এক বছরের মধ্যে স্মার্টকার্ড বিতরণ সম্পন্ন করার লক্ষ্য নিয়ে ২০১৬ সালের অক্টোবরে কার্যক্রম শুরু করে ইসি। ওই বছরের ৩ অক্টোবর থেকে সারাদেশে এ কার্যক্রম হাতে নেওয়া হয়।
সূত্রে জানা যায়, ২০১১ সালে নয় কোটি ভোটারকে স্মার্টকার্ড দেওয়ার জন্য বিশ্বব্যাংকের সহায়তায় আইডিইএ নামে একটি প্রকল্প হাতে নেয় ইসি। এ প্রকল্পের অধীনে ২০১৫ সালে ফ্রান্সের অবার্থার টেকনোলজিজ নামের একটি কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি করা হয়। সেখানে ১৮ মাসের মধ্যে নয় কোটি স্মার্টকার্ড প্রস্তুত করে কথা ছিল কোম্পানিটির।
কার্ড প্রস্তুত করে নেওয়ার এক পর্যায়ে ২০১৬ সালের ৩ অক্টোবর বিতরণ কার্যক্রমে যায় ইসি। তখন থেকে ৩৫ মাসে কার্ড বিতরণ করা হয়েছে তিন কোটি ৩২ লাখ ১০ হাজার। আর পাঁচ কোটি ৬৭ লাখ ৯০ হাজার স্মার্টকার্ড এখনো বিতরণ করা হয়নি।
কমিশন সূত্র জানিয়েছে, এখন পর্যন্ত কার্ড প্রস্তুত করা হয়েছে চার কোটি ৬০ লাখ। আর চার কোটি ৪০ লাখ কার্ড এখনো প্রস্তুত করা হয়নি। অর্থাৎ নাগরিকের তথ্য সেসব কার্ডে ইনপুট দেওয়া হয়নি। এরমধ্যে আবার এক কোটি ৩০ লাখ কার্ড সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে এখনো হাতে পায়নি ইসি।
ইসি কর্মকর্তারা বলছেন, স্মার্টকার্ড বিতরণে যেভাবে সময় নেওয়া হচ্ছে। এভাবে চলতে থাকলে ২০১১ সালের সেই নয় কোটি ভোটারের কার্ড সরবরাহ করতেই লেগে যাবে আরও ছয় বছর। অর্থাৎ ২০২৫ সালের আগে তারা কার্ড পাবেন কিনা সন্দেহ আছে।
এদিকে, আইডিইএ প্রকল্পের বাইরেও প্রতিদিন নতুন নতুন ভোটার তালিকায় যুক্ত হচ্ছে। বর্তমানে ভোটার রয়েছে ১০ কোটি ৪৮ লাখের মতো। এ অবস্থায় নতুন ভোটারদের কার্ড পেতে আরও বেশি সময় অপেক্ষা করতে হবে। কেননা, নতুন ভোটারদের স্মার্টকার্ড দেওয়ার জন্য ইসির কাছে কোনো অর্থ নেই।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অনেক কর্মকর্তাই বলছেন, স্মার্টকার্ড পেতে এভাবে দেরি হলে, যে সুবিধার কথা বিবেচনা করে এ কার্ডগুলো দেওয়া হচ্ছে, তার সুফল থাকবে না। কেন না, সেবাদানকারী সংস্থাগুলোও এ কার্ডের ভিত্তিতে সেবা কার্যক্রম শুরু করতে পারবে না। স্মার্টকার্ডের মাধ্যমে ২৫ ধরনের সেবা দেওয়ার কথা বলা হয়েছিল।
এ বিষয়ে ইসির অতিরিক্ত সচিব মো. মোখলেছুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, নতুন ভোটারদের স্মার্টকার্ড দেওয়ার জন্য এবং এটা চলমান রাখার জন্য আমরা নতুন আরেকটি প্রকল্প হাতে নিচ্ছি। সরকারের তহবিল থেকেই ওই প্রকল্পের অর্থের যোগান দেওয়া হবে।
স্মার্টকার্ড বিতরণে বিলম্বের বিষয়ে জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের পরিচালক (অপারেশন্স) আবদুল বাতেন বাংলানিউজক বলেন, প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান সময়মতো কার্ড হস্তান্তর করতে পারেনি বলেই এ বিলম্ব হয়েছে। তবে কার্ড বিতরণ চলমান রয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১২৫০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ০১, ২০১৯
ইইউডি/আরআইএস/