পটুয়াখালী: করোনা ভাইরাসের কারণে প্রায় দেড় বছরেরও বেশি সময়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকার পর রোববার (১২ সেপ্টেম্বর) শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার খবরে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নির্ধারিত পোশাক বানানোর হিড়িক পড়েছে দর্জি পাড়ায়। ফলে দীর্ঘদিন পরে আবারও ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন এ পেশার মানুষ।
এদিকে দীর্ঘদিন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের নির্ধারিত পোশাক শিক্ষার্থীদের শরীরে মাপের তুলনায় অনেকটা ছোট হয়ে গেছে। অনেকের পোশাক থাকা সত্ত্বেও নতুন পোশাক বানাতে হচ্ছে, কারণ আগেরটি তার শরীরে বা উচ্চতায় ঠিক হচ্ছে না।
জানা যায়, তৃতীয় শ্রেণি থেকে দশম শ্রেণির ছেলে শিক্ষার্থীদের স্কুল ড্রেস প্রতিটি (প্যান্ট ও শার্ট) এর বানানো মজুরি রাখা হচ্ছে ৭০০ টাকা। তৃতীয় শ্রেণি থেকে দশম শ্রেণির মেয়ে শিক্ষার্থীদের স্কুল ড্রেস প্রতিটি (থ্রি-পিস) এর বানানো মজুরি রাখা হচ্ছে ৪০০ টাকা।
পটুয়াখালীর চমক টেইলার্সের মালিক সমির চন্দ্র বাংলানিউজকে বলেন, করোনার কারণে অনেক মানুষের হাত খালী। অনেকে কষ্ট করে হলেও বাচ্চাদের স্কুল ড্রেস তৈরি করতে দিচ্ছে। আজ দুই দিন হলো সবেমাত্র স্কুল ড্রেসের অর্ডার আসা শুরু হয়েছে। সামনে অর্ডারের পরিমাণ আরও বাড়বে।
জেলা সদরের সানুমান টেইলার্সের প্রধান কারিগরি মিঠুন চক্রবর্তী বাংলানিউজকে বলেন, মহামারি করোনার কারণে দীর্ঘদিন স্কুল-কলেজ বন্ধ ছিল। ১২ সেপ্টেম্বর থেকে স্কুল-কলেজ খুলছে সরকার। এতে স্কুল ড্রেসের অর্ডার আসতে শুরু হয়েছে। সামনে আরও চাপ বাড়বে।
শহরের সদর রোড এলাকার বাসিন্দা রুমা বেগম বাংলানিউজকে বলেন, সানুমান টেইলার্সে এসেছি ছেলের স্কুল ড্রেস বানানো জন্য। দীর্ঘ দেড় বছর পর বাচ্চার স্কুল খুলছে। ছেলের যে স্কুল ড্রেস ছিলো তা গায়ের তুলনায় ছোট হয়ে গেছে তাই নতুন করে স্কুল ড্রেস তৈরি করতে টেইলরের কাছে দিলাম।
পূর্ণিমা টেইলার্সের মালিক নিখিল দাস বাংলানিউজকে বলেন, ১২ সেপ্টেম্বর স্কুল খুলবে তাই আমাদের দোকানে একটু স্কুল ড্রেসের চাপ রয়েছে। দীর্ঘদিন পরে একটু কাজ বাড়ছে। সরকার যদি আর কোনো লকডাউন না দেয় তবে করোনার সময় আমাদের যে ক্ষতি হয়েছে তা আস্তে আস্তে কাজের মাধ্যমে পুষিয়ে উঠতে পারবো।
পটুয়াখালী বৃহত্তম পাইকারি ও খুচরা বিক্রির দোকান মুন্সি ক্লোথ স্টোর্সের মালিক হেলাল উদ্দিন মুন্সি বাংলানিউজকে বলেন, সামনে স্কুল-কলেজ খুলছে সরকার। তাই দোকানে বেশি স্কুল ড্রেসের কাপড় মোটামুটি বিক্রি হচ্ছে। সামনে স্কুল ড্রেসের কাপড় বিক্রি বাড়বে।
জনতা স্টোরের মালিক মিহির দেবনাথ বাংরা জানান, গত কয়েকদিন ধরে বিক্রি বেড়েছে। সম্পূর্ণ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুললে আরও বাড়বে।
এদিকে দর্জির পেশার সঙ্গে সঙ্গে বেচা-কেনা বাড়ছে সুতা বোতাম ও লেজ ফিতার দোকানেও, শহরের পোস্ট অফিস রোর্ডের সুতা ঘরের ম্যানেজার লিটু মুখার্জি বাংলানিউজকে বলেন, সামনে স্কুল-কলেজ খুলছে। স্কুল-কলেজ খোলার কারণে জেলার টেইলররা ড্রেসের সঙ্গে ম্যাচিং করে সুতা ও বোতাম ক্রয় করা শুরু করেছে। সামনের দিনে তাদের (টেইলার্স) অর্ডার বাড়লে আমাদেরও মোটামুটি বিক্রি বাড়বে।
বাংলাদেশ সময়: ১৮১৬ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ০৮, ২০২১
এনটি