ইসি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এনআইডি ছাড়া অনেক প্রয়োজনীয় নাগরিক সেবাই পাওয়া যায় না। তাই যাদের এনআইডি নেই, সেবা পাওয়া সুবিধার্থে কাজী রকিবউদ্দীন আহমদের নেতৃত্বাধীন কমিশন তাদের আপাতকালীন পরিচিতি বিবরণ সরবরাহের প্রচলন করেছিল।
২০১২ সালের পর থেকে ভোটার তালিকাভুক্ত হওয়া ৪৭ লাখ নাগরিকের জন্য এ সেবা চালু করা হয়েছিল। তবে সব ভোটারই এ পরিচিতি বিবরণ নিতে পারতেন। এর ফলে যারা এনআইডি সংশোধন বা হারানো কার্ড উত্তোলনের জন্য আবেদন করতেন, তারাও আপাতকালীন সেবা নিতে পারতেন নিরবিচ্ছিন্নভাবেই।
এ বিবরণ পাওয়া যেত ইসির ওয়েবসাইটে ভোটার নিবন্ধন ফরম নম্বরসহ সুনির্দিষ্ট কিছু তথ্য দিয়ে নিবন্ধন সম্পন্ন করার পর।
কে এম নূরুল হুদার আমলে এসে সেটি এখন বন্ধ করা হলো নতুনদের জন্য। তবে পুরোনো ভোটারদের জন্য সুযোগটি আগের মতোই আছে। বিষয়টি ইসির ওয়েবসাইটেও জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে- ১৯৯৮ সালের ১ জানুয়ারির পর যারা ভোটার হয়েছেন, তারা নিবন্ধন ফরম নম্বর দিয়ে কোনো তথ্য দেখতে পারবেন না। অর্থাৎ ওয়েবসাইটের নিজের নামে কোনো নিবন্ধন করতে পারবেন। আর সেটা না পারার অর্থই হচ্ছে পরিচিতি বিবরণ আর মিলছে না নতুনদের। এক্ষেত্রে ভোটার তালিকায় যুক্ত হলেও চূড়ান্ত তালিকায় যুক্ত না হলে কিংবা এনআইডি নম্বর না জানলে সেটি আর সম্ভব নয়।
কর্মকর্তারা বলেছেন, পরিচিতি বিবরণ সরবরাহ করে কিছু অসুবিধার সম্মুখীন হতে হয়েছিলো পূর্বে। কেননা, এটা চালু থাকলে নিবন্ধন ফরমের নম্বর দিয়েই অনেকে পরিচয় বিবরণী প্রিন্ট নিতেন। যেখানে নাম, পিতা-মাতার নাম, এনআইডি নম্বর আর ঠিকানা থাকতো। কিন্তু চূড়ান্ত তালিকায় অন্তর্ভূক্ত হওয়ার পর সেই ব্যক্তির এনআইডি নম্বর পরিবর্তন হয়। আর এ ঝামেলা এড়াতেই এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
তবে নতুন ভোটাররা মনে করছেন, এটা একেবারে বন্ধ না রেখে ভোটার তালিকা হালনাগাদ জানুয়ারিতে চূড়ান্ত করার পর এটা চালু রাখা উচিত। যাতে এনআইডি হাতে পাওয়ার আগে সেবা পেতে সুবিধা হয়। অনার্স প্রথম বর্ষের ছাত্র শরমীন নীলা বলেন-ভোটার হয়েছি। ছবি তোলে নিবন্ধন সম্পন্ন করেছি। কিন্তু চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ পাবে জানুয়ারির শেষে। তারপর এনআইডি কবে পাবো ঠিক নেই। তাই সে সময়টা পরিচিতি বিবরণ থাকলে অন্তত কাজটা করা যাবে।
২০০৮ সালের নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার এটিএম শামসুল হুদার নেতৃত্বাধীন নির্বাচন কমিশন ছবিযুক্ত ভোটার তালিকা প্রণয়ন করেন। যার ভিত্তিতেই পরবর্তীতে ভোটারদের জাতীয় পরিচয়পত্র দেওয়া হচ্ছে। গড়ে তোলা হয় এনআইডি তথ্য ভাণ্ডার। বর্তমানে ৫০টির বেশি সংস্থা-প্রতিষ্ঠান এ তথ্যভাণ্ডার থেকে ব্যক্তির পরিচয় নিশ্চিত হয়ে নিচ্ছে। এতে অপরাধী চিহ্নিতকরণসহ বহুমুখী সমস্যা সমাধান সহজ হয়ে গেছে। এছাড়া সহজেই মিলছে নাগরিক সেবা।
ইসির সার্ভারে বর্তমানে ১০ কোটি ৪২ লাখ নাগরিকের তথ্য আছে। যাদের অনেকে এখনও পরিচয় বিবরণী দিয়ে কাজ সারছেন।
বাংলাদেশ সময়: ০৯০০ ঘণ্টা, অক্টোবর ৩০, ২০১৯
ইইউডি/ওএইচ/