বৃহস্পতিবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে উপজেলা নির্বাচনের রিটার্নিং ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তাদের ব্রিফিং অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
মাহবুব তালুকদার তার লিখিত বক্তব্যে বলেন, গণতন্ত্র কখনো একদলীয় হয় না।
তিনি বলেন, স্থানীয় সরকারের বিভিন্ন স্তরে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের দ্বারা সকল কর্মযজ্ঞ বাস্তবায়ন অভিপ্রেত। এজন্য উপজেলা, এমনকি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন পর্যন্ত গণতান্ত্রিক কাঠামোতে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু বর্তমান ব্যবস্থায় উপজেলা পরিষদ যেভাবে দায়িত্ব পালন করার কথা, তা সম্ভব হচ্ছে না। এখানে অন্য কারও খবরদারি বা নিয়ন্ত্রণ থাকার কথা নয়। উদাহরণ স্বরূপ বলা যায়, উপজেলা পরিষদ জেলা পরিষদের অধীনস্থ নয়। কথাটা এজন্য বলছি যে, উপজেলা পরিষদ সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী না হলে এর নির্বাচনও গুরুত্বহীন হয়ে পড়া স্বাভাবিক। এক্ষেত্রে বিচারপতি খায়রুল হক ও বিচারপতি ফজলে কবীর প্রদত্ত ২০০৮ সালের রায়টি বাস্তবায়িত হলে উপজেলা পরিষদ পরিপূর্ণ স্বায়ত্তশাসিত রূপ লাভ করবে এবং উপজেলা পরিষদ নির্বাচনও অধিকতর গৌরবমণ্ডিত হবে।
জ্যেষ্ঠ এ নির্বাচন কমিশনার কর্মকর্তাদের আরও বলেন, আমরা সবাই বলে থাকি নির্বাচন আইনানুগ হতে হবে। কথাটার কিছু ব্যাখ্যা প্রয়োজন। নির্বাচন আইনানুগ হওয়ার অর্থ সবার সম-অধিকার ও সবার প্রতি সম-আচরণ নিশ্চিত করা। এজন্য আপনাদের কঠোর নিরপেক্ষতা অবলম্বন করতে হবে। কোনো প্রকার ভয়-ভীতি চাপ, লোভ বা প্রলোভনের কাছে আপনারা নতি স্বীকার করবেন না। নিজের বিবেকের কাছে দায়বদ্ধ থেকে সাহসিকতার সঙ্গে আপনারা দায়িত্ব পালন করুন। অনেক অপ্রত্যাশিত সমস্যা আপনাদের সামনে উপস্থিত হতে পারে। আইনের কাঠামোর মধ্যে থেকেই আপনাদের তা মোকাবেলা করতে হবে। আইন কখনো সমস্যা সৃষ্টি করে না, সমাধান দেয়। আইনের ব্যত্যয়ই সব সমস্যার মূল কারণ। যারা নির্বাচনে রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব পালন করছেন, তারা প্রতি পদক্ষেপে আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকবেন, এটাই প্রত্যাশা।
বর্তমান কমিশনের কার্যকালে অনেকগুলো নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে উল্লেখ করে মাহবুব তালুকদার বলেন, সদ্যসমাপ্ত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ছাড়াও ৭টি সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে আপনার সবাই অংশগ্রহণ করেছেন। এসব নির্বাচনের সাফল্য ও ব্যর্থতা সম্পর্কে আপনার সম্যক অবিহিত। নির্বাচন কমিশনে এখন পর্যন্ত নির্বাচনগুলোর সাফল্য ও ব্যর্থতা নিয়ে আত্মবিশ্লেষণমূলক আলোচনা হয়নি। কিন্তু ব্যক্তিগতভাবে আপনারা সাফল্য ও ব্যর্থতার যে অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করেছেন, তা থেকে পরবর্তী পর্যায়ের নির্বাচনগুলোর ভুলগুলো শুধরে নেওয়ার বিষয়ে উদ্যোগ নিতে পারেন। নির্বাচনের ব্যর্থতাই কেবল যাচাই হবে তা নয়, যেসব বিষয়ে সাফল্য অর্জিত হয়েছে, সেসব বিষয়গুলো যেন আগামী নির্বাচনগুলোতে অক্ষুন্ন ও অব্যাহত থাকে, যেন হারিয়ে না যায়, সে সম্পর্কে সচেতন থাকতে হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১২৩৪ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৪, ২০১৯
ইইউডি/এইচএ/