ঢাকা: নির্বাচন কমিশনের (ইসি) যুগ্ম সচিব আবুল কাসেম নতুন কমিশন নিয়োগের আগ মুহূর্তে পদত্যাগ করেছেন। আর এই নিয়েই আলোচনা হচ্ছে নির্বাচন কমিশনার পদে নিয়োগ পাচ্ছেন তিনি।
তার সহকর্মীরা বলছেন, ১৪ ফেব্রুয়ারির মধ্যে গঠন হবে নতুন কমিশন। সার্চ কমিটি ইতোমধ্যে দলগুলোর কাছে যোগ্য ব্যক্তিদের নাম চেয়েছে। আর ব্যক্তিগতভাবে কেউ নিজেকে যোগ্য মনে করলেও নিজ নিজ নাম প্রস্তাব করার জন্যও বলেছে।
এই প্রক্রিয়া যখন চলছে ঠিক সেই মুহূর্তে এবং হঠাৎ করেই আবুল কাসেমের পদত্যাগের বিষয়টি সামনে আসায় আলোচনার সৃষ্টি হয়েছে যে, তিনি নির্বাচন কমিশনার হচ্ছেন।
ইসির নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কর্মকর্তারা বলছেন, নির্বাচন ব্যবস্থাপনা শাখায় দীর্ঘদিন ধরে কাজ করেছেন আবুল কাসেম। এই সুবাদে সরকারের শীর্ষ পর্যায়ে তার ভালো যোগাযোগ আছে। এজন্য নতুন কমিশন নিয়োগের আগ মুহূর্তে পদত্যাগ করেছেন। এবং নির্বাচন কমিশনার হওয়ার জন্য লবিং করছেন।
এ বিষয়ে আবুল কাসেমের কাছে জানাতে চাইলে তিনি বলেন, ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে পদত্যাগ করেছি। আমি একজন যুগ্ম সচিব। আমার ওপরে কত সচিব রয়েছেন।
ইসির অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ বলেন, গত ৩ ফেব্রুয়ারি আবুল কাশেম পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন। ব্যক্তিগত কারণ উল্লেখ করেছেন পদত্যাগ পত্রে। অবসরে যাওয়ার পর তিনি চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ পেয়েছিলেন। আর চুক্তিটি হয়েছিল জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে। এজন্য তার পদত্যাগ পত্রটি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। তারা পদত্যাগপত্র গ্রহণ করেছে কিনা, সে চিঠি এখনো আসেনি।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ আইন-২০২২- এ বলা হয়েছে- নির্বাচন কমিশনার হতে হলে কমপক্ষে ২০ বছর চাকরির অভিজ্ঞতা থাকতে হবে। এছাড়া কোনো লাভজনক পদে থাকাকালে নির্বাচন কমিশনার হতে পারবেন না।
ইসির যুগ্ম সচিব পদটিও লাভজনক। আর আবুল কাসেমের কমপক্ষে ২০ বছর চাকরির অভিজ্ঞতা রয়েছে। এদিক থেকেই দুই আর দুই, চার মিলিয়ে চলছে আলোচনা।
আবুল কাসেম ১৯৯০ সালের ২৪ মার্চ জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা হিসেবে নির্বাচন কমিশনে কর্মজীবন শুরু করেন। এরপর ধারাবাহিক পদোন্নতি পেয়ে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে ২০১৮ সালে যুগ্ম সচিব পদে অধিষ্ঠিত হন। পরবর্তীতে ২০২০ সালে তিনি অবসরে গেলে ইসির চাহিদা মোতাবেক তাকে সরকার দুই বছরের জন্য চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেয়। ওই বছর ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তার দায়িত্ব পালন করেন আবুল কাসেম।
সরকারির চাকরির পাশপাশি তিনি বিভিন্ন ব্যবসার সঙ্গেও জড়িত ছিলেন বলে জানিয়েছে তার সহকর্মীরা। স্কলারস স্কুল অ্যান্ড কলেজের সঙ্গেও রয়েছে তার সম্পৃক্ততা।
বাংলাদেশ সময়: ১৬২৮ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৮, ২০২২
ইইউডি/এএটি