মারিয়াপাড়া, রাজশাহী থেকে: এমন নয় যে, তারা বিএনপির প্রতীক ধানের শীষে ভোট দেন না। বিষয়টি নিয়ে মারিয়াপাড়া মিশন মোড়ের আদিবাসী সাঁওতাল সম্প্রদায়ের জওহর লাল সর্দার বলেন, ‘ধানের শীষে ভোট দিলেও ভাবে আমরা নৌকার লোক।
এ গ্রামে ১৪ ঘর সাঁওতাল পরিবারের বাস। ভোটার সংখ্যা প্রায় দেড় শ’। আর নৌকা প্রতীকের আব্দুল মজিদের ওপরই তাদের ভরসা বেশি।
একটি বাড়িতে ধান মাড়াইয়ের কাজ করছিলেন বেশ কয়েকজন সাঁওতাল নারী-পুরুষ। স্যামসন হাজদা সাঁওতালদের নিজস্ব ভাষায় বলেন, ‘আবু দো অক্ষয় ভাকু নিজয় কা দোঁনা’। যার মানে দাঁড়ায়- ‘কেউ আমাদের আপন নয়’।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ জানে আমাদের যাওয়ার জায়গা নেই। তাই দাম দেয় না। আবার বিএনপিতে ভোট দিলেও তারা আমাদের বিশ্বাস করে না। তাই নৌকাতেই যাই।
বাবলু হাজদা এবার প্রথম ভোট দেবেন। উচ্চ মাধ্যমিক পেরিয়ে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য লড়ছেন তিনি। বাংলানিউজকে বলেন, ভোট আসে- ভোট যায়। সাঁওতালদের কোনো উন্নতি নেই। আমাদের সমাজে শিক্ষার হার একেবারেই কম। চাকমা বা গারো আদিবাসী সম্প্রদায় যেভাবে শিক্ষা-দীক্ষায় এগিয়েছে, আমরা এগোতে পারিনি। আমাদের শিশুদের স্কুলে যাওয়ার জন্য বিশেষ কোনো প্রণোদনাও নেই।
দিনমজুর রানী লিলা মুর্মু বলেন, আমরা ভাত ডাল পেলেই খুশি। ভোট নিয়ে এতো মাথা ঘামাতে চাই না। যখন যে কাজ পান, তখন তাই করেন- জানালেন এমনটাই।
এ কারণে কে মেয়র হলেন, কে কাউন্সিলর হলেন, সে বিষয়ে কোনো আগ্রহ নেই।
ইসহাক মার্ডি এখানে সাঁওতাল গ্রামের প্রধান। তিনি বলেন, এই পাড়ায় বিএনপির প্রার্থী আসেন না। স্বতন্ত্র দুই-একজন এসেছিলেন। আমাদের আসলে কেউ ওভাবে মূল্যায়ন করে না। ভোটের সংখ্যাও কম।
তিনি বলেন, আমাদের অনেক লোক অনেক সময় ধানের শীষে ভোট দিয়েছেন। তবে বিএনপি বিশ্বাস করে না এসব। এছাড়া গরিব মানুষগুলো প্রার্থীদের কাছ থেকে অল্প কিছু উপহার পেলেই অনেক সময় ভোট বিক্রি করে দেন বলেও জানান তিনি। এখানে অল্পতেই মানুষকে খুশি করা যায়।
আরেক ব্যক্তি রবিন মার্ডি বলেন, আমরা আদিবাসী গোষ্ঠী, অন্যদের মতোই আমাদের এলাকায় যেন পানি সাপ্লাই দেওয়া হয় সে দাবি জানাই।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৫৬ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২২, ২০১৫
এমএন/আইএ
** মানুষ এখন সরকারি দলে...