ঢাকা: নতুন শিক্ষাক্রমে ক্লাস থ্রি পর্যন্ত কোনো শ্রেণিতে পরীক্ষা থাকবে না। আর নবম-দশম শ্রেণিতে বিজ্ঞান, মানবিক ও বাণিজ্যের মতো বিভাজন থাকবে না বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সামনে সোমবার (১৩ সেপ্টেম্বর) জাতীয় শিক্ষাক্রম রূপরেখা উপস্থাপনের পর সচিবালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী।
এরআগে সকালে প্রধানমন্ত্রীর কাছে জাতীয় শিক্ষাক্রম রূপরেখা উপস্থাপন করা হয়। প্রধানমন্ত্রী তা অনুমোদন দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, আগামী বছর থেকে প্রাথমিক ও মাধ্যমিকের ১০০টি করে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নতুন এ শিক্ষাক্রমের পাইলটিং শুরু হবে। ২০২৩ সাল থেকে ধাপে ধাপে নতুন এ শিক্ষাক্রম বাস্তবায়ন করা হবে। আর ২০২৫ সালে পুরোপুরি বাস্তবায়ন হবে।
তিনি জানান, নতুন শিক্ষাক্রম অনুযায়ী নবম শ্রেণি থেকে গ্রুপের বিভাজন আর থাকবে না। শিখন সময় কতটা হবে তা নির্দিষ্ট করে দেওয়া হবে। সামষ্টিক মূল্যায়নের পাশাপাশি ধারাবাহিক মূল্যায়নেও গুরুত্ব দিয়েছি।
মন্ত্রী জানান, আগামী বছর থেকে প্রাথমিকের প্রথম শ্রেণি এবং মাধ্যমিকের ষষ্ঠ শ্রেণিতে পাইলটিং শুরু হবে। প্রাথমিক ও মাধ্যমিকের ১০০টি প্রতিষ্ঠানে পাইলটিং হবে। আর ২০২৩ সাল থেকে প্রাথমিকের প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণি এবং মাধ্যমিকের ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণিতে শুরু হবে নতুন শিক্ষাক্রম। ২০২৪ সালে তৃতীয়, চতুর্থ, অষ্টম ও নবম শ্রেণি এবং ২০২৫ সালে পঞ্চম ও দশম শ্রেণিতে এ শিক্ষাক্রম শুরু হবে। ২০২৫ সালের মধ্যে পুরো শিক্ষাক্রম বাস্তবায়ন করা হবে।
শিক্ষামন্ত্রী জানান, দশম শ্রেণির কারিকুলাম অনুযায়ী এসএসসি পরীক্ষা হবে। আগে নবম-দশম মিলে পাবলিক পরীক্ষা হতো। আর একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণিতে দু’টি পরীক্ষা নিয়ে সেই দুই পরীক্ষার ফলাফলের ভিত্তিতে এইচএসসির ফল দেওয়া হবে। অন্য শ্রেণিতে হবে সমাপনী পরীক্ষা, সমাপনীতে ধারাবাহিক মূল্যায়নের সঙ্গে সামষ্টিক মূল্যায়ন করা হবে।
নতুন শিক্ষাক্রম নিয়ে দীপু মনি বলেন, প্রাক-প্রাথমিক থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত নতুন এ রূপরেখা করা হয়েছে। এর আগে প্রাথমিক, মাধ্যমিক আলাদা আলাদা ছিল। একজন শিক্ষার্থী প্রাক-প্রাথমিকে ঢুকে মাধ্যমিকে যাচ্ছে। এ জন্য এক স্তর থেকে আরেক স্তরে যাওয়া যেন খুব মসৃণ হয়, মধ্যে যেন ছেদ না পড়ে, অন্য স্তরে গিয়ে যেন কোনো সমস্যা না হয় সেটি আমরা দেখার চেষ্টা করেছি।
তিনি বলেন, পুরো শিক্ষাক্রম হবে শিক্ষার্থী কেন্দ্রিক, আনন্দময় পড়াশোনা হবে। বিষয়বস্তু ও পাঠ্যপুস্তকের বোঝা ও চাপ কমানো হবে। মুখস্ত নির্ভরতার বিষয়টি যেন না থাকে, এর বদলে অভিজ্ঞতা ও কার্যক্রমভিত্তিক শেখাকে অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে। শিক্ষার্থীর দৈহিক ও মানসিক বিকাশে খেলাখুলা ও অন্যান্য কার্যক্রমকে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।
শিক্ষামন্ত্রী জানান, নতুন শিক্ষাক্রম অনুযায়ী শিক্ষার্থীরা শ্রেণিকক্ষেই যেন অধিকাংশ পাঠদান সম্পন্ন করতে পারে সেই ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। এরপর শিক্ষার্থীরা যেন নিজেদের মত সময় কাটাতে পারে। পড়াশোনার বাইরে খেলাখুলা বা অন্যান্য বিষয়ের সুযোগ কমে গেছে, এটা যেন না হয়। জ্ঞান, দক্ষতা, মূল্যবোধ ও দৃষ্টিভঙ্গির সমন্বয়ে যোগ্যতা অর্জন করতে হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৫০৬ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৩, ২০২১
এমআইএইচ/ওএইচ/