ঢাকা, শুক্রবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

নির্বাচন ও ইসি

যশোরে জেলা পরিষদের নির্বাচন: প্রার্থীর চেয়ে অর্থের গুরুত্ব বেশি

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯৪৩ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৬, ২০২২
যশোরে জেলা পরিষদের নির্বাচন: প্রার্থীর চেয়ে অর্থের গুরুত্ব বেশি

যশোর: যশোরের নিরুত্তাপ জেলা পরিষদের নির্বাচন। নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে বড় কোন প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী না থাকায় সদস্য পদে প্রতিদ্বন্দ্বী নিয়ে উত্তেজনা বাড়ছে।

 

অভিযোগ উঠেছে, সদস্য পদে প্রার্থীরা অনেকেই টাকা ও বিভিন্ন উপঢৌকন দিয়ে ভোট কেনার যুদ্ধে নেমেছেন।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রার্থীরা একে অন্যের বিরুদ্ধে এ বিষয়ে অভিযোগ তুললেও কেউ আনুষ্ঠানিকভাবে নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ করেনি।  

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সদর, ঝিকরগাছা, মণিরামপুর ও শার্শা উপজেলার সদস্য পদগুলোতে প্রতিদ্বন্দ্বিতার সাথে উত্তাপের শঙ্কা রয়েছে। কেননা এই আসনে ভোটে নেমেছেন বড় বড় ব্যবসায়ী, স্থানীয় সংসদ সদস্যের কাছের আত্মীয় ও অনুসারীরা।  

তবে জেলা রির্টানিং অফিসার বলছেন, ‘সুষ্ঠু ভোট গ্রহণের জন্য সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়েছেন তারা। কঠোর নিরাপত্তা ও অবাধ ভোট গ্রহণে যাবতীয় ব্যবস্থা নেবে নির্বাচন কমিশন।

যশোর জেলা নির্বাচন অফিস সূত্রে, যশোরের আট উপজেলায় দুই চেয়ারম্যানসহ ৫১ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন। এর মধ্যে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী সাইফুজ্জামান পিকুল ও বিকল্পধারার মারুফ হোসেন কাজল। ৮টি সাধারণ সদস্য বিপরীতে ৩৭ জন ও ৩টি সংরক্ষিত সদস্য বিপরীতে ১৪ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। ৮টি উপজেলার মধ্যে ৭টি উপজেলা পরিষদে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। বাকি সদর উপজেলার ভোটগ্রহণ হবে যশোর শহরের কালেক্টরেট সরকারি বিদ্যালয়ে। ৮টি কেন্দ্রে ১৬টি বুথে সকাল ৯ থেকে ২টা পর্যন্ত ইভিএমে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।

এদিকে জেলা পরিষদের নির্বাচনে শনিবার (১৫ অক্টোবর) রাতে সব প্রচারণা শেষ হয়েছে। নির্বাচনে জেলা পরিষদের নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে বড় কোন দলের প্রার্থী বা স্বতন্ত্র কোন শক্তিশালী প্রার্থী অংশ না নেওয়ায় চেয়ারম্যান পদে তেমন একটা প্রচারণা হয়নি। এ পদে আওয়ামী লীগের প্রার্থী নিজেই জেলার ইউনিয়নগুলোর চেয়ারম্যান ও সদস্যদের সঙ্গে মতবিনিময় করেছেন। অংশ নেয়নি জেলা আওয়ামী লীগের বেশির ভাগ নেতারা। তবে সদস্য পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে।  

এর মধ্যে যশোর সদর, মণিরামপুর, ঝিকরগাছা, শার্শায় স্থানীয় সংসদ সদস্য আত্মীয় ও তাদের কাছে রাজনীতিক অনুসারী সদস্য পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করায় এগুলো উপজেলায় সদস্য পদে উত্তাপ ও প্রতিদ্বন্দ্বিতার আভাস লক্ষ্য করা গেছে। এমনকি স্থানীয় সংসদ সদস্যরা ও নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন করে ভোট চাইতে দেখা গেছে।  

গত ৮ অক্টোবর যশোর জেলা পরিষদের নির্বাচনে ৭ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য প্রার্থী গৌতম চক্রবর্তীর আপন মামা পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য্য মনিরামপুর উপজেলার ইউপি চেয়ারম্যানদের ডেকে ভাগ্নের পক্ষে নির্বাচনী প্রচারণা চালান। যা পরে আচারণ বিধি লঙ্ঘন অভিযোগে এই ওয়ার্ডের আরেক প্রার্থী শহিদুল ইসলাম রির্টানিং কার্যালয়ে অভিযোগ করেন।  

এছাড়া ঝিকরগাছা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মনিরুল ইসলাম তার অনুযায়ী যুবলীগনেতা রফিকুল ইসলাম বাপ্পীর পক্ষে বিভিন্ন ইউনিয়নের ইউপি সদস্যদের শাড়ি লুঙ্গি দেওয়ার গুঞ্জন উঠেছে। বিয়য়টি নিয়েও এ আসনের প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী জগলু হোসেন রফিকুল ইসলাম বাপ্পীর শাড়ি লুঙ্গি বিতরণের ছবি ফেসবুকে পোস্ট করে সমালচনা করেন।

এছাড়া বিভিন্ন উপজেলায় ইউপি চেয়ারম্যানদের সাইকেল নিয়ে ভোট কেনার গুঞ্জন উঠেছে। তবে এই বিষয়ে কেউ কোন আনুষ্ঠানিকভাবে জেলা রিটার্নিং অফিসে লিখিত বা মৌখিক অভিযোগ দেয়নি।  

এই বিষয়ে জেলা সিনিয়র নির্বাচন অফিসার ও নির্বাচনের সহকারী রির্টানিং অফিসার আনিচুর রহমান বলেন, ভোটগ্রহণের সব প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। প্রতিটি কেন্দ্রে সিসি ক্যামেরা বসানো হয়েছে। রোববার (১৬ অক্টোবর) প্রতিটি কেন্দ্রে নির্বাচনী সরঞ্জাম চলে যাবে। ভোট কেনার বিষয়ে কোনো অভিযোগ পাওয়া যায়নি।

বাংলাদেশ সময়: ০৯৪০ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৬, ২০২২
ইউজি/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।