ঢাকা, শুক্রবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

নির্বাচন ও ইসি

ভোট স্থগিত হওয়ায় জনগণ হতবাক: তথ্যমন্ত্রী 

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩৪২ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৩, ২০২২
ভোট স্থগিত হওয়ায় জনগণ হতবাক: তথ্যমন্ত্রী  কথা বলছেন তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।

ঢাকা: গাইবান্ধা ৫ আসনের ভোট স্থগিত হওয়ায় জনগণ হতবাক হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।

বৃহস্পতিবার (১৩ অক্টোবর) দুপুরে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।

অবশ্য এই মন্তব্য মন্ত্রী বা আওয়ামী লীগ নেতা হিসেবে নয়, একজন সাধারণ মানুষ হিসেবে করেছেন বলে জানান তিনি।  

তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেন, ব্যক্তি হিসেবে বলছি। ইসির সিদ্ধান্তে এটা প্রমাণ হয়েছে এতে সরকারের ভূমিকা নেই। তাদের সিদ্ধান্তই সবার ওপরে। এর মাধ্যমে প্রমাণ হয়েছে যে বিএনপি যে তত্ত্বাবধায়কের কথা বলে সেটার প্রয়োজন নেই। তারা যে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন সেখানকার ভোটার এই সিদ্ধান্তে হতবাক হয়েছেন। কোথাও কোনো গণ্ডগোল হয়নি। কোনো অভিযোগ ছিল না। সহিংসতার কোনো ঘটনা হয়নি।  

তিনি বলেন, ইসি ৫শ দূরে বসে সিসি ফুটেজ দেখে সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ওটা আসলে কতটা কারেক্ট ফুটেজ দিচ্ছিল সেটা বড় প্রশ্ন। ৯৮টা কেন্দ্রের প্রিজাইডিং অফিসারের রিপোর্ট আছে, ভোট সুষ্ঠু হয়েছে, তারা বলছেন। ইসির সিদ্ধান্ত প্রচণ্ড প্রশ্নবিদ্ধ বলে জনগণ বলছেন।

তথ্যমন্ত্রী বলেন, আমি দল হিসেবে নয়, মন্ত্রী হিসেবেও নয়, একজন ব্যক্তি হিসেবে কথা বলছি। প্রথমত নির্বাচন কমিশনের এই সিদ্ধান্তের মাধ্যমে এটিই প্রমাণিত হয়েছে যে নির্বাচনে সব সময় নির্বাচন কমিশনের অধীনেই হয়। সরকারের সেখানে ভূমিকা নেই। সরকার শুধু ফ্যাসিলিটেটরে ভূমিকা পালন করে। নির্বাচন কমিশনই সর্বেসর্বা, তাদের সিদ্ধান্তই সবার ওপরে। এই সিদ্ধান্তের মাধ্যমে এটিই প্রমাণিত হয়েছে, বিএনপিসহ তারা যে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কথা বলছেন এর কোনো যৌক্তিকতা নেই।  

তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশন যে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, এটি আমিই বলছি না, দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হিসেবেও না মন্ত্রী হিসেবেও বলছি না। সাধারণ জনগণ, সেখানকার ভোটার এবং বুধবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও বিভিন্ন টকশোতে আমি যেটা দেখেছি সেখান থেকে মনে হচ্ছে সাধারণ জনগণ তাদের এ সিদ্ধান্তে হতবাক হয়েছে।

তার মন্তব্যের পেছনের যুক্তি তুলে ধরে হাছান মাহমুদ বলেন, কারণ নির্বাচনী এলাকার কোনো জায়গায় কোনো গণ্ডগোল হয়নি। কোনো অভিযোগ নেই। এছাড়া কোনো পোলিং অফিসার, প্রিজাইডিং অফিসারেরও কোনো অভিযোগ ছিল না। বিন্দুমাত্র সহিংসতার ঘটনা ঘটেনি। নির্বাচন কমিশন ৫শ কিলোমিটার দূরে বসে সিসিটিভি ফুটেজ দেখে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এখন সে ক্যামেরার রেজ্যুলেশন, ইন্টারনেট কানেক্টিভিটি কেমন ছিল সেটি একটি বড় প্রশ্নের ব্যাপার। সেটি একটি দুর্গম এলাকা। এখান থেকে ফুটেজ দেখে.. সেটি আসলে কতটুকু স্বচ্ছ বা সঠিক ফুটেজ দিচ্ছিল দ্যাটস অ্যা বিগ কোশ্চেন।

