ধুনট(বগুড়া): বগুড়ার ধুনট পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র, সাধারণ কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর প্রার্থীদের টার্গেট এবার নারী ভোটার। ভোটের প্রচারণা কিংবা নিজেদের প্রতীকে ভোট নিশ্চিত করতে নারী ভোটারদের কাছে ছুটছেন প্রার্থীরা।
এ কারণে কদর বেড়েছে নারী ভোটার ও কর্মীদের। এবার পৌর এলাকায় পুরুষের চেয়ে নারী ভোটারের সংখ্যা বেশি।
ধুনট পৌরসভা ২০০১ সালে গঠিত হয়েছে। ৫.৯২ বর্গ কিলোমিটার আয়তনের পৌরসভার লোকসংখ্যা প্রায় ১৭ হাজার। লোকসংখ্যার ভিত্তিতে পৌরসভাকে ৯টি ওর্য়াডে বিভাজন করা হয়েছে। নতুন তালিকা অনুযায়ী পৌরসভায় ভোটার সংখ্যা ৯ হাজার ৯১৬ জন। এরমধ্যে ৪ হাজার ৯০৬ জন পুরুষ এবং ৫ হাজার ১০ জন নারী ভোটার।
গত ২০০৪ সালে প্রথম নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। সেই হিসেবে এবারের নির্বাচন তৃতীয়। এই নির্বাচনে মেয়র পদে ৩ জন, সাধারণ সদস্য পদে ২৪ জন এবং সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর পদে ১২জন প্রার্থী ভোট যুদ্ধে নেমেছেন। এসব প্রার্থীরা নানা কৌশলে ভোটারদের দ্বারে দ্বারে ঘুরে ভোট ও দোয়া চাইছেন। তবে, এবারের প্রচারণায় নারী কর্মীদের কদর সবচেয়ে বেশি। তারা নিজ নিজ প্রার্থীর পক্ষে প্রতীক নিয়ে বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোট প্রার্থনা করছেন।
প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, নারী কর্মীদের কেউ কেউ প্রচারণার জন্য পারিশ্রমিক পান। আবার অনেকেই আত্মীয়তার সূত্রে ও দলীয় টানে প্রচারণায় নেমেছেন। ভোটের দিন যতই ঘনিয়ে আসছে, প্রচারণায় নারী কর্মীর সংখ্যা ততই বাড়ছে। মেয়র, কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর প্রার্থীদের প্রচারণার কাজ করছেন এসব পরিবারের পুরুষ ও নারীরা।
সরেজমিনে দেখা যায়, নারী কর্মীরা দল বেঁধে ভোটারদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে নিজ প্রার্থীর পক্ষে ভোট চাইছেন। শারীরিক পরিশ্রম কম হওয়ায় মজুরি অন্যান্য কাজের চেয়ে কিছু কম হলেও তারা ভোটের প্রচারণার কাজ বেছে নিয়েছেন বলে জানান নারী কর্মীরা।
মেয়র পদে প্রচারণার কাজে ব্যস্ত জমিলা খাতুন বাংলানিউজকে বলেন, সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত বাড়ি বাড়ি গিয়ে নিজ প্রার্থীর প্রতীক পৌঁছে দিয়ে ভোট চাইছেন। এ জন্য তাকে প্রতিদিন ১০০ টাকা করে দেওয়া হয়।
মেয়র প্রার্থী এজিএম বাদশাহ বাংলানিউজকে জানান, তার নির্বাচনী এলাকায় নিজেদের নারী আত্মীয় স্বজন প্রচারণা চালাচ্ছেন। পাশাপাশি দরিদ্র পরিবারের মেয়েরাও খাবার বাবদ কিছু টাকার বিনিময়ে প্রতীক নিয়ে বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোট চাইছেন। নারী কর্মীরা বাসাবাড়িতে ঢুকে প্রচার কাজ চালাতে পারেন এ জন্য নির্বাচনী প্রচারে নারী কর্মীদের কদর বেড়েছে।
মেয়র প্রার্থী শরীফুল ইসলাম খান বাংলানিউজকে বলেন, দলীয় নারী কর্মীর পাশাপাশি খাবারের বিনিময়ে গরীব নারীরাও প্রার্থীদের পক্ষে নির্বাচনে প্রচারণা চালাচ্ছেন। এ ছাড়া আত্মীয় স্বজন তো আছেই। পৌর এলাকায় সব প্রার্থীই কমবেশি নারী কর্মীদের দিয়ে প্রচার চালাচ্ছেন।
আরেক মেয়র প্রার্থী আলিমুদ্দিন হারুন মণ্ডল বাংলানিউজকে বলেন, নারীর মন সহজে গলানো যায়। তাদের কাছে ভোটের প্রতিশ্রুতি আদায় করতে বেগ পেতে হয় না। প্রার্থীর কাছে নারীদের কোনো দাবি-দাওয়া থাকে না। এছাড়া নারী ক্যানভাসারদের ভোট চাওয়ার কৌশলও ভালো। তাই সব দিক থেকেই নারীর কদর এবার বেশি বলে জানান তিনি।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৩১ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২০, ২০১৫
পিসি/