কুষ্টিয়া: পৌরসভা নির্বাচন সামনে রেখে কুষ্টিয়া শহর ও শহরতলীর গ্রামগুলোতে রীতিমত উৎসবের আমেজ লক্ষ্য করা গেছে। নৌকা ও ধানের শীষ প্রতীকে ছেয়ে গেছে রাস্তাঘাট।
কুষ্টিয়া শহরের প্রাণকেন্দ্র শাপলা চত্বর, বড়বাজার ব্যবসায়ী পট্টি, রেলওয়ে স্টেশন, বাস টার্মিনাল, আওয়ামী লীগ ও বিএনপির জেলা কার্যালয় ঘুরে দেখা গেছে একই চিত্র।
নির্বাচনকে ঘিরে বড় ধরনের সভা-সমাবেশ, মিছিল মিটিং, মাত্রারিক্ত মাইকিং, শো-ডাউনের ওপর বিধিনিষেধ থাকায় আওয়ামী লীগ ও বিএনপির মেয়র প্রার্থী এবং দলীয় নেতাকর্মীরা ছোট-ছোট দলে বিভক্ত হয়ে শহরব্যাপী পৌরসভার আওতাধীনএলাকায় গণসংযোগে ব্যস্ত সময় পার করছেন।
অন্যদিকে, শহরের দোকান-পাট, চায়ের দোকান ও খোলা জায়গায় জড়ো হয়ে নিজ নিজ দলের প্রার্থীর পক্ষে প্রচারণা চালাচ্ছেন স্থানীয় আওযামী লীগ ও বিএনপির নেতাকর্মী ও সমর্থকরা।
বুধবার (২৩ ডিসেম্বর) রাত সাড়ে ৯টার দিকে কুষ্টিয়া শহরের বড়বাজার ব্যবসা পট্টির গলির ভেতর সীমিত পরিসরে ঘরোয়া পরিবেশে আয়োজিত মিটিং থেকে হাত মাইকে ভেসে এলো ব্যতিক্রমধর্মী এক ঘোষণা।
আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী আনোয়ার আলীর ওই গণসংযোগ সভা থেকে বারবার বলা হচ্ছে, সুন্দর বাচনভঙ্গি ও মার্জিত আচরণ দিয়ে ভোটারদের মন জয় করতে হবে।
কিন্তু কেন? এমন প্রশ্নের উত্তরে ওই সভায় উপস্থিত আরিফুর রহমানের যুক্তি হলো লালন ফকির, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, মীর মশাররফ হোসেন, কাঙ্গাল হরিনাথ, শেখ আজিজুর রহমানসহ অসংখ্য বাউল ফকির, শিল্পী-কবি-সাহিত্যিকের স্মৃতিধন্য কুষ্টিয়ার ভোটারদের মন জয় করার জন্য মার্জিত আচরণ ও সুন্দর বাচনভঙ্গি জরুরি।
তিনি বলেন, আমাদের প্রার্থী আনোয়ার আলী নিজেও মার্জিত রুচি ও সুন্দর ব্যবহারের জন্য এলাকায় সমাদৃত। তাই তার পক্ষে যারা ভোট প্রার্থনা করতে যাবেন, তাদের আমরা এই পরামর্শই দিচ্ছি, তারা যেন সুন্দর বাচনভঙ্গি ও মার্জিত আচরণের মাধ্যমে ভোট প্রার্থনা করেন।
আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী ও তার পক্ষে কাজ করা নেতাকর্মীর ভোট প্রার্থনার এই কৌশল বিএনপি মনোনীত প্রার্থী ও জেলা বিএনপির শীর্ষ নেতাদেরও মনে ধরেছে।
তারাও বলছেন, সাংস্কৃতিক জেলা হিসেবে পরিচিত কুষ্টিয়ার রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত নেতাকর্মী ও সমর্থকরা সাধারণ ভোটারদের কাছে সুন্দর বাচনভঙ্গি ও মার্জিত আচরণের মধ্য দিয়ে ভোট প্রার্থনা করলে সেটা আমাদের ঐতিহ্যের সঙ্গে মানানসই হবে। লালন ফকির, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ও মীর মশাররফ হোসেনের স্মৃতিধন্য কুষ্টিয়া আরো উন্নত সংস্কৃতির ধারায় ফিরতে পারবে।
কুষ্টিয়া জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ সোহরাব উদ্দিনের দৃষ্টি আকর্ষণ করলে বাংলানিউজকে তিনি বলেন, জোর-জুলুম ও হানাহানি বাদ দিয়ে মার্জিত আচরণ ও সুন্দর বাচনভঙ্গি যদি ভোট প্রার্থনার কৌশল হয়, সেটা নিঃসন্দেহে সমর্থনযোগ্য। এই কৌশল আমরাও ফলো করবো।
জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. আজগর আলী বলেন, শুভ চিন্তা ও শুভ বুদ্ধির চর্চা রাজনীতে চালু হলে সমাজের চেহারাটাই বদলে যাবে। এটা যদি এই পৌরসভা নির্চান দিয়েই শুরু হয়, ক্ষতি কী?
বাংলাদেশ সময়: ০১৪৪ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৪, ২০১৫
এজেড/এসআর
** জামায়াতের হালুয়া-রুটি টাইট হয়ে গেছে
** মোবাইল-নারকেলে আটকে যেতে পারে নৌকা
** নৌকা-ধানের শীষে গর্বিত প্রার্থী
** বিএনপির বিষফোঁড়া জামায়াত
** ‘যোগ্য লোকের পক্ষ নেব’
** আওয়ামী লীগ ৪, বিএনপি ১