ঢাকা, শুক্রবার, ১২ পৌষ ১৪৩১, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

নির্বাচন ও ইসি

নির্বাচন থেকে সরে গেলেন এমপি রণজিৎ

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১১৭ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২, ২০২৪
নির্বাচন থেকে সরে গেলেন এমপি রণজিৎ

যশোর: যশোরের অভয়নগর ও বাঘারপাড়া উপজেলা এবং সদর উপজেলার একটি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত যশোর-৪ সংসদীয় আসন। এই সংসদীয় আসনেই শিল্প ও বাণিজ্যিক নগরী নওয়াপাড়ার অবস্থান।

পদ্মাসেতু চালু হওয়ার পর ভৌগলিকভাবেও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে সংসদীয় আসনটি।

বিগত তিনটি জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এই আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়নে সংসদ সদস্য (এমপি) হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন রণজিৎ কুমার রায়। আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন না পেয়ে তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন। পেয়েছেন ঈগল প্রতীক। তবে প্রতীক ঘোষণার এতদিন পার হলেও তিনি নামেননি নির্বাচনী প্রচারে। এমনকি, নির্বাচনের পাঁচদিন বাকি থাকতে মঙ্গলবার (০২ জানুয়ারি) নৌকার প্রার্থীকে সমর্থন দিয়ে ভোট থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেন।

রাজনৈতিক সূত্র মতে, আসন্ন নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেতে অন্তত এক ডজন নবীন-প্রবীণ নেতা জোরেশোরে মাঠে নেমেছিলেন। সবাই তুলেছিলেন প্রার্থী পরিবর্তনের আওয়াজ। এভাবেই মনোনয়নপ্রত্যাশীদের কাছে আসনটি ‘সৌভাগ্যের’ আসনে পরিণত হয়। তবে সব জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন ছিনিয়ে আনেন অভয়নগর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি প্রবীণ আওয়ামী লীগ নেতা এনামুল হক বাবুল। নতুন এই প্রার্থীকে পেয়ে তাকে সমর্থন জানান মনোনয়নবঞ্চিতরা। তবে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন বিকেলে হঠাৎ করেই এমপি রণজিতের মনোনয়নপত্র জমা পড়ে। এতে গোটা সংসদীয় আসনে নতুন আলোচনার জন্ম নেয়। এরপর জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে মনোনয়ন যাচাই-বাছাইয়ের দিন স্বতন্ত্র প্রার্থী রণজিৎ ও বিএনএম প্রার্থী সুকৃতি মণ্ডল আওয়ামী লীগ মনোনীত এনামুল হক বাবুলকে ঋণখেলাপি জানিয়ে প্রার্থিতা বাতিলের জন্য আবেদন করেন। এতেও যাচাই-বাছাইকালে বৈধ ঘোষণা করেন রিটার্নিং কর্মকর্তা। এরপর অভিযোগকারী ওই দুই প্রার্থী একই অভিযোগ করেন নির্বাচন কমিশনে। এতে কমিশনের শুনানিতে বাতিল করা হয় বাবুলের প্রার্থীরা। ফলে নির্বাচনী এলাকায় বাবুল শিবিরে তৈরি হয় হতাশা। কমিশনের ওই রায়ের বিরুদ্ধে এনামুল হক বাবুল আপিল করেন উচ্চ আদালতে, সেখানেও আপিলটি খারিজ করা হয়। ফলে বেশ বাবুলের ভোটে অংশগ্রহণ পুরোপুরি অনিশ্চয়তা তৈরি হয়। তবে পরদিনই ওই রায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টের চেম্বার আদালতে আপিল করেন বাবুল। ওই আপিলের শুনানিতে চেম্বার বিচারপতির রায়ে বৈধ প্রার্থীর স্বীকৃতি পান এনামুল হক বাবুল। তবে এ রায়ের বিরুদ্ধে দুইজন স্বতন্ত্র প্রার্থী আপিল বিভাগের আবেদন করেন।  

মঙ্গলবার আপিল বিভাগের প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বে আপিল বিভাগের শুনানিতে এনামুল হক বাবুলের প্রার্থিতা বহাল রাখা হয়েছে। ফলে নির্বাচনের আগে মাসব্যাপী চলা আইনি লড়াইয়ে জয়ী হলেন এনামুল হক বাবুল। একইসঙ্গে আদালতের আদেশের পরপরই স্বতন্ত্র প্রার্থী রণজিৎ নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়ে নৌকার প্রার্থীকে সমর্থন দেন। দলীয় ও নিজের নেতাকর্মীকে নৌকার পক্ষে কাজ করার আহ্বান জানান।

সোমবার (১ জানুয়ারি) দুপুরে এমপি রণজিৎ গণমাধ্যমকে বলেন, আসন্ন নির্বাচনে আমার প্রতীক ছিল ঈগল। তবে আমি বরাবরই জনসন্মুখে বলেছি, নৌকার বিপক্ষে কখনো নির্বাচন করবো না। সে কারণে প্রতীক বরাদ্দের পরও এতদিনে আমি বা আমার পক্ষের কেউ প্রচার-প্রচারণায় নামিনি। কোথাও মাইকিং কিংবা একটা পোস্টার টাঙায়নি।

সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেওয়া স্বতন্ত্র প্রার্থী রণজিৎ ছাড়াও এই আসনে প্রার্থী আছেন আরও চারজন। তারা হলেন, জাতীয় পার্টির (জাপা) লাঙ্গল প্রতীকের অ্যাডভোকেট জহুরুল হক, তৃণমূল বিএনপির সোনালি আঁশ প্রতীকের লে. কর্নেল (অব.) এম শাব্বির আহম্মেদ, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের নোঙর প্রতীকের সুকৃতি কুমার মণ্ডল ও ইসলামী ঐক্যজোটের মিনার প্রতীকের ইউনুস আলী।

বাংলাদেশ সময়: ২১১৭ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০২, ২০২৪
ইউজি/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।