ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ০২ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

নির্বাচন ও ইসি

বিশেষ মহল নির্বাচনের পরিবেশ নষ্ট করছে: ইশরাক হোসেন

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০২০১ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৩, ২০২০
বিশেষ মহল নির্বাচনের পরিবেশ নষ্ট করছে: ইশরাক হোসেন সংবাদ সম্মেলনে কথা বলছেন বিএনপি মনোনীত মেয়র পদপ্রার্থী ইশরাক হোসেন। ছবি: বাংলানিউজ

ঢাকা: একটি বিশেষ মহল থেকে সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ ক্রমেই বিনষ্ট করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি) নির্বাচনে বিএনপি মনোনীত মেয়র পদপ্রার্থী ইশরাক হোসেন।

রোববার (১২ জানুয়ারি) সন্ধ্যা ৭টায় গোপীবাগের নিজ বাসায় সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব অভিযোগ করেন।

ইশরাক হোসেন বলেন, অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ একটি নির্বাচন নগরবাসীর কাম্য।

এজন্য সবার জন্য সমান সুযোগ, নিরপেক্ষ প্রশাসন ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশ অপরিহার্য। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য যে, রোববার সূত্রাপুর ও কোতোয়ালি থানার বিভিন্ন ওয়ার্ডে আমার নির্বাচনী প্রচারণা ও গণসংযোগে কয়েকদফা সন্ত্রাসীরা হামলা হয়েছে। একইসঙ্গে আমার কর্মীরা পুলিশি বাধা ও আটকের শিকার হন।

তিনি বলেন, ঢাকা জজকোর্ট এলাকা থেকে দুপুরে প্রচারণা শুরু করে তাঁতীবাজার, শাখারীবাজার হয়ে নয়াবাজারে মধ্যাহ্ন বিরতি দেওয়া হয়। বিরতির পর সেখান থেকে পুনরায় প্রচারণার সময় পুলিশ অহেতুক আমাদের কয়েকজন কর্মীকে হয়রানি করতে থাকে। সে সময় আমি সরাসরি গিয়ে হস্তক্ষেপ করায় পুলিশ নিবৃত হয়। কিন্তু গণসংযোগ চালিয়ে আমি সামনে এগিয়ে গেলে পেছন থেকে আমার চারজন কর্মীকে আটক করে। এ খবর শোনামাত্র আমি বংশাল থানায় যাওয়ার উদ্যোগ নেই। কিন্তু তখন পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয় যে, কাউকে আটক করা হয়নি। সংবাদ সম্মেলনে একজন আহত কর্মী।  ছবি: বাংলানিউজইশরাক বলেন, এদিকে ওয়ারী থানার বলধা গার্ডেন এলাকায় জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দলের পাঁচজন কর্মীকে পুলিশ আটক করে। আটককৃতরা হলেন,  আরিফ, সুমন, জুয়েল, বাবু ও সেলিম। ধানের শীষ প্রতীকের পোস্টার লাগানোর সময় পুলিশ তাদের আটক করে। পরে আমি সেখানে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেই। এর পরপরই পুলিশ তাদের ছেড়ে দেয়।

তিনি আরও বলেন, হাজারীবাগ পার্কের সামনে থেকে আমার প্রচার কাজ চালানোর সময় স্থানীয় আওয়ামী লীগ কর্মীরা রিকশার গতিরোধ করে দুইজন কর্মীকে মারধর করে মাইক ও মাইকের সরঞ্জাম রেখে দেয় এবং পুলিশে দেওয়ার হুমকি দেয়। একই সময় ৩৮ নম্বর ওয়ার্ডের ৩ নম্বর যোগীনগর রোডে সংরক্ষিত মহিলা আসনের প্রার্থী মেহেরুন নেসার নির্বাচনী ক্যাম্পে হামলা চালানো হয়। এ হামলায় শ্রমিক দলের ওয়ার্ড সভাপতি আব্দুস সালাম গুরুতর আহত হয়।

