ঢাকা: জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) জালিয়াতি রোধ ও কার্যক্রমে গতি আনতে শুদ্ধি অভিযানে নামছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এক্ষেত্রে নিয়মিত মনিটরিংয়ের মাধ্যমে অপরাধীদের শাস্তির আওতায় আনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সংস্থাটি।
ইসি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সরবরাহ করার পরও যেমন নাগরিকের এনআইডি সংক্রান্ত আবেদন নিষ্পত্তি করা হয় না। তেমনি আংশিক তথ্য সরবরাহ করেও অনেকের আবেদন নিষ্পত্তি হয়ে যাচ্ছে। মাঠ পর্যায়ে বিশেষ করে উপজেলা, জেলা পর্যায়ে এমন অনিয়ম দৃষ্টিগোচর হয়েছে। শুধু তাই নয়, ইসির সার্ভারে প্রবেশ করে অবৈধ পন্থায় তথ্য সংশোধন করার ঘটনাও ঘটেছে। এক্ষেত্রে সেই তথ্য সংশোধনের প্রমাণও মুছে ফেলার চেষ্টা করা হয়েছে।
কর্মকর্তারা বলছেন, এ বিষয়গুলো ঠেকাতে কঠোর হওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সংস্থাটি। সম্প্রতি অনুষ্ঠিত মাসিক সমন্বয় সভাতে এমন সিদ্ধান্ত হয়েছে।
ইসি সচিব মো. জাহাংগীর আলম সভায় কর্মকর্তাদের নির্দেশনা দেন, জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগ এবং মাঠ পর্যায়ের কার্যালয়সমূহে কোন সালের কোন ধরনের ক্যাটাগরির কতগুলো আবেদন অনিষ্পন্ন রয়েছে তা মার্চের প্রথম সপ্তাহের মধ্যে কমিশন সচিবালয়কে জানাতে হবে।
তিনি বলেন, দাপ্তরিক প্রয়োজনে মাঠ পর্যায়ের কার্যালয়গুলোতে বেশ কিছু মোবাইল সিম দেওয়া হয়। অনেক ক্ষেত্রে অপটিক্যাল ফাইবার সংযোগ প্রদান করার কারণে ওই সিমগুলো ব্যবহৃত হচ্ছে না। ক্ষেত্র বিশেষে আউটসোর্সিং জনবলের মাধ্যমে ওই সিমগুলোর অবৈধ ব্যবহার পরিলক্ষিত হচ্ছে। এ বিষয়ে জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগ এবং মাঠ
পর্যায়ের কার্যালয়গুলোকে অধিকতর সচেতন হতে হবে, মনিটরিং বাড়াতে হবে। এবং অপরাধীদের উপযুক্ত শাস্তির আওতায়
আনতে হবে। এ ক্ষেত্রে অব্যবহৃত সিমগুলো কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ফেরত আনার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
কার্যবিবরণী বলছে সভায় ইসি সচিব সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন না করায় দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের প্রতি অসন্তোষ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, জাতীয় পরিচয়পত্র সেবা নিয়ে সেবা গ্রহীতাদের মধ্যে অসন্তোষ ও অভিযোগ বিদ্যমান রয়েছে। তাই এনআইডি সেবা সংশ্লিষ্ট সব কার্যক্রম আরও সহজিকরণ ও জনকল্যাণমূলক করতে হবে। যে সব কর্মকর্তা অঞ্চলভিত্তিক ক্যাটাগরিকরণের দায়িত্বে রয়েছেন তারাও যথাযথভাবে দায়িত্ব পালন করছে না মর্মে প্রতীয়মান হচ্ছে। তাছাড়া অনেকেই একই কর্মস্থলে অনেক বছর ধরে কর্মরত রয়েছেন। এ সব কর্মকর্তাদেরকে রদ-বদলের মাধ্যমে নতুন কর্মকর্তাদের পদায়ন করতে হবে।
সিদ্ধান্তগুলো বাস্তবায়নের এনআইডি মহাপরিচালককে নির্দেশনাও দেন ইসি সচিব মো. জাহাংগীর আলম।
২০০৮ সালের নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে ছবিযুক্ত ভোটার তালিকা প্রণয়ন করে নির্বাচন কমিশন। সেই তালিকার ভিত্তিতে পরবর্তীতে এনআইডি সরবরাহের উদ্যোগ নেন এটিএম শামসুল হুদার নেতৃত্বাধীন তৎকালীন কমিশন। সে সময় তারা ভোটার তথা এনআইডি সার্ভার গড়ে তোলেন। এতে বর্তমানে ১২ কোটি ১৭ লাখের নাগরিকের তথ্য রয়েছে, যাদের প্রায় সবার রয়েছে এনআইডি। এই সার্ভারের মাধ্যমেই এনআইডি তথ্য সংশোধন করা হয়। এতেই নানা অনিয়মের খোঁজ পায় সংস্থাটি।
বাংলাদেশ সময়: ০০২৯ ঘণ্টা, মার্চ ০১, ২০২৩
ইইউডি/আরএ