ঢাকা: ভোটার এলাকা পরিবর্তনে বিদ্যমান ঠিকানা ও চাহিত ঠিকানার উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয়ে দৌড়াতে হয় নাগরিকদের। এ ছাড়া এলাকার পরিবর্তন ও জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) পেতে দুই বার ফি দিতে হয়।
সংস্থাটির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, নাগরিকদের এনআইডি সেবা সহজীকরণে সম্প্রতি একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। সেই কমিটি যাচাই-বাছাই শেষে সমস্যা ও সমস্যা উত্তরণের উপায় নিয়ে একটি প্রতিবেদন জমা দিয়েছে।
সেবা সহজীকরণ কমিটির প্রধান ও ইসির উপ-সচিব এম মাজহারুল ইসলামের দাখিল করা প্রতিবেদনে বিষয়টি উঠে এসেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিদ্যমান পদ্ধতি বা ব্যবস্থায় বর্তমানে আবেদনকারী যে এলাকায় স্থানান্তরিত হতে চান সেই উপজেলা বা থানা নির্বাচন অফিসে আবেদন দাখিল করতে হয়। আবেদন প্রাপ্তির পর ওই উপজেলা বা থানা নির্বাচন অফিসার কর্তৃক দাখিলকৃত দলিলাদি যাচাই-বাছাই শেষে আবেদন ইস্যু করা হয়। এরপর বিদ্যমান ঠিকানায় উপজেলা বা থানা নির্বাচন অফিসার কর্তৃক আবেদন অনুমোদন করতে হয়। অর্থাৎ বিদ্যমান ঠিকানা ও চাহিত ঠিকানা উভয় উপজেলা বা থানা নির্বাচন কর্মকর্তার অনুমোদন প্রয়োজন হয়।
সমস্যা হিসেবে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিদ্যমান ঠিকানা ও চাহিত ঠিকানা উভয় উপজেলা বা থানা নির্বাচন কর্মকর্তার অনুমোদন প্রয়োজন হয় বলে স্থানান্তর কার্যক্রমে দীর্ঘসূত্রতা হয়।
এ জন্য আবেদনকারী চাহিত ঠিকানার উপজেলা বা থানা নির্বাচন অফিসে আবেদন দাখিল করবেন। সংশ্লিষ্ট উপজেলা বা থানা নির্বাচন অফিসার কর্তৃক দলিলাদি যাচাই-বাছাই শেষে অপারেটরকে আবেদন ইস্যু করার জন্য অনুমতি দেবেন। এক্ষেত্রে অপারেটর কর্তৃক আবেদন ইস্যু করার পর উপজেলা বা থানা নির্বাচন অফিসার ইলেট্রনিক্যালি অনুমোদন করবেন। এতে পূর্বের ঠিকানার উপজেলা বা থানা নির্বাচন অফিসারের অনুমোদন প্রয়োজন হবে না। অর্থাৎ একই অফিসে কার্যক্রম সম্পন্ন হওয়ায় দ্রুততম সময়ে আবেদন নিষ্পত্তি হবে।
এভাবে ভোটার এলাকার পরিবর্তনের জন্য যে উপজেলা বা থানা নির্বাচন অফিসের অধীন এলাকা থেকে ভোটার স্থানান্তরিত হয়েছেন, সে উপজেলা বা থানা নির্বাচন কর্মকর্তার অবগতির জন্য কার্ড ম্যানেজমেন্ট সফটওয়ারে তার এলাকা থেকে স্থানান্তরিত এলাকা ভিত্তিক ভোটার সংখ্যা ও ভোটারের তথ্য প্রদর্শনের ব্যবস্থা করা যেতে পারে।
এদিকে ভোটার স্থানান্তর সম্পন্ন হওয়ার পর আবেদনকারীদের মোবাইলে স্থানান্তরিত ঠিকানার কার্ড সংগ্রহের জন্য উপজেলা নির্বাচন অফিসে যোগাযোগ করার জন্য মোবাইলে এসএমএস দেওয়া হয়। এতে বর্তমান নিয়মানুযায়ী প্রথমে মাইগ্রেশন আবেদন দাখিল করতে হয়। এরপর তা অনুমোদন হলে স্থানান্তরিত ঠিকানার কার্ড সংগ্রহের জন্য ফি দিয়ে আবার ডুপ্লিকেট কার্ডের আবেদন করতে হয়। এভাবে আবেদনকারীদের সময় অপচয় হয়। এ ছাড়া মেসেজ ভুল তথ্য সরবরাহের জন্য ঝামেলা সৃষ্টি হয়।
এজন্য স্থানান্তর আবেদনের সাথে স্থানান্তরিত ঠিকানার কার্ড সংগ্রহের জন্য একবারেই ফি নেওয়া যেতে পারে। স্থানান্তর প্রক্রিয়া সম্পন্ন হওয়ার সাথে সাথে আবেদনকারী পোর্টাল থেকে যেন কার্ড ডাউনলোড করতে পারেন, সেই ব্যবস্থা করতে হবে। পাশাপাশি আবেদনকারী সরাসরি অফিসে এসে কার্ড সংগ্রহ করতে চাইলে কার্ড প্রিন্টের জন্য সফটওয়ারেও প্রিন্টের ব্যবস্থা রাখতে হবে। এতে করে স্থানান্তর কার্যক্রম ও স্থানান্তরিত ঠিকানার কার্ড গ্রহণের জন্য একাধিকবার আবেদনের প্রয়োজন হবে না। ওয়ানস্টপ সার্ভিস দেওয়া সম্ভব হবে।
এ বিষয়ে ইসি সচিব আখতার আহমেদ বলেন, দীর্ঘদিন ধরে একটি সিস্টেমের মধ্যে এনআইডি কার্যক্রমটি সম্পন্ন করা হচ্ছে। আমি এখানে নতুন এসেছি। বিষয়গুলো খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এ ছাড়া যে কোনো সিদ্ধান্তের ক্ষেত্রে কমিশনের অনুমোদন নেওয়ারও প্রয়োজন পড়ে। তবে নাগরিকদের যাতে সহজে সেবা দেওয়া যায় আমাদের সেটাই লক্ষ্য। আমরা সে চেষ্টাই করছি।
বাংলাদেশ সময়: ০৭২৬ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৯, ২০২৪
ইইউডি/এমজেএফ