শেরপুরের শ্রীবরদী থেকে: ১১ বছর ধরে শেরপুরের শ্রীবরদী পৌরসভার মেয়র পদ নিজের কব্জায় রেখেছেন আব্দুল হাকিম। ৩০ ডিসেম্বরের আসন্ন ভোটেও তিনিই দলীয় প্রার্থী হয়েছেন।
ক্ষমতায় থেকে স্বজনদের চাকরি দেওয়ার পাশাপাশি নিয়োগ বাণিজ্য আর লুটপাটের অভিযোগ উঠতে থাকায় চরম দুশ্চিন্তার মধ্যে পড়েছেন হাকিম।
অপরদিকে, আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী আবু সাইদ ভোটারদের দ্বারে-দ্বারে ঘুরে প্রতিশ্রুতির ফুলঝরি দিয়ে ভোট চাইছেন। সেইসঙ্গে বর্তমান মেয়র হাকিমের অনিয়ম-দুর্নীতির চিত্রও তুলে ধরছেন।
ফলে একদিকে নিজ দলের বিদ্রোহী, অপরদিকে দুর্নীতির নানা অভিযোগ। সবমিলিয়ে ভোটের বিপাকে রয়েছে বিএনপি। তবে একক প্রার্থী থাকায় এখানে অনেকটাই স্বস্তিতে রয়েছে আওয়ামী লীগ।
পৌর এলাকার বিভিন্ন ওয়ার্ড ঘুরে স্থানীয় ভোটার ও মেয়র প্রার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে এসব তথ্য। তবে শেষ পর্যন্ত ভোটযুদ্ধ জমবে নৌকা আর ধানের শীষের মধ্যে তাও একবাক্যে মানছেন সবাই।
শ্রীবরদী পৌরসভার ৯টি ওয়ার্ডে মোট ভোটার ১৮ হাজার ৭৬১ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ৯ হাজার ২৯০ জন এবং ৯ হাজার ৪৭১ জন নারী ভোটার। ২০০৪ সালে প্রতিষ্ঠিত এ পৌরসভায় ২০০৪ সালে পৌর প্রশাসকের দায়িত্ব পান স্থানীয় বিএনপি নেতা হাকিম। ২০১১ সালের নির্বাচনে তিনি মেয়র নির্বাচিত হন।
নির্বাচন ও ভোটসহ নানা বিষয়ে বর্তমান মেয়র ও বিএনপি দলীয় মেয়র প্রার্থী আব্দুল হাকিমের সঙ্গে কথা বলতে পৌরসভার ৩নং ওয়ার্ডের তাঁতীহাটা এলাকায় গিয়ে পাওয়া যায় হাকিমকে। মাত্রই নারী ভোটারদের নিয়ে উঠান বৈঠক শেষ করেছেন।
‘ওর কথা বাদ দেন। ওই ক্যান্ডিডেট মাত্র ৩০ ভোটের মালিক। ওর কোনো জনসমর্থন নাই। ও পৌরসভারও নতুন ভোটার। ভোটাররাও মনে করছেন এখানে ধানের শীষ ও নৌকার মধ্যেই ভোটযুদ্ধ হবে।
নিজের দলের বিদ্রোহী স্বতন্ত্র প্রার্থী বেরুনী প্রসঙ্গে এমন মন্তব্য ধানের শীষ প্রতীকের এ প্রার্থীর।
গত ১১ বছরেও পৌর এলাকার বাসিন্দাদের নাগরিক সুবিধা দিতে পারেননি। ড্রেনেজ ব্যবস্থাও নেই, পাবলিক আপনাকে ভোট দেবে কী করে, প্রশ্ন ছুঁড়তেই হাকিম দাবি করেন, এ যাবত ২৭টি রাস্তা করেছেন। বিভিন্ন ওয়ার্ডে বিদ্যুতের লাইন ও খুঁটি দিয়েছেন। আর ২ বছর কাজ করলে সব রাস্তাই পাকা হয়ে যাবে।
আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী আবু সাইদের দেখা মিললো হাসপাতালে গেট এলাকায়। তার পেছন পেছন ছুটছেন জনা পঞ্চাশেক কর্মী-সমর্থক। মেয়র হতে পারলে কী করবেন জানতে চাইলে জলদি উত্তর এলো, প্রথম কাজ হবে এখানকার নাগরিক সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করা।
বর্তমান মেয়র আব্দুল হাকিমের বিরুদ্ধে অনিয়মের ফিরিস্তি দিতে শুরু করেন তিনি। অনিয়ম ও নিয়োগ বাণিজ্য, আত্মীয়করণসহ অর্থ আত্মসাতের অভিযোগও করেন তিনি। জানান নিজের শ্যালক, ভাতিজাসহ ১০ থেকে ১২ জনকে চাকরি দিয়েছেন হাকিম।
তাই ভোটাররা এবার তাকেই বেছে নেবেন বলেও দাবি করেন নৌকা প্রতীকের এ প্রার্থী।
স্থানীয় ভায়াডাঙ্গা রোড এলাকার দানেছ নামের এক সচেতন ভোটার বলেন, এইবার নৌকার মাল্লা শক্ত। আর বিদ্রোহী ও অনিয়মের অভিযোগে বিএনপির প্রার্থী কাবু হয়ে গেছে। এবার ভোটে তার পার হওয়া অনেক কঠিন হবে।
বাংলাদেশ সময়: ০৫২৩ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৪, ২০১৫
এসআর
** ভোটযুদ্ধ সেয়ানে সেয়ানে
** ‘যোগ্য ব্যক্তি দেইখা ভোট দিমু’
** ‘আপনারা কোন পার্টিতন আইছেন’
** ‘দিনে ৪/৫ কাপ চা আর পান খিলাইতাছি’
** মেয়র নির্বাচনে এখানে কারচুপির রেকর্ড নেই
** বিদ্রোহী নিয়ে আ’লীগ আর ঘরের শত্রুর শঙ্কায় বিএনপি
** পৌরসভা শুধু নামেই!
** ‘ভোটের কতা কমু না’
** নির্বাচনী চা!
** ‘আসল খেলা ইলেকশনের আগের রাইতে’
** সুন্দর পরিচ্ছন্ন শহর গড়ার অঙ্গীকার দুই মেয়রপ্রার্থীর
** নৌকা ঠেকাতে স্বতন্ত্র প্রার্থীর পক্ষে বিএনপি!