ঢাকা, রবিবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

নির্বাচন

চাঁদপুর-কুমিল্লা থেকে আবু খালিদ

‘ভোটের আগে উন্নয়নের ফুলঝুরি, বাস্তবে শূন্য’

আবু খালিদ, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৪৪ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৪, ২০১৫
‘ভোটের আগে উন্নয়নের ফুলঝুরি, বাস্তবে শূন্য’ ছবি: দেলোয়ার হোসেন বাদল / বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

চাঁদপুর, কুমিল্লা থেকে: ‘এখন তারা (প্রার্থী) রাস্তাঘাটসহ এলাকার উন্নয়নের নানা প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন। প্রতিদিনই হাতে হাত মিলিয়ে সুন্দর সুন্দর কথা বলছেন।

কিন্তু ভোট শেষ হলে উন্নয়ন তো দূরের কথা কারো দেখাই মেলে না’।

কথাগুলো একটানা বলে যাচ্ছিলেন মোশাররফ। তার মুখের কথা কেড়ে নিয়ে শাহবুদ্দিন বললেন, ‘ভোটের আগে প্রুতিশ্রুতির ফুলঝুরি, বাস্তবে শূন্য’। জয়নালকে সমর্থন করলেন পাশে বসা রফিকুল ইসলাম, শাহজাহান, আফজালসহ কয়েকজন।

কুমিল্লা জেলার দাউদকান্দি পৌরসভার ছয় নম্বর ওয়ার্ডের বাজারের একটি চায়ের স্টলে ভোট নিয়ে আড্ডা চলাকালে শনিবার (১৩ ডিসেম্বর) রাত সাড়ে আটটার দৃশ্য এটি।
 
আগামী ৩০ ডিসেম্বরের পৌরসভা নির্বাচন উপলক্ষে গত কয়েকদিন ধরে শুরু হয়েছে চায়ের টেবিলে ভোটের বিভিন্ন বিশ্লেষণ। এ সময়টিতে ভোটাররা তাদের পাওয়া না পাওয়ার হিসাবটাও কষে নিচ্ছেন।
 
দাউদকান্দি পৌরসভার পাঁচ নম্বর ওয়ার্ডের একটি চায়ের স্টলে ভোটের গল্প করছিলেন সালাউদ্দিনসহ কয়েকজন। তাদেরকে প্রার্থীদের কাছে কী প্রত্যাশা প্রশ্ন করা হলে সালাউদ্দিন বলেন, ‘প্রত্যাশা করে করে কী লাভ। তারা তো আর কোনো কাজ করেন না’।
 
তিনি জানান, তার এলাকার রাস্তা অনেক বেশি সরু। ড্রেনের ওপর ঢাকনা নাই। কিছুদিন আগে তার মেয়েও ড্রেন পার হতে গিয়ে আঘাত পেয়েছেন। প্রতিদিনই একাধিক মানুষ পড়ে যান ড্রেনের মধ্য। কিন্তু কেউ তা দেখছেন না।
 
‘জনপ্রতিনিধি যদি জনবান্ধব না হন, তাহলে তাদের সমর্থন করে ভোটে জয়ী করে কী লাভ?’- প্রশ্ন রাখেন নুরুল ইসলাম।
 
তিনি বলেন, ‘গত নির্বাচনে আমাদের বলা হয়েছিল, পুনর্বাসনের জন্য কাজ করে দেবেন। কিন্তু ওই কথা কথাই থেকে গেছে। তারপর আর কিছুই হয়নি। কষ্ট আর ভোগান্তির মধ্য দিয়ে আমাদের দিন পার হচ্ছে’।
 
চাঁদপুর জেলার ফরিদগঞ্জ, মতলব সদর, পৌরসভার বিভিন্ন এলাকা ঘুরেও একই মন্তব্য উঠে এসেছে ভোটারদের মাঝ থেকে।
 
মতলব পৌরসভার এক নম্বর ওয়ার্ডের ভোটার হাসেম জানান, ‘ভোটে জয়লাভ করার পর তারা সব কিছু ভুলে যান। যুগ যুগ ধরে এ অবস্থাই চলছে’।
 
‘কাজ যদি করতে নাই পারবেন, তাহলে মিথ্যা কথা বলে কী লাভ?’- প্রশ্ন রেখে তিনি বলেন, ‘আমরা তো আর জোর করে কাজ চাইছি না। পৌরকর পরিশোধ করি তাই সেবা পাওয়ার অধিকার আমাদের আছে’।

তার কথাকে সমর্থন দেন জাহাঙ্গীর, আসিফ, কাজল, রাজুও।
 
তবে শুধু এই দুই জেলার পৌরসভার বিভিন্ন ওয়ার্ডের ভোটারদেরই এমন মন্তব্য নয়, বাংলানিউজের সরেজমিনে ব্রাহ্মণবাড়িয়া, ফেনী, লক্ষীপুর, নোয়াখালী জেলার বিভিন্ন পৌর ভোটারদের কাছ থেকেও এমন মত পাওয়া গেছে।
 
পৌর ভোটারদের দাবি, তারা পৌরকর পরিশোধ করতে একটুও দ্বিধা করেন না। অথচ তাদের এলাকার কোনো উন্নয়ন হয় না। এ সংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে এসে জনবান্ধব হওয়া উচিত নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের।
 
তবে সাবেক নির্বাচিত ও চলতি নির্বাচনে প্রথম প্রার্থীদের কাছ থেকে পাওয়া গেলো ভিন্ন ভিন্ন মত। সাবেক নির্বাচিতরা বলছেন, এবার সুযোগ দিলে উন্নয়নই হবে তার প্রথম কাজ। আর একবারের মতো সুযোগ চেয়ে উন্নয়নের নানা প্রতিশ্রুতি দিয়ে যাচ্ছেন প্রথমবারের মতো নির্বাচন করতে আসা প্রার্থীরা।
 
বাংলাদেশ সময়: ১৮৩৪ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৪, ২০১৫
একে/এএসআর

** ‘মার্কা নয়, ব্যক্তি দেখে ভোট দিমু’
** ‘লিগ্যাল ভোট হইলেই খুশি’
** সংকটে বিএনপি, ফাঁকা মাঠে আ’লীগের গোল!
** ভোটের আগেই ভোট শেষ, এক লাখ ভোটার বঞ্চিত!
** আ’লীগ ‘দুই’ বিএনপি ‘দুই’, জাপা শূন্য
** মার্কা আইলেই মাঠ গরম
** রসুলপুরে দু’ঘণ্টা আটকে থেকে ছাড়লো কর্ণফুলী এক্সপ্রেস
** জনগণে জনগণে একটা আলোচনা আছে না!

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।