ইসি প্রণীত প্রবাসীদের ভোটার জন্য বিধিমালায় অন্তত আটটি তথ্য বেশি দেওয়ার বিধান রাখা হয়েছে। এজন্য বিধিমালায় সংযোজন করা হয়েছে ফরম-২(ক)।
প্রবাসীদের ভোটার করার আইন দেখতে ক্লিক করুন
জাতীয় পরিচয়পত্র নিবন্ধন অনুবিভাগের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ সাইদুল ইসলাম বাংলানিউজকে জানান, চলতি সপ্তাহেই অনলাইনে আবেদনের জন্য একটি পৃথক সার্ভার তৈরি করে ঘোষণা দেওয়া হবে। যেখানে যুক্তরাজ্য, দুবাই, সিঙ্গাপুর ও সৌদি আরবের প্রবাসীরা এ সুযোগ পাবেন। পরবর্তীতে সুযোগ পাবেন কানাডা ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত বাংলাদেশিরা।
সেই কার্যক্রমের অংশ হিসেবেই সম্প্রতি ইসি সচিব মো. আলমগীর স্বাক্ষরিত ভোটার তালিকা প্রণয়ন বিধিমালা সংশোধনের গেজেট প্রকাশ করা হয়েছে।
এতে বলা হয়েছে-বসবাসরত দেশে ইসির স্থাপিত রেজিস্ট্রেশন কেন্দ্রে গিয়ে কিংবা অনলাইনে ভোটার হওয়ার আবেদন করতে পারবেন। এক্ষেত্রে তিনি সর্বশেষ যে এলাকায় বসবাস করেছেন বা নিজের বা বাবার বাড়ির ঠিকানায় ভোটার হওয়ার জন্য আবেদন করতে হবে। পরবর্তীতে তার আবেদন সেই এলাকার উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তার মাধ্যমে তদন্তের পর দশ আঙ্গুলের ছাপ, চোখের আইরিশের প্রতিচ্ছবি ও ছবি তোলে তাকে এনআইডি সরবরাহ করা হবে। এর আগের রেজিস্ট্রেশন কেন্দ্রে ও ইসির ওয়েবসাইটে দাবি-আপত্তির জন্য তালিকা দেওয়া হবে। এ সময়ের মধ্যে কোনো ভুল থাকলে সেটাও সংশোধন করা যাবে।
প্রবাসীদের ফরম পূরণের ক্ষেত্রে দেখা যায়, পিতার নাম ও মাতার নাম ইংরেজি ও বাংলায়, বসবাসরত দেশের নাম, জিপ কোড, বাসা ও হোল্ডিং নম্বর, স্টেট বা প্রোভিঞ্চ, ফোন নম্বর, শনাক্তকারী ব্যক্তির নাম প্রভৃতি তথ্য বেশি দিতে হবে। এছাড়া পাসাপোর্ট নম্বর, টিআইএন নম্বরও দিতে হবে।
দেশে বসবাসরতদের জন্য পিতার নাম বা মাতার নাম বাংলা কিংবা ইংরেজী যে কোনো একটায় লিখলেই হয়। ফরম-২ তে সেভাবে ঘর করা আছে। পাসপোর্ট নম্বর ও টিআইএন না দিলেও চলে, কেননা সেখানে ‘যদি থাকে’ লেখা রয়েছে।
এছাড়া দেশের বসবাসরতদের জন্য ফরমে স্বাক্ষর করতে হয় শনাক্তকারী ব্যক্তির তথ্যের আগেই। আর নামও উল্লেখ করতে হয় না। কিন্তু প্রবাসীদের বেলায় স্বাক্ষর করতে হবে শনাক্তকারী ব্যক্তির তথ্য দেওয়ার পর। অর্থাৎ প্রবাসীদের ফরমে শনাক্তকারীর নাম, এনআইডি নম্বর ও স্বাক্ষর দিতে হবে।
এ বিধানের বলে অনেক প্রবাসী ঝামেলায় পড়বেন বলেও মনে করছেন। তাদের মতে, বিদেশে অবস্থানের সময় পরিচিত লোক পাওয়াই তো মুশকিল। সেখানে কে শনাক্ত করবে, এটি একটি ঝামেলার বিষয় হয়ে দাঁড়াবে। যেহেতু স্বাক্ষর করা লাগবে, তাই শনাক্তকারী হিসেবে দেশে অবস্থানরত কারও তথ্যও দেওয়া যাবে না। তাই বিষয়গুলো নিয়ে নির্বাচন কমিশনের আরও খোলাসা করা উচিত।
ইসি কর্মকর্তারা বলছেন, যেহেতু অনলাইনে আবেদন নেওয়া হবে, তাই ফরম শনাক্তকারীর কাছে পাঠিয়ে স্বাক্ষর নিয়ে স্ক্যান করে সেটাও দেওয়া যাবে। আবার প্রবাসের যে কমিউনিটির সঙ্গে বসবাস করা হয়, তাদের কেউ শনাক্ত করলেও হয়ে যাবে।
ইসির এনআইডি মহাপরিচালক এ বিষয়ে বলেছেন, আমরা আমাদের নাগরিকের দোড়গোরায় সেবা পৌঁছে দেওয়া লক্ষ্যে কাজ করছি। তাদের সুবিধার জন্যই আমাদের এই উদ্যোগ। তাদের সমস্যা মাথায় রেখেই আমরা সকল কিছু সম্পন্ন করছি।
২০০৮ সালের নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পূর্বে এটিএম শামসুল হুদার নেতৃত্বাধীন নির্বাচন কমিশন ছবিযুক্ত ভোটার তালিকা প্রণয়ন করেন। যার ভিত্তিতেই পরবর্তীতে ভোটারদের জাতীয় পরিচয়পত্র দেওয়া হচ্ছে। গড়ে তোলা হয় এনআইডি তথ্য ভাণ্ডার। বর্তমানে ৫০টির বেশি সংস্থা-প্রতিষ্ঠান এ তথ্যভাণ্ডার থেকে ব্যক্তির পরিচয় নিশ্চিত হয়ে নিচ্ছে। এতে অপরাধী চিহ্নিত করণসহ বহুমুখী সমস্যা সমাধান সহজ হয়ে গেছে। এছাড়া সহজেই মিলছে নাগরিক সেবা।
বাংলাদেশ সময়: ১৩৫৫ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৩, ২০১৯
ইইউডি/ওএইচ/