ব্রাহ্মণবাড়িয়া: ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল-আশুগঞ্জ) উপ-নির্বাচনে বিএনপির বহিষ্কৃত নেতা দলটির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সাবেক উপদেষ্টা উকিল সাত্তার ভূঁইয়ার পক্ষে আওয়ামী লীগের সরাসরি অবস্থান নিয়ে ক্ষোভ উগড়ে দিলেন নির্বাচনে জাতীয় পার্টির প্রার্থী আব্দুল হামিদ ভাসানী।
হামিদ ভাসানী বলেন, চল্লিশ বছর ধরে যে লোকটি বঙ্গবন্ধুর আদর্শের বিরুদ্ধে কথা বললেন, তারা (আওয়ামী লীগ) আজ তাকে নিয়েই নাচছে।
আশুগঞ্জ উপলোর বিভিন্ন ইউনিয়নে নির্বাচনী প্রচারণা শেষে শুক্রবার রাতে আশুগঞ্জ প্রেসক্লাবে সাংবাদিকদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
ভাসানী বলেন, গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতা রক্ষায় সরকারের জন্য সবচেয়ে বড় নিয়ামক জাতীয় পার্টি। মহাজোটের শরীকদল হয়েও বিরোধী দলের দায়িত্ব নিয়ে সংসদকে কার্যকর রেখেছে জাতীয় পার্টি। অথচ এখানকার আওয়ামী লীগ উল্টো পথে হাঁটছে।
নিজের জয়ের আশাবাদ ব্যক্ত করে ভাসানী বলেন, আশুগঞ্জ-সরাইলের ব্যাপক অর্থনৈতিক গুরুত্ব থাকলেও আমরা বরাবরই উন্নয়ন বঞ্চিত। আমাদের বয়োজ্যৈষ্ঠ নেতা উকিল আব্দুস সাত্তার বারবার এমপি-মন্ত্রী হয়েও এলাকার কাঙ্ক্ষিত উন্নয়নে ভূমিকা রাখতে পারেনি। তাই মানুষ পরিবর্তন চায়। এছাড়া আশুগঞ্জ-সরাইলের মানুষ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও পল্লীবন্ধু হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদকে ভালবাসেন। তারা লাঙ্গল প্রতীকে ভোট দিতে চায়। সুষ্ঠু নির্বাচন হলে লাঙ্গল বিপুল ভোটে বিজয়ী হবে।
এ সময় স্থানীয় আওয়ামী লীগের ওপর ক্ষোভ ঝাড়েন এ জাপা প্রার্থী।
তিনি বলেন, স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাদের প্রচারণায় মানুষ ভোটকেন্দ্রে যেতে নিরুৎসাহিত হচ্ছে। তারা অবলিলায় বক্তৃতা বিবৃতিতে বলে বেড়াচ্ছেন, সাত্তার সাহেব আবার এমপি হয়েই গেছেন। তাহলে আর ভোটের কী প্রয়োজন রয়েছে? ঘোষণা দিয়ে দিলেই হয়।
ভাসানী হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, নির্বাচনে কোনোরূপ অনিয়ম বা ইঞ্জিনিয়ারিং করলে নির্বাচন কমিশন প্রশ্নবিদ্ধ হবার পাশাপাশি সরকারকেও দায় নিতে হবে।
মতবিনিময় সভায় আশুগঞ্জ উপজেলা জাতীয় পার্টির সাধারণ সম্পাদক মেরাজুল হক সিকদার, সাংগঠনিক সম্পাদক কামাল হোসেন মুন্সী, উপজেলা জাপা নেতা জামাল আহমেদ, উজ্জ্বল মিয়াসহ জাতীয় পার্টির স্থানীয় নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
গত ১১ ডিসেম্বর দলীয় সিদ্ধান্তে জাতীয় সংসদ থেকে পদত্যাগ করেন বিএনপির প্রবীণ রাজনীতিবিদ উকিল আব্দুস সাত্তার। তবে এর কিছুদিনের মধ্যেই তিনি দল থেকে পদত্যাগ করেন ওই আসনেই আবারও স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নেন। এতে করে সর্বত্র আলোচনার শুরু হয়।
এদিকে আওয়ামী লীগ উকিল সাত্তারকে ভোটের মাঠে জিতিয়ে আনতে মরিয়া হয়ে উঠেছে। কেন্দ্রসহ জেলা পর্যায়ের নেতারা আব্দুস সাত্তার সমর্থক গোষ্ঠীর ব্যানারে বিভিন্ন এলাকায় কর্মীসভা করেছে। উকিল সাত্তারের পক্ষে কাজ করার আহ্বান জানান তারা।
তবে জেলা আওয়ামী লীগের দাবি একজন সৎ ও ভাল মানুষ হিসেবে এই আসনের ৫ বারের সংসদ সদস্য উকিল সাত্তারকে সমর্থন জানিয়েছে ক্ষমতাসীন এই দলটি।
বাংলাদেশ সময়: ১৮২৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৮, ২০২৩
এসএএইচ