শেরপুর (বগুড়া) থেকে ফিরে: আসন্ন পৌরসভা নির্বাচনে বগুড়ার শেরপুরে মেয়র পদে দুই দলের বর্ষিয়ান ও তুখোড় রাজনীতিকরা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তাদের মধ্যেই মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে বলে মনে করছেন স্থানীয়রা।
শনিবার (২৬ ডিসেম্বর) বগুড়ার শেরপুর পৌরসভার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে ও স্থানীয় বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষের সঙ্গে কথা হলে এমন চিত্র পাওয়া গেছে।
মেয়র পদে আওয়ামী লীগ থেকে নৌকা মার্কায় নির্বাচন করছেন দলটির উপজেলা সভাপতি আব্দুস সাত্তার; আর ধানের শীষ প্রতীকে নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন বগুড়া শহর বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ও বর্তমান মেয়র স্বাধীন কুমার কুন্ডু।
স্থানীয়রা বলছেন, বিগত পৌরসভা নির্বাচনে এই দুই রাজনীতিক আওয়ামী লীগ ও বিএনপির সমর্থনে মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন।
তখন আব্দুস সাত্তারকে হারিয়ে মেয়র হন স্বাধীন কুমার কুন্ডু। এবারও মেয়র পদে দুই দলের প্রার্থী হয়ে নির্বাচনী মাঠে চষে বেড়াচ্ছেন তারা।
তবে মেয়র পদে ইসলামী শাসনতন্ত্র আন্দোলনের প্রার্থী হিসেবে হাতপাখা নিয়ে এমরান কামাল ও ন্যাশনাল পিপলস পার্টির হয়ে আম প্রতীকে অংশ নিয়েছেন আবুল হোসেন আকাশ।
কিন্তু জয়-পরাজয়ের চূড়ান্ত লড়াই আওয়ামী লীগ ও বিএনপি প্রার্থীর মধ্যেই হবে বলে জানান স্থানীয় ভোটাররা।
তারা বলেন, গত নির্বাচনে যারা প্রার্থী হয়েছিলেন, এবারও তারাই প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তবে যেই নির্বাচনে জয়ী হোনন না কেন-হাড্ডাহাড্ডি লড়াই করেই জয় পেতে হবে।
পৌরএলাকার বাসিন্দা আমির আলী, আমজাদ হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, এবার ভোটযুদ্ধ করেই মেয়র হতে হবে। আওয়ামী লীগ ও বিএনপির প্রার্থীর মধ্যে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে। আর এই দুই প্রার্থীর মধ্যেই জয়-পরাজয় হবে বলে মনে করছি আমরা।
জয়ের ব্যাপারে বেশ আশাবাদী আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থী মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস সাত্তার।
বাংলানিউজকে তিনি বলেন, দীর্ঘদিন ধরে রাজনীতি করে মানুষের সেবা দিয়ে যাচ্ছি। সাধ্য অনুযায়ী মানুষের ভালো করার চেষ্টা করেছি, আমার সঙ্গে সেই জনগণই রয়েছেন।
দলের নেতা-কর্মীরাও কাজ করে যাচ্ছেন। তাই জয়ের ব্যাপারে আমি শতভাগ আশাবাদী।
পৌরসভার সেবা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এটি নামেই কেবল ‘ক’ শ্রেণীর পৌরসভা। এখানে নাগরিক সুযোগ-সুবিধা বলে তেমন কিছুই নেই।
‘ড্রেনেজ ব্যবস্থার অভাব যেমন আছে, রাস্তা-ঘাটেও উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি। শহুরে বাজার বলতে যা বোঝায় তা এখানে আজও গড়ে ওঠেনি। নেই পাবলিক টয়লেটও।
ডাস্টবিনের ক্ষেত্রেও একইচিত্র। পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থাও অত্যন্ত বাজে। লাইটিং ব্যবস্থা থাকলেও আলো নেই। পৌর উদ্যোগে আজও এখানে ওয়াটার স্লাপাই ব্যবস্থা গড়ে তোলা হয়নি। ’
নির্বাচনে জয়ী হলে এসব সমস্যা সমাধান ও পূর্ণ নাগরিক সেবা দেওয়ার প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেবেন বলে জানিয়েছেন মেয়র প্রার্থী আব্দুস সাত্তার।
এদিকে দ্বিতীয় মেয়াদে মেয়র হয়ে পৌরসভার অসম্পূর্ণ কাজ বাস্তবায়ন করবেন বলে জানিয়েছেন বর্তমান মেয়র ও বিএনপি মনোনীত মেয়র প্রার্থী স্বাধীন কুমার কুন্ডু।
বাংলানিউজকে তিনি বলেন, বিগত নির্বাচনে আমাকে পৌরসবাসী ভোট দিয়ে মেয়র করেছে। কিন্তু পৌরসভায় কাঙ্ক্ষিত উন্নয়ন হয়নি। এ কারণে দায়িত্ব পাওয়ার পরপরই পৌরসভার উন্নয়নে নানামুখী প্রকল্প নেবো।
তিনি জানান, গত মেয়াদে পৌরসভার অবহেলিত রাস্তা-ঘাট সংস্কার ও পাকাকরণ করা হয়েছে। এছাড়া ড্রেন-কালভার্ট, হাট-বাজারের উন্নয়ন, শহর আলোকিত ও পরিষ্কার-পরিছন্ন কার্যক্রমও চালানো হয়েছে।
অন্যদিকে মেয়র হলে সাধ্য অনুযায়ী পৌরসেবা দেওয়ার বিষয়ে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেবেন বলেন জানিয়েছেন ইসলামী শাসনতন্ত আন্দোলনের মেয়র প্রার্থী এমরান কামাল।
তিনি বলেন, ন্যায় ও ইনসাফের ভিত্তিতে পৌরসভা পরিচালনা করা হবে।
তবে অপর প্রার্থী আবুল হোসেন আকাশের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।
বাংলাদেশ সময়: ১১৫৬ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৭, ২০১৫
এমবিএইচ/এমএ
** লোক বুঝে মার্কায় সিল হবে গোপনে