ইসি কর্মকর্তারা জানান, ভোটার দিবস উদযাপনে ভারতের অভিজ্ঞতা কাজে লাগানোর নীতিগত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। যার অংশ হিসেবে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কেএম নূরুল হুদা ও নির্বাচন পরিচালনা শাখার যুগ্ম সচিব ফরহাদ আহাম্মদ খান ভারত সফর করবেন।
জানা যায়, আগামী ২৩ থেকে ২৮ জানুয়ারি পর্যন্ত ভারত সফর করবেন সিইসি। আর ফরহাদ আহাম্মদ খান ২৩ জানুয়ারি গিয়ে ফিরবেন ২৬ জানুয়ারি।
সিইসির সঙ্গে তার স্ত্রী হোসনে আরা হুদাও থাকবেন। তবে স্ত্রীর ব্যয় সিইসি নিজেই বহন করবেন।
কর্মকর্তারা জানান, আগামী ২৫ জানুয়ারি জাতীয় ভোটার দিবস উদযাপন করবে ভারত। দেশটির নির্বাচন কমিশন দিবসটি উদযাপনে নানা উদ্যোগ নেয়। সরকার ও নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় তরুণদের অংশগ্রহণ উৎসাহী করতে ২০১১ সাল থেকে প্রত্যেক ২৫ জানুয়ারি দিবসটি উদযাপন করছে ভারত। ২০১৮ সালে সাত লাখ স্থানে নানা কর্মসূচির মাধ্যমে দিবসটি পালন করে তারা। এবারও ব্যাপক প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে।
ভারতের ভোটার দিবস উদযাপন সফল করতে কর্মসূচিগুলোয় উপস্থিত থেকে অভিজ্ঞতা নিতেই সিইসি সেখানে অংশ নিচ্ছেন। সেই অভিজ্ঞতার প্রায়োগিক দিক বিশ্লেষণ করে বাংলাদেশেও কাজে লাগানো হবে।
১ মার্চ আসতে আরো ৪০ দিনের মতো সময় রয়েছে নির্বাচন কমিশনের হাতে। ইতোমধ্যে প্রাথমিক প্রস্তুতিমূলক কাজ শুরু করেছে ইসি সচিবালয়।
দিবসটি সফল করতে কেন্দ্র, বিভাগ, অঞ্চল জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে পাঁচটি কমিটি গঠন করে দিয়েছে নির্বাচন কমিশন।
কেন্দ্রীয় কমিটিতে নির্বাচন কমিশন সচিবকে সভাপতি ও একজন উপ-সচিবকে সদস্য সচিব করে ২৮ সদস্যের কমিটি কাজ করবে।
বিভাগীয় কমিশনারের সভাপতিত্বে ২৭ সদস্যের কমিটি কাজ করবে বিভাগীয় পর্যায়ে।
আঞ্চলিক পর্যায়ে কাজ করবে আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তার সভাপতিত্বে ২৪ সদস্যের কমিটি।
জেলায় কাজ করবে জেলা প্রশাসকের সভাপতিত্বে ৩০ সদস্যের কমিটি।
আর ২৫ সদসদ্যের কমিটি উপজেলা চেয়ারম্যানের সভাপতিত্বে উপজেলা পর্যায়ে কাজ করবে।
কেন্দ্রীয় কমিটি ছাড়া অন্য চার কমিটি দিবসটি উদযাপনে কর্মসূচি প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করবে। এক্ষেত্রে কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ে আলোচনা সভার আয়োজন, ব্যানার, ফেস্টুন ও লিফলেট ইত্যাদি প্রদর্শন, র্যালি আয়োজন, উপজেলা পর্যায়ের সব কর্মকর্তাদের উপস্থিতি নিশ্চিতকরণ, গণসচেতনতা সৃষ্টিতে মসজিদ, মন্দিরসহ ধর্মীয় উপসনালয়কে সম্পৃকরণ ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সম্পৃক্তকরণ ইত্যাদি রয়েছে কমিটিগুলোর কার্যপরিধির মধ্যে।
আর কেন্দ্রীয় কমিটি নির্বাচন কমিশনের নির্দেশনায় সব দফতরের সঙ্গে সমন্বয় করে কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন ও সার্বিক তত্ত্বাবধায়ন করবে।
ইসি কর্মকর্তারা জানান, ভারতে ২০১১ সালে প্রথম যখন ভারত ভোটার দিবস পালন করে তরুণদের মাঝে ব্যাপক সাড়া ফেলে দেয়। সেবছর ৫২ লাখ তরুণ ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়। এছাড়া সব মিলিয়ে অন্তর্ভুক্ত করা হয় প্রায় ১ কোটি ৭০ লাখ নতুন ভোটার।
আমাদের দেশে বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোটার তালিকা হালনাগাদ করা হলেও অনেকে বাদ পড়েন। ফলে বছরব্যাপী এ কার্যক্রম চলতেই থাকে। এছাড়া জাতীয় পরিচয়পত্র সংক্রান্ত ঝামেলা তো রয়েছেই। কেবল একটু সচেতন হলেই এ সমস্যাটি থাকে না। তাই ভোটার দিবস এদেশেও তরুণদের মাঝে ব্যাপক আগ্রহের সৃষ্টি করবে।
এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের অতিরিক্ত সচিব মোখলেছুর রহমান বলেন, প্রথমবারের মতো আমরা জাতীয় ভোটার দিবস পালন করবো ১ মার্চ। এতে নানা দেশের অভিজ্ঞতাই কাজে লাগানো হবে। আমরা ইতোমধ্যে কার্যক্রম হাতে নিয়েছি।
বাংলাদেশ সময়: ০৯৩২ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২১, ২০১৯
ইইউডি/এএ