ঢাকা, শনিবার, ১৭ কার্তিক ১৪৩১, ০২ নভেম্বর ২০২৪, ০০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

নির্বাচন

পৌর নির্বাচন

প্রচারণায় বেড়েছে শিশু শ্রমের ব্যবহার

মো.ইমরান হোসেন, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০৫৯ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৪, ২০১৫
প্রচারণায় বেড়েছে শিশু শ্রমের ব্যবহার ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

নড়াইল: নড়াইল পৌর নির্বাচনে মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীদের নির্বাচনী প্রচারণায় শিশুদের ব্যবহার করা হচ্ছে। শিশুশ্রম আইনানুযায়ী ঝুঁকিপূর্ণ কাজে শিশুদের ব্যবহার নিষেধ থাকলেও নড়াইল পৌর নির্বাচনের ক্ষেত্রে সেই নিয়ম-নীতির তোয়াক্কাই করছেন না অনেক প্রার্থী ও তার সমর্থকরা।



পোস্টার টাঙানোসহ প্রচারের ক্ষেত্রে হরহামেশায় চলছে শিশুশ্রমের ব্যবহার। শীতের সকাল থেকে রাত অবধি শিশুদের দিয়ে পোস্টার লাগানো, মাইকিং এবং চলছে অন্যান্য কাজ।

এদের কেউ কেউ সামান্য পারিশ্রমিকে কাজ করছে, কেউবা আবার মনের আনন্দে এলাকার প্রার্থীর জন্য কাজ করে যাচ্ছে। বৈদ্যুতিক খুঁটিতে কিংবা গাছের ডালে পোস্টার টাঙাতে গিয়ে প্রতিনিয়ত ঝুঁকির মধ্যে থাকছে অবুঝ শিশুরা।
 
জানা গেছে, নড়াইল পৌরসভায় নির্বাচনে অন্তত শতাধিক শিশু প্রতিদিন সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত এ কাজ করছে। এসব শিশুদের বয়স ৮-১৪ বছরের মধ্যে। কাজের বিনিময়ে একজন শিশু দিনে পায় ৫০-৬০ টাকা।

মহিষখোলা এলাকায় নির্বাচনের কাজে ব্যবহৃত ১০ বছরের শিশু জামিল বলে, আমি প্রতিদিন সকাল থেকে রাস্তায় পোস্টার লাগাই। সারাদিন কাজ করলে দুপুরে পেট ভরে খেতে দেয় সন্ধ্যায় বাড়ি যাওয়ার সময় কোনোদিন ৬০ টাকা আবার কোনোদিন ৮০ টাকাও দেয়।

শিশুটি আরও বলে রাতের বেলা যদি পোস্টার লাগাই তাহলে বেশি টাকা পাওয়া যায়। বৈদ্যুতিক খুঁটিতে কিংবা গাছের ডালে পোস্টার টাঙাতে গিয়ে যদি পড়ে যাও তাহলে কি হবে? এমন প্রশ্নের জবাবে সে বলে আমি ভাল গাছে উঠতে পারি পড়বোনা।

নড়াইল পৌরসভা নির্বাচনে সমর্থকদের আপ্যায়নসহ মিছিল বের করার দায়ে ইতোমধ্যে বিভিন্ন সময়ে পাঁচ কাউন্সিলর প্রার্থীকে জরিমানা করা হলেও শিশুশ্রম ব্যবহারের জন্য কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি প্রশাসন।

সুশাসনের জন্য প্রচারাভিযানের (সুপ্র) নড়াইল জেলা সম্পাদক হাফিজুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, সভ্য কোনো জাতি এসব কোমলমতি শিশুদের দিয়ে কোনো রকম ঝুঁকিপূর্ণ কাজ করায় না।   এটি একটি ঘৃণীত অপরাধ। শুনেছি নড়াইল পৌরসভা নির্বাচনে ঝুঁকিপূর্ণ কাজে হরহামেশায় ব্যবহৃত হচ্ছে শিশুশ্রম। এ ব্যাপারে এখনই প্রশাসনের কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া উচিত।
 
এ ব্যাপারে নড়াইল জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা রায়হান কাওছার বাংলানিউজকে জানান, শিশু শ্রম প্রচলিত আইনেই নিষিদ্ধ। কোনো অবস্থাতেই নির্বাচনের কাজে শিশুদের ব্যবহার করা যাবেনা। যদি কোনো প্রার্থী এ ধরনের কাজ করে থাকে আমরা তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিব।

ঝুঁকিপূর্ণ নির্বাচনী কাজে ব্যবহার না করে শিশুদের জন্য শিক্ষাসহ অন্যান্য সুযোগ-সুবিধার দিকে নজর দিবেন প্রার্থীসহ সংশ্লিষ্টরা। এমন প্রত্যাশা সচেতন মহলের।

বাংলাদেশ সময়: ১১০২ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৪, ২০১৫
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।