ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৭ রমজান ১৪৪৫

নির্বাচন

ভোটে হেরে হিরো আলম বললেন ‘মানি না, আদালতে যাব’ 

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০১৩০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২, ২০২৩
ভোটে হেরে হিরো আলম বললেন ‘মানি না, আদালতে যাব’  সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলছেন হিরো আলম

বগুড়া: ভোট গণনায় অনিয়মের অভিযোগ তুলে বগুড়া-৪ আসনের উপ-নির্বাচনের ফল প্রত্যাখ্যান করেছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী আশরাফুল আলম ওরফে হিরো আলম। বুধবার (১ ফেব্রুয়ারি) রাত ১১টার দিকে সদর উপজেলার এরুলিয়া এলাকায় নিজ বাসায় সাংবাদিকদের এ কথা জানান হিরো আলম।

 

হিরো আলম অভিযোগ করেন, সবাই বলেছেন আমি পাস করেছি। ভোটাররাও ভোট দিয়েছেন। আমার এত ভোট গেল কই? ফল ঘোষণার আগেই আওয়ামী লীগের লোকজন বলছিলেন, মশাল জিতে গেছে, এখন শুধু আনুষ্ঠানিক ঘোষণা বাকি। আওয়ামী লীগের লোকজনও আমাকে ভোট দিয়েছেন। দল নয়, আমাকে ভালোবেসে ভোট দিয়েছেন। ভোটগুলো গেল কই? এই ফল আমি মানি না।  

তিনি বলেন, অনিয়মের বিষয়ে এখনো লিখিত বা মৌখিক অভিযোগ দিইনি। তবে ফলের বিরুদ্ধে আদালতে যাব। ১০টি কেন্দ্রের ফল আলাদাভাবে না দিয়ে একসঙ্গে দিয়েছে প্রশাসন। এই কেন্দ্রগুলোতে কত ভোট পেলাম, তা জানানো হলো না আমাকে।

হিরো আলম আরও অভিযোগ করেন, ভোটের পরিবেশ সুষ্ঠু দেখেছি। কিন্তু ফলের জায়গায় গন্ডগোল। ফল পাল্টে দেওয়া হয়েছে। তানসেনের কোনো নাম-গন্ধই ছিল, তার কোনো প্রচারণাও দেখা যায়নি। কিন্তু তাকে পাস করানো হয়েছে। মহাজোটের মশাল মার্কা কোনো কেন্দ্রে ৫০০ ভোট পেলে আমি ২৮ ভোট পাওয়ার প্রশ্নই ওঠে না। সদরের ভোট নিয়েও অভিযোগ রয়েছে। লাহেরি পাড়ায় আমার এজেন্টকে ঢুকতে দেওয়া হয়নি।

তিনি বলেন, কিছু কিছু শিক্ষিত লোক আমাকে মেনে নিতে চায় না। তারা ভাবে আমি পাস করলে দেশের সম্মান যাবে, অনেকের সম্মান যাবে। অফিসারদের লজ্জা হবে যে, হিরো আলমকে স্যার বলে ডাকতে হবে। এসব কারণে আমাকে জিততে দেওয়া হয়নি।

বগুড়া-৪ (কাহালু-নন্দীগ্রাম) ও বগুড়া-৬ (সদর) আসনের উপ-নির্বাচনে হেরে গেছেন আলোচিত স্বতন্ত্র প্রার্থী আশরাফুল আলম ওরফে হিরো আলম। ভোট গণনা শেষে বুধবার (১ ফেব্রুয়ারি) রাত সোয়া ৮টার দিকে বগুড়া-৪ এবং সাড়ে ৯টার দিকে বগুড়া-৬ আসনের ফল জানান রিটার্নিং কর্মকর্তা ও বগুড়া জেলা প্রশাসক সাইফুল ইসলাম।  

এর আগে সকাল সাড়ে ৮টা থেকে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) শুরু হয় ভোটগ্রহণ। চলে বিকেল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত।

বগুড়া-৬ সদর আসনে আওয়ামী লীগের রাগেবুল আহসান রিপু, জাপার নুরুল ইসলাম ওমর, স্বতন্ত্র আব্দুল মান্নানসহ ১১ জন এবং বগুড়া-৪ (কাহালু-নন্দীগ্রাম) আসনে জাসদের রেজাউল করিম তানসেন, স্বতন্ত্র কামরুল হাসান জুয়েল, জাপার শাহীন মোস্তফা কামালসহ ৯ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। তবে দুটি আসনেই স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে ভোটে অংশ নেন হিরো আলম।
 
বগুড়া-৪ (কাহালু-নন্দীগ্রাম) আসনে হিরো আলম অল্প ভোটের ব্যবধানে হেরে গেছেন। এই আসনে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোট প্রার্থী জাসদ নেতা রেজাউল করিম তানসেন বিজয়ী হয়েছেন। মশাল প্রতীক নিয়ে তিনি পেয়েছেন ২০ হাজার ৪০৫ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আশরাফুল আলম ওরফে হিরো আলমের একতারা প্রতীকে পড়েছে ১৯ হাজার ৫৭১ ভোট। মাত্র ৮৩৪ ভোটের ব্যবধানে হারেন তিনি।

তবে বগুড়া-৬ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে উপ-নির্বাচনে অংশ নেওয়া হিরো আলম বিপুল ভোটের ব্যবধানে পরাজিত হন। এই আসনে তিনি ৫ হাজার ২৭৪ ভোট পেয়েছেন। রাগেবুল আহসান রিপু নৌকা প্রতীকে ৪৯ হাজার ৩৩৬ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন।
  
গত বছরের ১০ ডিসেম্বর দলীয় সিদ্ধান্তে বিএনপির সংসদ সদস্যরা পদত্যাগ করায় বগুড়ার দুটি আসন শূন্য হয়ে যায়। এই শূন্য আসনে উপ-নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করার পর থেকেই আলোচনায় ছিলেন আশরাফুল আলম ওরফে হিরো আলম।

বাংলাদেশ সময়: ০১২৩ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১, ২০২৩
আরএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।