ঢাকা, রবিবার, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৮ শাওয়াল ১৪৪৫

নির্বাচন

‘গুমের আশঙ্কা করছি, হয়তো এটা আমার শেষ বক্তব্য’

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫১২ ঘণ্টা, মে ৩, ২০২৩
‘গুমের আশঙ্কা করছি, হয়তো এটা আমার শেষ বক্তব্য’ দুদক কার্যালয় থেকে বের হচ্ছেন কামরুল আহসান রুপন

বরিশাল: গুম হওয়ার শঙ্কায় ভুগছেন বরিশালের সাবেক মেয়র ও বিএনপি নেতা প্রয়াত আহসান হাবিব কামালের ছেলে কামরুল আহসান রুপন।

বুধবার (৩ মে) বেলা সাড়ে ১২ টার দিকে বরিশাল নগরের নবগ্রাম রোডস্থ দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) কার্যালয় থেকে বের হয়ে এ শঙ্কার কথা সাংবাদিকদের জানান তিনি।

আসন্ন বরিশাল সিটি নির্বাচনে (বিসিসি) স্বতন্ত্রপ্রার্থী হিসেবে মেয়র পদে নির্বাচনে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়েছেন রুপন।  

এ বিষয়ে কথা বলতে গিয়ে এ মেয়রপ্রার্থী বলেন, কেউ এই সরকারের বিরুদ্ধে যদি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে চায়, তার বিরুদ্ধে দুদকের মামলা-হামলা হবে, নির্যাতন হবে। আমি গুমের আশঙ্কা করছি, হয়তো বা আপনাদের সামনে আমার এটা শেষ বক্তব্য। পরবর্তী পরিস্থিতি ভয়াবহ। কারণ চাপটা আমার ও আমার পরিবারের ওপর হচ্ছে। এটা স্বাভাবিক চাপ না এবং এ মুহূর্তে এ নিয়ে বলাটাও আমার জন্য কষ্টকর হবে।

তিনি অভিযোগ করে বলেন, পরিস্থিতি বুঝতে পারছি। আওয়ামী লীগের একজন প্রার্থী সরাসরি মাঠে নেমেছেন, প্রচারণা চালাচ্ছেন। অথচ তার জন্য কোনো ধরনের বিধি-নিষেধ নেই। অপরদিকে আমার মতো একজন স্বতন্ত্রপ্রার্থী দুদকের চাপে রয়েছে। যে তথ্য চেয়েছে তাতে আমাদের আতঙ্কগ্রস্ত করে রাখা হয়েছে।

দুদক কার্যালয়ে যাওয়ার কারণ হিসেবে তিনি বলেন, সম্পদের তথ্য চেয়ে দুদক শুধু আমাকেই নয়, আমার মা ও বোনকেও তলব করেছে। তবে তাদের পক্ষে একজন আসলেই হবে বিধায় আমি এসেছি।  এখানে আমার বাবা ও দাদার সময়কার সম্পত্তির হিসেব দিতে বলা হয়েছে।  এটা কোন আইনে দিতে হবে আমি জানি না। আমি ২০০৪ সাল থেকে আয়কর দিয়ে আসছি। এখন আমার ও আমার বাবার জন্মের আগের সম্পত্তির হিসেব দিতে হবে নাকি। আমি যতটুকু পারছি তথ্য দিয়েছি দুদককে। আমার জন্মের আগে সম্পদের বিষয়ে আমার জানা নেই বলেও তাদের অবগত করেছি।

রুপন অভিযোগ করেন, এই সরকার চাচ্ছে না ১৪ দল ব্যতিত কেউ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করুক। কারণ এতে তাদের জনপ্রিয়তার মানদণ্ড কি, সেটা জনসম্মুখে উম্মোচন হবে। জাতীয়তাবাদী বিএনপি পরিবারের সন্তান হিসেবে নিশ্চিন্তে বলতে চাই এই অন্যায় অবিচারের বিরুদ্ধে অবশ্যই আমার দল পাশে থাকবে। তবে এ নিয়ে আমি এখন কিছু বলতে চাচ্ছি না, সময় হলে বলব। দেশ তথা বরিশালের জনগণ এর প্রতিবাদ করবে।

এসময় তিনি দাবি করে, একটি পক্ষ উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে আমাকে হেনস্থা করার অংশ হিসেবেই এই দুদকে তলব কার্যক্রম চালিয়েছে। যাতে সঠিকভাবে নির্বাচনী কার্যক্রম চালাতে না পারি।  

বিএনপি নেতা রুপনের দাবি ও বক্তব্যের বিষয়ে তাৎক্ষণিক দুদকের স্থানীয় কর্মকর্তাদের কারও কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

তবে মোবাইল ফোনে দুদক বরিশাল বিভাগীয় কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মো. আবুল কাইয়ুম হাওলাদার সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, আহসান হাবিব কামালের দেওয়া সম্পদ বিবরণী তথ্যের কিছু বিষয় তথ্যাদি দিতে বলা হয়েছিল। এর জন্যই তাকে ডাকা হয়েছিল এবং তদন্তের স্বার্থে কিছু বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে।

আহসান হাবিব ব‌রিশাল মহানগর বিএন‌পির সা‌বেক সভাপ‌তি ও কেন্দ্রীয় বিএন‌পির সা‌বেক মৎস্যজীবী বিষয়ক সম্পাদক ছিলেন। ২০০২ সালে বরিশাল সিটি করপোরেশন হলে তিনি প্রথম ভারপ্রাপ্ত মেয়র হন। এরপর ২০১৩ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের শওকত হোসেন হিরণকে হারিয়ে মেয়র হন আহসান হাবিব।  এবারের বিসিসি নির্বাচনে তার ছেলে কামরুল আহসান রুপন স্বতন্ত্র পার্থী হতে ইচ্ছুক।

বাংলাদেশ সময়: ১৫০০ ঘণ্টা, মে ০৩, ২০২৩
এমএস/এসএএইচ


 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।