বদরগঞ্জ (রংপুর) থেকে: টানা তিনবারের নির্বাচিত মেয়র উত্তম সাহা এবারও বদরগঞ্জের মেয়র হবেন কি না, এটাই এখন উপজেলায় আলোচিত বিষয়। আগের দুবার নিশ্চিতভাবে বলা গেলেও, এবার স্বয়ং আওয়ামী লীগ সমর্থকরাই তার জয় নিয়ে সন্দিহান! কারও মুখেই জোর গলায় কিছু শোনা গেলো না।
শুক্রবার (২৫ ডিসেম্বর) দুপুরে বদরগঞ্জ রেল স্টেশনের প্লাটফর্মে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আওয়ামী লীগের এক কর্মীর কাছে জানতে চাওয়া হলো, নির্বাচনের হাওয়া কেমন? তার নাজুক উত্তর- ‘এখনও ঠিক বোঝা যাচ্ছে না, নৌকা জিতবে কি জিতবে না। ’
বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে একই দলের আরও কয়েকজন সমর্থকের মুখে শোনো গেলো, ‘এবার কেমন যেন চেপে আছে সবাই! আঁচ করা যাচ্ছে না কিছুই। ’ আরেকজন তো বলেই দিলেন, ‘ভোটের আগেই হচ্ছে আসল ভোট। কে কতোটা এগিয়ে থাকবেন তা নির্ধারণ হয়ে যাচ্ছে ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচনের আগেই!’
আওয়ামী লীগ সমর্থিত মেয়র প্রার্থী উত্তম সাহাকে চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলেছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী অধ্যাপক আজিজুল হক। তিনি মাঠে নেমেছেন নারিকেল গাছ প্রতীক নিয়ে। চমকপ্রদ ব্যাপার হলো, একসময় তিনিও আওয়ামী লীগের রাজনীতি করতেন। বিশেষ কারণে তাকে বহিষ্কার করা হয় দল থেকে। এরপর আর তার দলে ফেরা হয়নি। তবে এবার তিনি তার পুরনো দলের সামনে কঠিন প্রতিপক্ষ হয়ে দাঁড়িয়েছেন। এমনই কঠিন যে, নির্বাচনে কারচুপি না হলে নাকি তার জয় হবেই হবে!
যদিও নির্বাচন আসন্ন বলে বর্তমান মেয়র রাস্তাঘাট মেরামতের কাজ শুরু করেছেন কিছুদিন আগে থেকে। ভোটারদের মন জয় করতেই যে তার এই উদ্যোগ তা বুঝতে বাকি নেই কারও! তবে এবার সবাই সচেতন। এ কারণেই তার জয় নিয়ে এতো সংশয়। বদরগঞ্জবাসী এবার পরিবর্তন চাইছেন বলে মোড়ে মোড়ে চায়ের কাপের আড্ডায় কথা বলে বোঝা গেলো।
লক্ষণীয় ব্যাপার হলো, বিএনপি সমর্থিত মেয়র পদপ্রার্থী অধ্যাপক পরিতোষ চক্রবর্তী সাবেক সংসদ সদস্য। তিনি পৌরসভা নির্বাচনে দাঁড়ানোতে অবাক হয়েছেন স্থানীয়রা। বাংলানিউজের বিভাগীয় স্টাফ করেসপন্ডেন্টও তার কাছে একথা জানতে চেয়েছিলেন।
তিনি বলেন, ‘বিএনপির চেয়ারপারসন আমাকে চিঠি পাঠিয়েছেন। তার আদেশেই মেয়র নির্বাচন করছি। ’
মেয়র পদে উত্তম সাহা ও আজিজুল হকের প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপি সমর্থিত অধ্যাপক পরিতোষ চক্রবর্তী, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী আব্দুল বাকী, জাতীয় পার্টি সমর্থিত লাতিফুল খাবীর ও এনপিপির প্রার্থী শামীম আরা বেগম। প্রত্যেকেই হাতেগোণা ভোট পাবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। আদতে মূল লড়াইটা হবে নৌকা ও নারিকেল গাছের মধ্যে। নৌকা ভাসবে নাকি নারিকেলের মিষ্টি পানি শেষ হাসি হাসবে, তা চূড়ান্ত হবে ৩০ ডিসেম্বর পৌরসভা নির্বাচনের দিন।
বাংলাদেশ সময়: ১১২৬ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৬, ২০১৫
জেএইচ/এমজেএফ
** নারী ভোটার বেশি, ভোট ধরে রাখতে পাহারা!
** হিমালয়ের পাদদেশে ভোটের হাওয়া
** আবাদি জমিতেও পোস্টার, ছেয়ে গেছে প্ল্যাটফর্মও
** দিনে ভোটযুদ্ধের উত্তাপ, রাতে শীতের প্রকোপ
** প্রার্থীদের মার্কা যখন বিনোদনের খোরাক!