ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

নির্বাচন ও ইসি

দলগুলোর আয়-ব্যয়: হিসাব জমার সময় বাড়ানোর ইচ্ছা নেই ইসির

ইকরাম-উদ দৌলা, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১৫৮ ঘণ্টা, জুলাই ৩০, ২০২৪
দলগুলোর আয়-ব্যয়: হিসাব জমার সময় বাড়ানোর ইচ্ছা নেই ইসির

ঢাকা: বিগত পঞ্জিকা বছরের নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলগুলোর আয়-ব্যয়ের হিসাব জমা দেওয়ার সময় এবার না বাড়ানোর পরিকল্পনা করছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এক্ষেত্রে বুধবার (৩১ জুলাই) হচ্ছে শেষ সময়।

ইসির নির্বাচন ব্যবস্থাপনা শাখার কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ৪৪টি নিবন্ধিত দলের মধ্যে ইতোমধ্যে ১৭টি দল বিবরণী দাখিল করেছে। এদের মধ্যে বড় দলগুলো তথা বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জাতীয় পার্টি (জাপা) হিসাব জমা দিয়েছে। এখনো ২৭টি দল কোনো সাড়া দেয়নি।

জানা গেছে, ২০২৩ পঞ্জিকা বছরে আওয়ামী লীগের আয় বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৭ কোটি ১৪ লাখ ৪৫ হাজার টাকা, যা আগের বছরের তুলনায় ১৬ কোটি ৪৩ লাখ ৯ হাজার ২৩২ টাকা বেশি। একই বছর দলটির ব্যয়ও বেড়েছে, আগের চেয়ে যা দুই কোটি ৫১ হাজার ৪২১ টাকা বেশি।

২০২৩ সালে জানুয়ারি মাসে আওয়ামী লীগের ব্যাংকে ৭৩ কোটি ২৭ লাখ ৫৪ হাজার টাকা জমা ছিল। এ বছর আয় হয়েছে ২৭ কোটি ১৪ লাখ ৪৫ হাজার টাকা। মাসিক চাঁদা, সদস্যরা চাঁদা দেন। যার পরিমাণ এক কোটি ৬৩ লাখ ৬৩ হাজার টাকা। অনুদান প্রাপ্তি (মেঘনা ব্যাংক পিএলসি) এক কোটি এক লাখ টাকা। নমিনেশন ফরম বিক্রয় (৩৩৬৫ জন) ১৬ কোটি ৮২ লাখ ৫০ হাজার টাকা। ফরম বিক্রয় (অন্যান্য) দুই কোটি ২৯ লাখ ৮৪ হাজার টাকা। ভাড়া (২৩ বঙ্গবন্ধু এভিনিউ) ১৫ লাখ ৩৫ হাজার টাকা। ব্যাংক সুদ চার কোটি ৮৪ লাখ ৪১ হাজার টাকা। অন্যান্য (উত্তরণ, বিদ্যুৎ বিল) ৩৭ লাখ ৭২ হাজার টাকা। এতে মোট ২৭ কোটি ১৪ লাখ ৪৫ হাজার টাকা আয় করেছে। আর নয় কোটি ৮৭ লাখ ৩৬ হাজার টাকা দলটির ব্যয় হয়েছে।

এদিকে টানা তিন বছর ধরে ঘাটতিতে থাকার পর গত বছর লাভের মুখ দেখলেও এবার ফের আয়ের চেয়ে ব্যয় বেড়েছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপির। এতে দলটির ‘ক্ষতি’ হয়েছে দুই কোটি ৫৪ লাখ ৪৩ হাজার ৮১৯ টাকা।

২০২৩ পঞ্জিকা বছরে দলটির আয় হয়েছে এক কোটি ১০ লাখ ৮০ হাজার ১৫১ টাকা। আর ব্যয় হয়েছে তিন কোটি ৬৫ লাখ ২৩ হাজার ৯৭০ টাকা। অফিস খরচ স্টাফদের বেতন, পত্রিকায় বিজ্ঞাপন, পোস্টার-লিফলেট, ইফতার আয়োজন ও দলীয় নেতাকর্মী গুম-খুন পরিবারের আর্থিক সহযোগিতা বাবদ ব্যয় হয়েছে। আর ক্ষতি হয়েছে দুই কোটি ৫৪ লাখ ৪৩ হাজার ৮১৯ টাকা।

অন্যদিকে আগের বছরের তুলনায় জাতীয় পার্টির আয় ও ব্যয় কিছুটা কমেছে। তবে তহবিল আগে চেয়ে বেড়েছে। নির্বাচন কমিশনে (ইসি) জমা দেওয়া দলটির ২০২৩ পঞ্জিকা বছরের বিবরণী বলছে, জাপা আয় করেছে দুই কোটি ২২ লাখ দুই হাজার ৪০৫ টাকা। আর ব্যয় করেছে এক কোটি ১৩ লাখ ১৮ হাজার ৫২৫ টাকা।

জাপার ব্যাংকে আগের স্থিতি ছিল এক কোটি ৭৭ হাজার ৪২৬ টাকা। বর্তমানে তহবিল হচ্ছে দুই কোটি নয় লাখ ৬১ হাজার ৩০৬ টাকা।

২০২২ পঞ্জিকা বছরে দলটির আয় হয়েছিল দুই কোটি ২৯ লাখ ১৪ হাজার ৯৬৮ টাকা। আর ব্যয় হয়েছিল এক কোটি ২৮ লাখ ৩৭ হাজার ৫৪২ টাকা।

গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ অনুযায়ী, প্রতি বছর ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে দলগুলোকে আগের পঞ্জিকা বছরের হিসাব জমা দিতে হয়। এক্ষেত্রে কোনো দল পরপর তিন পঞ্জিকা বছর হিসাব জমা না দিলে সংশ্লিষ্ট দলের নিবন্ধন বাতিলের বিধান আছে। তবে কোনো দল ইসিতে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে হিসাব জমা দিতে না পারার কারণ উল্লেখ করে সময় বাড়ানোর আবেদন করলে কমিশন সময় বাড়িয়ে দেয়। গত কয়েক বছরে বেশ কয়েক সময় বাড়ানো হয়েছিল।

এ নিয়ে ইসির অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ বাংলানিউজকে বলেন, বেশ কয়েকটি দল হিসাব জমা দিয়েছে। এখনো অনেকে দেয়নি। কেউ সময় বাড়ানোর আবেদনও করেনি। কাজেই সময় বাড়ানোর কোনো ইচ্ছা নেই।

বাংলাদেশ সময়: ২১৫৮ ঘণ্টা, জুলাই ৩০, ২০২৪
ইইউডি/আরআইএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।