ঢাকা: আগামী অক্টোবরের মাঝামাঝি দেশের সরকারি-বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় খোলার সিদ্ধান্ত জানিয়েছে সরকার। তবে, স্কুল-কলেজ খোলার সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে আগামী ৩১ আগস্ট।
করোনা মহামারিতে দেড় বছর বন্ধ থাকার পর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো খোলার প্রস্তুতি নিয়ে বৃহস্পতিবার (২৬ আগস্ট) অনলাইনে এক সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়েছে।
বৈঠকে শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেন ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান এবং সংশ্লিষ্টরা অংশ নেন।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা বলেন, চলমান করোনা পরিস্থিতি বিবেচনায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছুটি ১১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বাড়ানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে।
তিনি বলেন, আগামী ৩০ আগস্ট করোনা সংক্রান্ত জাতীয় পরামর্শক কমিটির সাথে সভা করবে দুই মন্ত্রণালয়। কত শতাংশ সংক্রমণ থাকলে স্কুল খুলতে পারা যায় তা নিয়ে মত নেওয়া হবে। বিশেষজ্ঞরা ৫ শতাংশের ঘরে সংক্রমণ হার থাকলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার পরামর্শ দিলেও একটি সহনীয় পর্যায় কত হলে খোলা যাবে তার ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত হবে। সংক্রমণের হার ৫ শতাংশ থেকে ১০ শতাংশের মধ্যে কোনো একটি সংখ্যা বিবেচনা করা যায় কিনা সে বিষয়ে কারিগরি কমিটির পরামর্শ চাওয়া হবে।
ওই কর্মকর্তা আরও বলেন, এরপর আগামী ৩১ আগস্ট আজকের মতো একটি মিটিং করা হবে। ওই সভায় চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানানো হবে কবে থেকে স্কুল-কলেজগুলো খুলবে। এরপর ১ বা ২ সেপ্টেম্বর সংবাদ সম্মেলন করে ঘোষণা দেওয়া হবে।
শুরুতে প্রাক-প্রাথমিকের শিক্ষার্থীরা আসবে না সভায় গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী জানান, প্রাক-প্রাথমিকের শিক্ষার্থীরা শুরুতে স্কুলে আসবে না। প্রথম থেকে অন্য শ্রেণিগুলোর শিক্ষার্থীরা সপ্তাহে একদিন স্কুলে আসবে। আর পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা দুই দিন আসবে। তবে পঞ্চম শ্রেণির সমাপনী পরীক্ষা নেওয়ার পরিকল্পনা আছে।
স্কুল খুললে প্রাথমিক স্তরের শিক্ষার্থীরা মাস্ক না ফেস শিল্ড ব্যবহার হবে তা করোনা সংক্রান্ত জাতীয় কমিটির পরামর্শ পেলে সিদ্ধান্ত জানানো হবে বলে জানান ওই কর্মকর্তা।
অন্যদিকে, প্রাথমিক স্তরের শিক্ষকরা কত শতাংশ টিকা নিয়েছে এবং যারা নেয়নি তারা কী কারণে নেয়নি তা ১০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে জানাতে হবে।
স্বাস্থ্যবিধি পালনে মনিটরিং সেল বৈঠকে জানানো হয়, যদিও শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় স্কুল রি-ওপেনিং প্ল্যান করে রেখেছে তারপরও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সঙ্গে আলোচনা করে এ রি-ওপেনিং প্ল্যানকে আগামী সাত দিনের মধ্যে চূড়ান্ত করা হবে।
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার পর স্বাস্থ্যবিধি যথাযথভাবে প্রতিপালিত হচ্ছে কিনা তার জন্য প্রত্যেকটি প্রতিষ্ঠানে মনিটরিং সেল গঠন করবে এবং প্রতিদিন প্রতিবেদন তৈরি করবে। আগামী সাতদিনের মধ্যে মনিটরিং প্রতিবেদন তৈরি করার একটি গাইডলাইন তৈরি করা হবে।
আবাসিক হলও খুলবে অক্টোবরে শিক্ষার্থীদের টিকা দেওয়া শেষে অক্টোবরের মাঝামাঝি থেকে দেশের সরকারি ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো খুলে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সদস্য (ইউজিসি) মুহাম্মদ আলমগীর।
তিনি জানান, ১৫ অক্টোবরের পর থেকে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো খুলবে। তার আগে শিক্ষার্থীদের ভ্যাকসিনেশন শেষ করা হবে। শিক্ষা মন্ত্রণালয় চেষ্টা করবে অল্প সময়ের মধ্যে সবাইকে ভ্যাকসিন দিয়ে দেওয়ার। যাদের এনআইডি নেই তাদের বিকল্প ব্যবস্থায় অন্য আইডেন্টিফিকেশনের মাধ্যমে টিকা দেওয়ার ব্যবস্থার চেষ্টা করা হবে।
বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর জন্যও একই পদ্ধতি হবে বলে জানান ইউজিসি সদস্য মুহম্মদ আলমগীর।
তিনি জানান, একই সঙ্গে আবাসিক হলগুলোও খুলে দেওয়া হবে। হল খুলে দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় খুলে দেওয়া হবে।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা বলেন, সেম্টেম্বর নাগাদ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সবাইকে টিকা দেওয়া শেষ করতে হবে। এরপর ১৫ দিনের মতো সময় নিয়ে ১৭ অক্টোবর থেকে স্ব স্ব বিশ্ববিদ্যালয় খোলার দিন ঘোষণা করা হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৮১১ ঘণ্টা, আগস্ট ২৬, ২০২১
এমআইএইচ/ওএইচ/