।

৩. শিক্ষার ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে এবং শিক্ষাদান প্রক্রিয়ায় ডিজিটাল প্রযুক্তি অন্তর্ভুক্ত করার জন্য শিক্ষকদের সহায়তা দেওয়া।


নিরাপদে স্কুল খোলার লক্ষে্য ইউনিসেফ বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছে। এই কর্মযজ্ঞের অংশ হিসেবে নির্দেশিকা তৈরি করা হচ্ছে যাতে শিশু এবং তাদের শিক্ষকরা মাস্ক পরে, সাবান পানিতে হাত ধুয়ে সাস্থ্যবিধি মেনে নিরাপদে স্কুল শুরু করতে পারে।  ইউনিসেফ স্কুলের শিশু, তাদের অভিভাবক ও শিক্ষকদের সঙ্গেও যোগাযোগ চালিয়ে যাচ্ছে যাতে নিরাপদে স্কুল খুলে দেওয়ার বিষয়ে সবার মধ্যে আত্মবিশ্বাস তৈরি হয়।

আগামী কয়েক সপ্তাহে, ইউনিসেফ তার অংশীদার এবং বৃহত্তর জনগণকে সঙ্গে নিয়ে কাজ করবে, যেন এই শিক্ষা সংকট কোনোভাবেই শিক্ষা বিপর্যয়ের দিকে ধাবিত না হয়।  

বাংলাদেশ সময় ঘণ্টা: ১৮৩২, আগস্ট ২৪, ২০২১ 
টিআর/এসআইএস   

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।