এই অবস্থায় দাতা সংস্থাটির অর্থায়নে বাস্তবায়নযোগ্য বিশ্বব্যাপী আর কোনো প্রকল্পেই আগামী ৯ বছর কাজ করতে পারবে না প্রতিষ্ঠানটি। তাই সামনের দিনগুলোতে এনআইডি সংশ্লিষ্ট প্রযুক্তিগত সহায়তায় টাইগার আইটিকে সঙ্গে রাখবে কিনা, তাই নিয়ে ভাবছে নির্বাচন কমিশন।
আরও পড়ুন>>>বিশ্বব্যাংকের কালো তালিকায় টাইগার আইটি
বুধবার (৩১ জুলাই) নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) শাহাদাত হোসেন চৌধুরী এ বিষয়ে বলেছেন, অনিয়ম ও কালো তালিকাভুক্তির বিষয়টি আজ মাত্র জানতে পেরেছি। আরও জানতে হবে। এখানে আলোচনার বিষয় আছে। আলোচনা সাপেক্ষে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশনের (ইসি) ভোটার ডাটাবেইজ জাতীয় সম্পদ। এটা অনেক কষ্টে অর্জন করা হয়েছে। ব্যবসা ও রাজনৈতিক স্বার্থের ঊর্ধ্বে ওঠে। এটিকে সংরক্ষণ করতে হবে। ব্যবসা করতে গেলে এটাকে টেকানো যাবে না। এই নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার থাকা অবস্থায় ২০০৭ সালে ছবিযুক্ত ভোটার তালিকা প্রণয়ন করেছিলেন। আর সেই ডাটাবেইজ দিয়েই বর্তমানে জাতীয় পরিচয়পত্র সরবরাহ করা হচ্ছে।
সেই সময়ে এটিএম শামসুল হুদা কমিশন পরবর্তীতে ২০১১ সালে বিশ্বব্যাংকের সহায়তার আইডিইএ প্রকল্পটি হাতে নেন স্মার্টকার্ড দেওয়ার জন্য। কিন্তু স্মার্টকার্ড প্রস্তুতির কাজ পেতে টেন্ডার প্রক্রিয়ায় আঁতাত করার প্রমাণ পেয়েছে বলে দাবি করছে বিশ্বব্যাংক। এই অবস্থায় স্মার্টকার্ড প্রস্তুতকারী ফ্রান্সের অবার্থার টেকনোলজিজকে ২০১৮ সালের নভেম্বরে এবং গত ২৪ এপ্রিল টাইগার আইটিকে কালো তালিকাভুক্ত করে। একইসঙ্গে তাদের উন্নয়ন সহায়তায় নিষিদ্ধ ঘোষণা করে।
বর্তমানে ভোটার রেজিস্ট্রেশন সিস্টেম, ডাটাবেজ ম্যানেজমেন্ট, আঙুলের ছাপ মেলানোর এএফআইএস সার্ভারসহ গুরুত্বপূর্ণ কার্যক্রমগুলো সম্পন্ন করতে টাইগার আইটির সহায়তা নিচ্ছে ইসি।
আরও পড়ুন>>দেড় কোটি নাগরিকের স্মার্টকার্ড অনিশ্চিত
এনআইডি অনুবিভাগের পরিচালক (অপারেশন্স) মো. আবদুল বাতেন বাংলানিউজকে বলেন, ফ্রান্সের প্রতিষ্ঠান অবার্থারের ৯ কোটি ভোটারে স্মার্টকার্ড প্রস্তুত করে উপজেলা পর্যায় পর্যন্ত পৌঁছে দেওয়ার চুক্তি হয়েছিল। কিন্তু প্রতিষ্ঠানটি চুক্তির মেয়াদ কয়েক দফা বাড়ালেও আমাদের কার্ড দিয়ে ৭ কোটি ৭০ লাখ। ১ কোটি ৩০ লাখ কার্ড এখনো দেয়নি।
অবার্থার স্মার্টকার্ডে তথ্য ইনপুটের কাজ সম্পন্নের সহায়তা নিতো টাইগার আইটির সঙ্গে। কিন্তু তাদের মধ্যে ব্যবসায়িক দ্বন্দ্বের কারণে আমাদের প্রকল্প বাস্তবায়নে সমস্যা হয়েছে।
টাইগার আইটি প্রকল্প বাস্তবায়নের একপর্যায়ে অবার্থারকে সহযোগিতা না করলে অবার্থার তাদের লোকবল দেশে এনে কাজ সম্পন্ন করে দিতে চেয়েছিল। কিন্তু ডাটাবেজের জাতীয় নিরাপত্তার কথা ভেবে তাদের সে অনুমতি দেওয়া হয়নি। এখন পর্যন্ত আমরা সাড়ে কোটি স্মার্টকার্ড প্রস্তুত করে বিতরণের পর্যায়ে আছি। ৩ কোটি ৩০ লাখ ফাঁকা কার্ডে বর্তমানে তথ্য ইনপুটের কাজ চলছে।
বিশ্বব্যাংকের সে প্রকল্পের সময় শেষ। দেশের সব নাগরিককে স্মার্টকার্ড দেওয়ার জন্য ইসি সরকারি তহবিল থেকে আরেকটি প্রকল্প হাতে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এক্ষেত্রে সহায়তা করবে বাংলাদেশ মেশিন টুলস ফ্যাক্টরি।
বাংলাদেশ সময়: ২০২২ ঘণ্টা, জুলাই ৩১, ২০১৯
ইইউডি/এএটি