ঢাকা: করোনা মহামারির এই সময়ে ভ্যাকসিন ছাড়া এবং স্কুলগুলোর সন্তোষজনক স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার প্রস্তুতি ছাড়া সন্তানদের স্কুলে পাঠাতে অভিভাবকরা মানসিকভাবে প্রস্তুত নন বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ ইংলিশ মিডিয়াম স্কুল পেরেন্টস ফোরামের সভাপতি এ কে এম আশরাফুল হক।
শনিবার (১১ সেপ্টেম্বর) জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ ইংলিশ মিডিয়াম স্কুল পেরেন্টস ফোরামের পক্ষে তিনি এ কথা বলেন।
সংবাদ সম্মেলনে সরকারের কাছে ছয় দফা দাবি উত্থাপন করেন ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলের শিক্ষার্থীদের অভিবাবকরা।
দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে, সব শিক্ষার্থী, অভিভাবক, শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের ভ্যাকসিন নিশ্চিতকরণ। ধাপে ধাপে ভ্যাকসিন নিশ্চিত সাপেক্ষে স্কুলগুলোর সন্তোষজনক স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার প্রস্তুতি দেখে এবং করোনা সংক্রমন পরিস্থিতি বিবেচনা করে স্কুল খুলতে হবে। প্রথম ধাপে ১২ বছর থেকে ১৮ বছর বয়স পর্যন্ত এবং দ্বিতীয় ধাপে ১২ বছরের নিচ পর্যন্ত। প্লে গ্রুপ নার্সারি এবং কেজি ক্লাস জানুয়ারী ২০২২ এর আগে কোনোভাবে নয়।
অন্য দাবির মধ্যে রয়েছে, দেশের সব ইংরেজিমাধ্যম স্কুলে মহামারির কারণে সৃষ্ট অর্থনৈতিক পরিস্থিতিতে বিবেচনায় অবশ্যই স্কুল ফিস সমূহ শ্রেণিভেদে (ভাড়াকরা ক্যাম্পাস, নিজস্ব ক্যাম্পাস এবং আয় বিবেচনায়) ৩০% থেকে ৫০% হ্রাস করতে হবে। ইংরেজিমাধ্যম স্কুলগুলোর যৌক্তিক টিউশন ফি নির্ধারণে সরকার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে। এ সময়ে কোনো শিক্ষার্থীকেই স্কুল কর্তৃপক্ষ পুনঃভর্তি, প্রমোশন বা অনলাইন ক্লাসের বাইরে রাখতে পারবেন না।
সরকারি নির্দেশাবলী মেনে ২০১৭ সালে প্রকাশিত গেজেট মোতাবেক ইংরেজিমাধ্যম স্কুলগুলোকে পরিচালনা করতে হবে। স্কুলগুলোর শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনায় আরও কার্যকর নীতিমালা প্রণয়ন করতে হবে ও স্কুলগুলোর কার্যক্রম মনিটরিংয়ের জন্য তদারককারী সংস্থা গঠন করতে হবে। স্কুলগুলোর সুষ্ঠু পরিচালনা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে নির্বাচিত অভিভাবক প্রতিনিধি সব ম্যানেজিং কমিটিতে অন্তরভূক্ত করতে হবে।
এ কে এম আশরাফুল হক বলেন, আমাদের যৌক্তিক দাবি ও আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে ইতিমধ্যে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ইংরেজিমাধ্যমে পরিচালিত স্কুলগুলোকে নিবন্ধন ও আইনানুগ ম্যানেজিং কমিটি গঠন নিশ্চিত করতে দুটি নির্দেশনা জারি করেছেন। আমরা আশা করি স্কুলগুলো দেশের প্রচলিত আইনের প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শন করে সব সরকারি নির্দেশনা খুব অল্প সময়ের মধ্যে বাস্তবায়ন করবে।
তিনি বলেন, বর্তমান করোনাকালে অধিকাংশ ইংরেজিমাধ্যম স্কুল কর্তৃপক্ষ এই বিপর্যয় সম্পূর্ণ উপেক্ষা করে, মহামান্য উচ্চ আদালতের নির্দেশ অবমাননা করে, এমনকি সরকারি নির্দেশাবলীর কোনো তোয়াক্কা না করে অত্যন্ত অমানবিক ও অযৌক্তিকভাবে অভিভাভবকদের বিভিন্ন প্রকার ভয়-ভীতি দেখিয়ে দেশের বর্তমান অর্থনৈতিক অবস্থার সঙ্গে অসামঞ্জস্যমূলক উচ্চ হারের টিউশন ফি আদায়ের অপচেষ্টায় লিপ্ত আছেন। যা আমাদের সন্তানদের সাংবিধানিক ও মৌলিক মানবাধিকারের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ইংলিশ মিডিয়াম স্কুল পেরেন্টস ফোরামের সহসভাপতি ফেরদৌস আজম খান, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আবু ফয়সল মোহা. তোহা প্রমুখ।
বাংলাদেশ সময় ১২৩৯ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১১, ২০২১
ডিএন/জেএইচটি