জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়: একাধিকবার মেয়াদ বৃদ্ধির প্রায় ১১ বছর সময়ক্ষেপণের পর খুলতে যাচ্ছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) একমাত্র ছাত্রী হল 'বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব’ হল। ক্যাম্পাস খোলার আগেই এ ছাত্রী হলের সিট বরাদ্দ দেওয়া হবে বলে জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
হলটি ছাত্রীদের ওঠার জন্য প্রায় প্রস্তুত। ক্যাম্পাসে সশরীরে ক্লাস শুরু হলেই তোলা হবে ছাত্রীদের। এজন্য প্রণয়ন করা হয়েছে হলের নীতিমালা। সিট বরাদ্দের ব্যাপারে একটি পরিকল্পনাও করা হয়েছে বলে জানা গেছে।
এ বিষয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. মোস্তফা কামাল বাংলানিউজকে বলেন, ‘হলের কাজ প্রায় শেষ। ফিনিশিং পর্যায়ে আছে। উপাচার্য স্যার আমাদের জানিয়েছেন ক্যাম্পাস খোলার আগেই যেন হল সম্পূর্ণ রেডি হয়ে যায়। ’
তিনি আরও জানান, ‘আমরা হলের একটি নীতিমালা খসড়া তৈরি করেছি। আগামী সিন্ডিকেট মিটিংয়ে তা পাশ হতে পারে। ক্যাম্পাস খোলার আগেই সিট বরাদ্দের জন্য অনলাইনে আবেদন নেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে আমাদের। ’
এর আগে হল নির্মাণের প্রথম দফায় মেয়াদ ছিল ২০১১ সালের জানুয়ারি থেকে ২০১৩ সালের জুন পর্যন্ত। কাজ শেষ না হওয়ায় দ্বিতীয় মেয়াদ ২০১৩ সালের জুন থেকে ২০১৬ সালের জুন পর্যন্ত বাড়ে। এরপর তৃতীয় দফায় মেয়াদ ২০১৬ সালের জুন থেকে ২০১৮ সালের জুন পর্যন্ত বাড়ানো হয়। পরে ২০১৮ সালের জুন থেকে ২০১৯ সালের জুন পর্যন্ত মেয়াদ বাড়ানো হয়েছিল। সর্বশেষ মেয়াদ আরও বৃদ্ধি করায় বর্তমানে শেষ পর্যায়ের কাজ চলমান রয়েছে।
এ বিষয়ে প্রকল্প পরিচালক ওয়াহিদ কনস্ট্রাকশন লিমিটেডের সাব-অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার শাহাদাত হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, ‘আমাদের কনস্ট্রাকশনের কাজ প্রায় শেষ। কিছু ফিনিশিংয়ের কাজ বাকি আছে। দ্রুতই সেটি শেষ হবে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন চাইলে আমরা আমাদের কাজ বুঝিয়ে দেব। ’
এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি ড. মীজানুর রহমানের ২য় মেয়াদ শেষ হওয়ার আগে হলের কাজ শেষ না হলেও তিনি নিজের নামফলক স্থাপনের জন্য ২০২০ সালের ২০ অক্টোবর জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় দিবসে তড়িঘড়ি করে হল উদ্বোধন করেন। তবে সেসময় হল উদ্বোধনে প্রধানমন্ত্রীকে উদ্বোধক হিসেবে চেয়েছিলেন শিক্ষার্থীরা। উপাচার্য বরাবর দেওয়া হয়েছিল স্মারকলিপি আবেদনও। কিন্তু সাবেক ভিসি উদ্বোধকের জায়গায় নিজের নাম স্থাপনে শিক্ষার্থীদের আবেদনটি তোয়াক্কা করেননি।
এদিকে হল উদ্বোধনের পর থেকে হলের সিট পাওয়ার আশায় নিজ এলাকার পরিচিত বিভিন্ন বড় ভাই ও বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনের নেতাদের সঙ্গে শিক্ষার্থীরা যোগাযোগ অব্যাহত রেখেছেন বলে গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে।
তবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন জানিয়েছে, হলে সিট পেতে কোনো লবিং এ কাজ হবেনা।
এ বিষয়ে বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেসা মুজিব হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. শামীমা বেগম বাংলানিউজকে বলেন, ‘ছাত্রী হলের নীতিমালা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে জমা দেওয়া হয়েছে। আগামী সিন্ডিকেটে তা পাস হবে। নির্দিষ্ট নীতিমালা অনুযায়ী হলে ছাত্রী ওঠানো হবে। কোনো ধরনের প্রভাব খাটিয়ে হলের সিট পাওয়া যাবে না। ’
তিনি আরও বলেন, ‘সেপ্টেম্বরের প্রথম সপ্তাহে হলে ওঠানোর জন্য অনলাইনে আবেদন নেওয়া হবে। যাদের হলে সিট বরাদ্দ দেওয়া হবে ক্যাম্পাস খুললে তারা সরাসরি হলে উঠবে। মেসে বা বাসায় তাদের উঠতে হবে না। ’
বাংলাদেশ সময়: ১৪৫৫ ঘণ্টা, আগস্ট ২৫, ২০২১
এমআরএ