ইশরাক হোসেন আরও বলেন, ৬২ নম্বর ওয়ার্ডের নয়ানগর এলাকার যাত্রাবাড়ী থানার স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা ইয়ামিন, ইয়াছিন ও ইমনকে ধানের শীষের পক্ষে পোস্টার লাগানোর কারণে বাসা থেকে ডেকে নিয়ে মারধর করা হয়। কবি নজরুল সরকারি কলেজ ছাত্রদলের সিনিয়র সহ-সভাপতি এহসান মামদুদ, নিখিল চন্দ্র শ্রাবণ ও সিরাজ ধানের শীষের পক্ষে গণসংযোগ শেষে গোপীবাগ আসার পথে যোগীনগর এলাকায় স্থানীয় যুবলীগ কর্মীরা হামলা করে। এতে তারা গুরুতর আহত হয়।

বিএনপির ঢাকা দক্ষিণের প্রার্থী আরও অভিযোগ করেন, ২৭ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী সাহিদা মোর্শেদ-এর প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগের প্রার্থী ড. তামিম ও সাবেক ছাত্রলীগ নেতা রাকিবসহ অন্যরা প্রচারণা না করার হুমকি এবং তার বাসায় গিয়ে নেতাকর্মীদের দীর্ঘ পাঁচ ঘণ্টা আটকে রাখে। নূরফতে আলী লেনে বিএনপি সমর্থিত ধানের শীষ ও লাটিম মার্কার প্রচারণাকালীন বেলা সাড়ে ১২টার দিকে আওয়ামী লীগ প্রার্থীর নেতৃত্বে পুলিশসহ তার নেতাকর্মীদেরকে নিয়ে সাহিদা মোর্শেদ-এর প্রচারণা বাধা দেয় এবং ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতির চশমা নিয়ে তাকে লাঞ্ছিত করে।

আওয়ামী লীগ কর্মী পাভেল ও রনি ৪১ নম্বর ওয়ার্ডের ২৩ নম্বর ওয়ারী স্ট্রিটের সামনে থেকে ধানের শীষের পক্ষে মাইকিং করার সময় মাইক ভাঙচুর করে এবং জুয়েলকে মারধর করে আওয়ামী লীগ অফিসে নিয়ে যায়।

তিনি বলেন,  শনিবার সন্ধ্যায় আমার গোপীবাগের বাসার গলিতে যুবলীগের কর্মীরা মিছিল নিয়ে আসে এবং উস্কানিমূলক স্লোগান দিতে থাকে। এ সময় আমার কর্মীদের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়লে আমি নিচে নেমে এসে সবাইকে নিবৃত করে ভেতরে চলে যাই। পরবর্তীতে আবারও তারা উস্কানিমূলক স্লোগান ও বক্তব্য দিতে থাকে। উপস্থিত সমর্থকদের ধাওয়ার মুখে যুবলীগ সন্ত্রাসীরা পালিয়ে যাওয়ার সময় ঢিল মেরে দুটি গাড়ির গ্লাস ভাঙচুর করে এবং তাদের হাতে আমার একজন কর্মী আহত হয়।

সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ইশরাক হোসেন বলেন, সম্প্রতি আমার প্রতিপক্ষ মেয়র পদপ্রার্থী সম্প্রীতির কথা বলেছেন, কিন্তু এটাই কি সম্প্রীতির নমুনা? যদি তিনি সত্যিই সম্প্রীতি চান, তাহলে আজ এখন থেকেই এ ধরনের হামলা বন্ধ করার উদ্যোগ নেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি।

সংবাদ সম্মেলনে একজন আহত কর্মীকে সামনে নিয়ে আসা হয়। এ সময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান নিতাই রায় চৌধুরী, যুগ্ম-মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন, এমরান সালেহ প্রিন্স, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস ‍সালাম আজাদ, শহীদুল ইসলাম বাবুল, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সাধারণ সম্পাদক কাজী আবুল বাশার, বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য অর্পনা রায় প্রমুখ।

বাংলাদেশ সময়: ২০৫৬ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১২, ২০২০
এমএইচ/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।