তথ্যমন্ত্রী বলেন, আমার কাছে প্রিজাইডিং অফিসারের লিখিত রিপোর্ট আছে ৯৮টা কেন্দ্রের, যে ভোট সুষ্ঠু হয়েছে কোনো গণ্ডগোল হয়নি এবং রিটার্নিং অফিসারের নির্দেশে ভোট বন্ধ করেছে। হু ইজ অন দ্য গ্রাউন্ড তিনি বলছেন ভোট সুষ্ঠু ও অবাধ হচ্ছে আর এখানে ৫শ কিলোমিটার দূরে বসে সিসিটিভি দেখে যখন ভোট বন্ধ করা হলো তখন মানুষ শুধু হতবাকই হয়নি, মানুষ বলছে এর পরিপ্রেক্ষিতে নির্বাচন কমিশনের এ সিদ্ধান্ত প্রচণ্ড প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে। এটা আমি বলছি না, জনগণ বলছে, বোদ্ধাজন বলছেন। সেখানে আমাদের প্রার্থী এর প্রতিবাদ জানিয়েছেন।

মন্ত্রী বলেন, ৫৩ কেন্দ্রে ভোটারের বাইরে দেখেছেন বলে তারা বলছেন। সেখানে কেউ চা আনতে গেছে, ভোটাদের হাত ধরে নিয়ে গেছে, প্রিজাইডিং অফিসার হয়তো একটু বের হয়েছেন, সেখানে কার চেহারা কতটুকু বোঝা যাচ্ছে। গাইবান্ধার অজপাড়া গাঁয়ের সিসিটিভি ক্যামেরা কতটুকু রেজুলেশন দিল….। দ্যাটস অ্যা বিগ কোশ্চেন। মানুষ বলছেন, তারা এ সিদ্ধান্তের ফলে নিজেদের বিতর্কিত করেছেন। আমাদের প্রার্থী যেটা বলেছেন সেই ৫৩ কেন্দ্রের ভোট স্থগিত হতে পারতো। বাকিগুলো কেন বাতিল হলো? এ প্রশ্ন কী অযৌক্তিক?

এর আগে, বুধবার (১২ অক্টোবর) সকাল থেকে গাইবান্ধা-৫ আসনে উপ-নির্বাচনে ভোটগ্রহণ শুরু হওয়ার পর বিভিন্ন কেন্দ্রে অনিয়মের অভিযোগ আসতে থাকে। ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম ভোটারের পরিচয় শনাক্তের পর গোপন কক্ষে থাকা ব্যক্তি নৌকা প্রতীতে ভোট দিয়ে দেওয়ার অভিযোগ আসতে থাকে। নির্বাচন কমিশন একাধিকবার এই ব্যক্তিদের ‘ডাকাত’ উল্লেখ করে বলেছেন, ডাকাত ঠেকানোই তাদের চ্যালেঞ্জ। তবে এই ডাকাত ঠেকানো যায়নি। ১৪৫টি কেন্দ্রে স্থাপন করা এক হাজারের বেশি সিসিটিভি ক্যামেরায় ধারণ করা ফুটেজ ঢাকায় বসেই পর্যবেক্ষণ করে নির্বাচন কমিশন। এরপর একে একে ৫১টি কেন্দ্রে ভোট স্থগিত করা হয়।

বাংলাদেশ সময়: ১৩৪২ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৩, ২০২২/আপডেট: ১৫৩৪ ঘণ্টা
জিসিজি/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।