ঢাকা, শুক্রবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

নির্বাচন ও ইসি

বরিশালে হাতপাখার প্রার্থী ফয়জুল করী‌মের ওপর হামলা

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩৩৪ ঘণ্টা, জুন ১২, ২০২৩
বরিশালে হাতপাখার প্রার্থী ফয়জুল করী‌মের ওপর হামলা

বরিশাল: ব‌রিশাল নগ‌রের চৌমাথা এলাকায় হাতপাখা প্রতী‌কের প্রার্থী সৈয়দ মুহাম্মাদ ফয়জুল করী‌মের ওপর হামলার ঘটনা ঘ‌টেছে। আহত অবস্থায় তি‌নি ব‌রিশাল মে‌ট্রোপ‌লিটন পুলি‌শ ক‌মিশনা‌রের নিকট অভিযোগ জা‌নি‌য়ে‌ছেন।

সোমবার (১২ জুন) দুপুরে অভিযোগে হাতপাখা প্রতীকের প্রার্থী সৈয়দ মুহাম্মাদ ফয়জুল করীমের বরাত দিয়ে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় মিডিয়া উপ-কমিটির সদস্য কে এম শরীয়াতউল্লাহ জানান, ছাবেরা খাতুন মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয় কেন্দ্র থেকে বের হওয়ার পর হাতেম আলী কলেজ চৌমাথার কাছে ৩০ থেকে ৪০ জন নৌকা সমর্থক তার ওপর অতর্কিত হামলা চালান। এ সময় তারা লাঠিসোঁটা ও পাথর ব্যবহার করেন। তার সঙ্গে থাকা বেশ কয়েকজন নেতাকর্মী এ সময় আহত হন।

আহত হওয়ার পর প্রার্থী সরাসরি রক্তাক্ত অবস্থায় রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে যান, সেখান থেকে বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনারের কার্যালয়ে যান এবং পুরো ঘটনা তুলে ধরে বিচার দাবি করেন। এরপর সেখান থেকে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে নগরের চাদমারিতে দলীয় কার্যালয়ে যান বলে জানান মিডিয়া কমিটির এই সদস্য।

প্রত্যক্ষদর্শী ও হাতপাখার সমর্থক আল মামুন বলেন, বিনা উসকানিতে আমাদের শায়েখের ওপর স্থানীয় আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা হামলা চালান। তাকে মেরে রক্তাক্ত করার পরও শায়েখ কাউকে উত্তেজিত হতে দেননি। পরে সবাইকে নিয়ে ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন।

কেন্দ্রের নারী ভোটার পলি জানান, হাতপাখা প্রতীকের প্রার্থী তার লোকদের বাইরে রেখেই ছাবেরা খাতুন মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয় কেন্দ্রে প্রবেশ করেছিলেন, তখন কেন্দ্রের বাইরে তার কর্মীরা দাঁড়ানো ছিলেন। ওই সময় নৌকার কর্মীদের সঙ্গে কোনো বিষয় নিয়ে তাদের বাগবিতণ্ডা হয়, অল্প সময়ের মধ্যে হাতপাখার প্রার্থী বেরিয়ে আসেন এবং তিনি চলে যেতে থাকলে চৌমাথা
লেকের পশ্চিম প্রান্তের মাঝামাঝি জায়গায় দুই গ্রুপের সংঘর্ষ বেঁধে যায়।

হাতপাখা প্রতীকের প্রার্থী সৈয়দ মুহাম্মাদ ফয়জুল করীম জানান, রির্টানিং কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে ২৭ নম্বর ওয়ার্ডের উদ্দেশে রওনা দেন। হাতেম আলী কলেজের চৌমাথা এলাকায় পৌঁছালে শুনতে পান হাতপাখার কর্মীদের সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। তখন তিনি নামলে তাকে ঘিরে ধরে তর্ক-বিতর্ক, ঘুষি দেওয়া শুরু করে।

তিনি বলেন, আমার লোকদের সরিয়ে দিয়েছে। এ সরকারকে পতন না ঘটিয়ে ছাড়ব না, আমি মরি আর বাঁচি। আমার গায়ে হাত দিয়েছে, রক্তাক্ত করছে। আমি ওদের বাপের বয়সী, আলেম মানুষ। পাঁচটা মানুষ শ্রদ্ধা-সম্মান করে। আমার ওপর আঘাত করতে হবে। এত নিকৃষ্ট, এত জানোয়ার হতে পারে মানুষ! এত পিশাচ হতে পারে মানুষ! বাবা সমতুল্য ব্যক্তিকে আঘাত করবে। মামলা তো করবোই। নির্বাচন শেষ হোক, রাস্তায় যখন রক্ত ঝরেছে, আওয়ামী লীগের পতন না ঘটানো পর্যন্ত রাস্তা ছাড়ব না।

এদিকে এ ঘটনার পর তাৎক্ষনিক রিটার্নিং কর্মকর্তা ও মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনারসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। কেন্দ্রের আশপাশে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উপস্থিতিও বেড়েছে।

রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. হুমায়ুন কবির বলেন, ঘটনাটি ভোটকেন্দ্রের বাইরের সড়ক হয়েছে। মৌখিকভাবে বিষয়টি জানার সঙ্গে সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ সংশ্লিষ্টদের অবগত করা হয়েছে। নিয়মানুযায়ী এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। তবে এ ঘটনায় ওই কেন্দ্রে ভোটগ্রহণে কোনো বিঘ্ন ঘটেনি বলেও জানান তিনি।

এদিকে পুলিশ কমিশনার মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, আমরা আগে থেকেই সবাইকে সতর্ক করেছিলাম, যাতে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে। কিন্তু এভাবে একজন প্রার্থীর গায়ে হাত দেওয়ার বিষয় কোনোভাবে মেনে নেওয়া হবে না। আমরা পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখে ঘটনার সঙ্গে জড়িত প্রত্যেককে আইনের আওতায় আনার কাজ শুরু করেছি।

ঘটনাস্থলে পুলিশ সদস্যরা থাকার পরও কেন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ছিল না, জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমাদের পুলিশ সদস্যরা যদি তাদের দায়িত্ব অবহেলা করেন, তবে তা তদন্ত করে খতিয়ে দেখা হবে এবং প্রমাণ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কাউকে ছাড় দেয়া হবে না।

বাংলাদেশ সময়: ১৩৩৪ ঘণ্টা, জুন ১২, ২০২৩
এমএস/আরএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।