সূত্রগুলো জানায়, কাজের গতি বাড়াতে নতুন দুই শতাধিক পদ সৃষ্টির প্রস্তাব দেওয়া হলেও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে তাতে এখনো অনুমোদন মেলেনি। ফলে সহসাই কমছে না এ বিভাগের সেবাগ্রহিতাদের ভোগান্তি।
ইসি কর্মকর্তারা জানান, সারাদেশে ভোটার তালিকা প্রণয়ন, এনআইডি সরবরাহ, সংশোধন, তথ্য যাচাই করার জন্য অনুবিভাগটি ৭৪ জন লোকবল দিয়ে কাজ চালাচ্ছে। উপজেলা পর্যায়ে রয়েছে একজন ডাটা এন্ট্রি অপারেটর। কিন্তু বিশাল এই কর্মযজ্ঞের জন্য এতো অল্প লোকবলে হিমশিম খেতে হচ্ছে সংশ্লিষ্টদের। এছাড়া সেবাগ্রহিতাদের এতো চাপ যে নির্বাচনের অনেক কাজের ওপরও সে প্রভাব পড়ছে। আবার জমে যাচ্ছে এনআইডি সংশ্লিষ্ট প্রচুর আবেদন। জনসাধারণের ভোগান্তির পেছনে এটিও একটি বড় কারণ বলে মনে করছেন তারা।
বিষয়টি উপলব্ধি করে নির্বাচন কমিশনও এনআইডি অনুবিভাগের কাজের সুবিধার্থে চার শতাধিক নতুন পদ সৃষ্টির জন্য অনুমোদন দিয়েছে। কিন্তু জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে এখনো সাড়া মেলেনি। মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন মিললে চাকরিবিধি সংশোধন করে নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হবে। ফলে যে গতিতে কাজ চলছে, তা অব্যাহত থাকলে লোকবল সংকট থেকে যাবে অন্তত আরো দুই বছর। তাই পদ সৃষ্টিতে কাজের গতি বাড়ানোর উদ্যোগ নেওয়া প্রয়োজন।
ইসির প্রস্তাবনা থেকে জানা যায়, মাঠ পর্যায়ে কাজে গতি আনার জন্য ৬৪ জেলায় ১২৮টি অতিরিক্ত জেলা নির্বাচন কর্মকর্তার পদের প্রয়োজন। এক্ষেত্রে বিদ্যমান ৮৩টি নির্বাচন কর্মকর্তার পদ বিলুপ্তি কথা বলা হয়েছে। আর এনআইডি অনুবিভাগের জন্য তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তিভিত্তিক গুরুত্বপূর্ণ কিছু পদসহ ২৭৭টি পদ সৃষ্টি প্রয়োজন।
এক্ষেত্রে এনআইডি অনুবিভাগের অতিরিক্ত মহাপরিচালক পদ (গ্রেড-৩) ২টি, প্রিন্সিপাল মেইন্টেন্যান্স ইঞ্জিনিয়ার (গ্রেড-৩) ১টি, সিনিয়র সিস্টেম অ্যানালিস্ট (গ্রেড-৪) ১টি, সিনিয়র মেইন্টেন্যান্স ইঞ্জিনিয়ার (গ্রেড-৪) ১টি, পরিচালক (গ্রেড-৫) ১০টি, সিস্টেম অ্যানালিস্ট (গ্রেড-৫) ১টি, উপ-পরিচালক (গ্রেড-৬) ৮টি, মেইন্টেন্যান্স ইঞ্জিনিয়ার (গ্রেড-৬) ৫টি, প্রোগ্রামার (গ্রেড-৬) ৬টি, সহকারী পরিচালক (গ্রেড-৯) ১৬টি, সহকারী প্রোগ্রামার (গ্রেড-৯) ৬টি, সহকারী মেইন্টেন্যান্স ইঞ্জিনিয়ার (গ্রেড-৯) ৬টি পদ সৃষ্টির প্রস্তাবনা দেওয়া হয়েছে।
এছাড়াও প্রশাসনিক কর্মকর্তা (গ্রেড-১০) ৩৯টি, ব্যক্তিগত কর্মকর্তা (গ্রেড-১০) ১৯টি, অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর (গ্রেড-১৬) ২৩টি, ডাটা এন্ট্রি অপারেটর (গ্রেড-১৬) ৮০টি, গাড়ীচালক (গ্রেড-১৬) ২৪টি ও অফিস সহায়ক (গ্রেড-২০) ২৯টি পদও সৃষ্টি করার জন্যও বলেছে ইসি।
এ বিষয়ে ইসির যুগ্ম সচিব ও এনআইডি বিভাগের পরিচালক মো. আব্দুল বাতেন বাংলানিউজকে বলেন, কিছু পদের অনুমোদন দিয়েছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। আর এনআইডির ২৭৭টি পদের জন্য পুনরায় প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ হয়েছে। আশাকরি দ্রুতই অনুমোদন মিলবে। ফলে লোকবলের সংকট খুব বেশিদিন থাকবে না। কাজের গতিও বাড়বে।
ইসির এনআইডি অনুবিভাগটি মূলত ২০০৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে ছবিযুক্ত ভোটার তালিকা প্রণয়নের সময় যাত্রা শুরু করে। এরপর সেই অনুবিভাগ থেকেই দেওয়া হচ্ছে জাতীয় পরিচয়পত্র। বর্তমানে স্মার্টকার্ডও দিচ্ছে। এছাড়া নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহারের সব কারিগরি সহায়তাও দিচ্ছে এনআইডি অনুবিভাগ। নাগরিক পরিচয় নিশ্চিতে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, টেলিযোগযোগ খাত, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান খাতকে সহায়তাও করছে এ বিভাগ।
বাংলাদেশ সময়: ০৯৩৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ২০, ২০১৯
ইইউডি/এএ