যশোর: যশোরের বাঘারপাড়া পৌরসভা নির্বাচনে সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর পদে লড়ছেন তৃতীয় লিঙ্গের (হিজড়া) সুমি খাতুন (৪৭)।
এর আগে ২০০৪ সালের পৌর নির্বাচনে মাত্র ১৩ ভোটের জন্য জয়ী হতে পারেননি তিনি।
এরই মধ্যে ভোটারদের কাছে জনপ্রিয় হয়ে উঠলেও সুমির প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের সমর্থকরা তাকে হিজড়া বলে হাসি-ঠাট্টা করতে ছাড়ে না বলে অভিযোগ রয়েছে। তারপরও বিজয়ের আশা ছাড়তে নারাজ সুমির সমর্থকরা। তাদের কথা, প্রতিপক্ষ যাই বলুক। বিগত নির্বাচনে তিনি হারলেও ভোটের ব্যবধান ছিল মাত্র ১৩।
আসন্ন নির্বাচনে নিরব বিপ্লবের মাধ্যমে সুমির বিজয় হবে বলে আশাবাদী তারা।
বাঘারপাড়া পৌর এলাকা ঘুরে জানা যায়, সিলেটের সোহাগ গাজী ও জায়েদা বেগম দম্পতির সন্তান সুমি বছর বিশেক আগে যশোরের বাঘারপাড়ায় আসেন। এখানে বসবাসের সুবাদে তিনি পৌর এলাকার সাত নম্বর ওয়ার্ডের ভোটার হন। দীর্ঘদিন একই এলাকায় বসবাস করায় স্থানীয়দের সঙ্গেও তার সখ্য গড়ে উঠেছে।
একপর্যায়ে গত পৌরসভা নির্বাচনে স্থানীয় লোকজনের পরামর্শে সংরক্ষিত মহিলা ওয়ার্ড কাউন্সিলর পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন তিনি। সেইবার মাত্র ১৩ ভোটের ব্যবধানে পরাজিত হন। আসন্ন পৌর নির্বাচনে বাঘারপাড়া পৌরসভার সাত, আট ও নয় সাধারণ ওয়ার্ড নিয়ে গঠিত সংরক্ষিত তিন নম্বর ওয়ার্ডের মহিলা কাউন্সিলর পদে দ্বিতীয়বারের মতো প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন তিনি। সুমির নির্বাচনী এলাকায় দুই হাজার ৩২৫ জন ভোটার রয়েছেন। ভোটারদের সমর্থন আদায়ে রাত-দিন ব্যস্ত সময় পার করছেন সুমি।
স্থানীয়রা বাংলানিউজকে বলেন, ভালো ব্যবহারের কারণে গোটা পৌরবাসীর কাছে সুমির সুনাম রয়েছে।
সুমি বাংলানিউজকে বলেন, একই স্রষ্টার সৃষ্টি মানুষে-মানুষে কোনো বিভেদ থাকতে পারে না। আমি নির্বাচিত হলে জনগণের সুখে-দুঃখে পাশে থেকে সমাজের বৈষম্য দূর করতে নিরলসভাবে কাজ করে যাবো।
জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী সুমির আক্ষেপ, সরকার হিজড়াদের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি দিয়েছে। সেক্ষেত্রে নারী-পুরুষের পাশাপাশি তারা সব নথিপত্রে হিজড়া হিসেবে নিজেদের পরিচয় ব্যবহার করার সুযোগ পাবেন। ২০১৩ সালের নভেম্বর মাসে সরকার এ সংক্রান্ত একটি নীতিমালাও প্রণয়ন করে। তবে এখনও সেই নীতিমালা আলোর মুখ দেখেনি। তাই বাধ্য হয়ে মনোনয়নপত্রে নিজেকে নারী হিসেবে উল্লেখ করেছেন তিনি।
বাংলাদেশ সময়: ১১৫৪ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২০, ২০১৫
এসআই