ভোটের নয় মাস পর নির্বাচন কমিশন (ইসি) প্রকাশিত দলগুলোর ব্যয়ের প্রতিবেদন থেকে এ চিত্র পাওয়া গেছে।
একাদশ সংসদ নির্বাচনে সে সময়কার নিবন্ধিত ৩৯টি দলই ভোটে অংশ নেয়।
নির্বাচনে জেপি ১১ (মহাজোট ২), সাম্যবাদী দল ২, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ ৮ (ধানের শীষ ৪), বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি) ৭৪, আওয়ামী লীগ ২৬০ (নৌকা ২৭২), এলডিপি ৮ (ধানের শীষ) ৪, বিএনপি ২৫৭ (ধানের শীষ ২৮২), ন্যাপ ৯, জাতীয় পার্টি ১৭৫ (মহাজোট ২৫), বিকল্পধারা ২৬ (নৌকা ৩), বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি ৮ (নৌকা ৫), গণতন্ত্রী পার্টি ৬, বাসদ ৪৪, বিজেপি ৩ (ধানের শীষ ১), তরিকত ফেডারেশন ১৭ (নৌকা ১), বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন ২৪, বাংলাদেশ মুসলীম লীগ ৪৮, এনপিপি ৭৯ জন প্রার্থী দিয়েছিল।
অন্যদিকে জমিয়াতে উলামায়ে ইসলাম ৮ (ধানের শীষ ৩), জাসদ ১১ (নৌকা ৩), জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জেএসডি ১৯ (ধানের শীষ ৪), জাকের পার্টি ৯০, গণফোরাম ২৮ (ধানের শীষ ৭), গণফ্রন্ট ১৩, পিডিপি ১৪, বাংলাদেশ ন্যাপ ৩, বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি ১১, ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশ ১৮, কল্যাণ পার্টি ২ (ধানের শীষ ১), ইসলামী ঐক্যজোট ২৫, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস ৫, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ২৯৮, বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট ২৫, জাগপা ৪, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি ২৮, খেলাফত মজলিস ১২ (ধানের শীষ ২), বাংলাদেশ মুসলিম লীগ- বিএমএল ১, মুক্তিজোট ২, বিএনএফ ৫৭ জন প্রার্থী দিয়েছিল।
এসব দলের মধ্যে এলডিপি, বিকল্পধারা বাংলাদেশ, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদ, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন, গণফোরাম, জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি, বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মুক্তিজোট দল থেকে কোনো ব্যয় করেনি বা প্রার্থীকে কোনো সহায়তা দেয়নি বলে জানিয়েছে নির্বাচন কমিশনকে।
যেসব দল সবচেয়ে বেশি ব্যয় করেছে, সেগুলোর মধ্যে শীর্ষে আছে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ। দলটি ব্যয় দেখিয়েছে ২ কোটি ১৪ লাখ ৮ হাজার ২১২ টাকা। দলটি সব আসনেই প্রার্থী দিয়েছে।
বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট ফ্রন্ট- বিএনএফ ৫৭ জন প্রার্থী দিয়ে ব্যয় করেছে ১ কোটি ১৯ লাখ ২০ হাজার টাকা।
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ২৬০ আসনে প্রার্থী দিয়ে ব্যয় করেছে ১ কোটি ৫ লাখ ৫৭ হাজার ৬৩৮ টাকা। আর বিএনপি ২৫৭ আসনে প্রার্থী দিয়ে ১ কোটি ১১ লাখ ৩৯ হাজার ১২০ টাকা ব্যয় করেছে। আর বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি ৮ জন প্রার্থী দিয়ে ব্যয় করেছে ১ কোটি ১৪ লাখ টাকা।
কোন দল কত ব্যয় করেছে তা দেখতে ক্লিক করুন
সবচেয়ে কম টাকা দলের পক্ষ থেকে ব্যয় করেছে বাংলাদেশ মুসলিম লীগ-বিএমএল। দলটি এক জন প্রার্থী দিয়ে ২ হাজার টাকা নির্বাচনী ব্যয় করেছে।
এছাড়া বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি-সিপিবি ৭৪ জন প্রার্থী দিয়ে ব্যয় করেছে ৩১ লাখ ৫৩ হাজার ৪২০ টাকা। জাতীয় পার্টি-লাঙল ১৭৫ জন প্রার্থী দিয়ে ব্যয় করেছে ৪ লাখ ৫২ হাজার ৫৬০ টাকা। জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জেএসডি ১৯ জন প্রার্থী দিয়ে ব্যয় করেছে ৭০ লাখ ২৪ হাজার ৭০০ টাকা, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল-বাসদ ৪৪ জন প্রার্থী দিয়ে ৩ লাখ ৬৬ হাজার ৮৪৬ টাকা ব্যয় করেছে।
গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ অনুযায়ী, যে দল থেকে সর্বোচ্চ ৫০ জন প্রার্থী নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন, সে দল সর্বোচ্চ ৭৫ লাখ টাকা ব্যয় করতে পারে। সর্বোচ্চ ১০০ প্রার্থীর জন্য দেড় কোটি টাকা করা যায়। সর্বোচ্চ ২০০ প্রার্থীর জন্য তিন কোটি টাকা এবং ২০০ বেশি প্রার্থী দিলে সংশ্লিষ্ট দল সর্বোচ্চ সাড়ে চার কোটি টাকা ব্যয় করতে পারে।
আরপিও’র ৪৪ সিসিসি (৫) দফা অনুযায়ী, কোনো রাজনৈতিক দল ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচনী ব্যয়ের হিসাব জমা না দিলে ৩০ দিন সময় দেবে নির্বাচন কমিশন। এই ত্রিশ দিনের মধ্যে কোনো দল হিসাব দিতে ব্যর্থ হলে কমিশন চাইলে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করে আরও ১৫ দিন সময় দিতে পারে। এই ১৫ দিনের মধ্যেও হিসাব জমা না দিলে কমিশন সংশ্লিষ্ট দলের নিবন্ধন বাতিল করে দেওয়ার বিধান রয়েছে।
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নেওয়া ৩৯টি দলের মধ্যে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ও ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি-ন্যাপ ছাড়া অন্য কোনো দল নির্বাচনী ব্যয়ের হিসাব সময়মতো দেয়নি। তাই বিএনপি-জাতীয় পার্টি-জাপাসহ ৩৭টি দলকে সতর্ক করেছিল নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
সে অনুযায়ী, দলগুলো পরবর্তী একমাসের মধ্যে নির্বাচনী ব্যয়ের হিসাব জমা দেয়। দলগুলোর তথ্য একীভূত করে তা প্রকাশ করে নির্বাচন কমিশন।
বাংলাদেশ সময়: ২০৫০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৯, ২০১৯
ইইউডি/জেডএস