রূপগঞ্জ (নারায়ণগঞ্জ): নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার তারাব পৌরসভাটি প্রথম শ্রেণির পৌরসভা।
ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক ঘেঁষা এ পৌর এলাকায় কয়েকশ’ শিল্প-প্রতিষ্ঠান রয়েছে।
৩০ ডিসেম্বর সারাদেশে অনুষ্ঠেয় পৌর নির্বাচনকে সামনে রেখে ভোটারদের মন জয় করার চেষ্টা করছেন প্রার্থীরা। দিয়ে যাচ্ছেন বিভিন্ন ধরনের জনসেবা ও উন্নয়নমূলক কাজের প্রতিশ্রুতি।
মেয়র, সাধারণ কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর প্রার্থীরা ভোটারদের দ্বারে দ্বারে পৌঁছে ভোট চাচ্ছেন।
ভোটের বাকি আর মাত্র দুইদিন। শেষ মুহূর্তে প্রচার-প্রচারণা ও জনসমর্থনে এগিয়ে রয়েছেন আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থী উপজেলা আওয়ামী মহিলা লীগ সভানেত্রী মিসেস হাসিনা গাজী (নৌকা)।
বিগত কয়েক বছর ধরে তিনি পৌরবাসীর মন জয় করতে রাত-দিন কাজ করে চলেছেন। সাধারণ মানুষের দ্বারে দ্বারে ঘুরে বেরিয়ে তাদের সুখে-দুঃখে পাশে ছিলেন। নিজের অর্থায়নে বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজ করেছেন তিনি। বিশেষ করে নারীরা বিপদে-আপদে সব সময় তাকে কাছে পেয়েছেন। এতে সব শ্রেণি-পেশার নারীরা তাকে সমর্থন দিয়েছেন। সাধারণ মানুষকে ভালোবাসা দিয়ে মন জয় করায় হাসিনা গাজীর বেশ জনসমর্থন রয়েছে। দলীয় নেতাকর্মীরা এক হয়ে রাত-দিন গণসংযোগ করে দলীয় প্রার্থীর পক্ষে ভোট চাইছেন। এছাড়া আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের একটাই কথা, দল থেকে একক প্রার্থী হওয়ায় নৌকার বিজয় হবেই হবে।
অপরদিকে, বিএনপি দলীয় সূত্র মতে, এখানে বিএনপি তিন ভাগে বিভক্ত। তাদের কেন্দ্রীয় বিভিন্ন কর্মসূচিও পৃথকভাবে পালন করতে দেখা গেছে। জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও রূপগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা কাজী মনিরুজ্জামান একটি গ্রুপের নেতৃত্বে আছেন।
অন্য দুই গ্রুপের একটির নেতৃত্ব দিচ্ছেন যুবদলের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-অর্থ বিষয়ক সম্পাদক মুস্তাফিজুর রহমান ভূঁইয়া দিপু। অপর গ্রুপের নেতৃত্বে রয়েছেন জেলা বিএনপির সভাপতি অ্যাডভোকেট তৈমূর আলম খন্দকার।
বিএনপি মনোনিত মেয়র প্রার্থী নাসির উদ্দিন ভূঁইয়ার তেমন কোনো জনসমর্থন না থাকলেও তাকে দল থেকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। কাজী মনিরুজ্জামান মনির গ্রুপের সমর্থক বিধায় নাসির উদ্দিন ভূঁইয়ার পক্ষে বিএনপির অন্য দুই গ্রুপ মাঠে নেমে কাজ করছে না। দুই/একদিন গণসংযোগ করলেও সংশ্লিষ্টদের কাছে তা লোক দেখানো বলেই মনে হয়েছে। ওই দুই গ্রুপের নেতাকর্মীরা নিরব ভূমিকা পালন করছেন। এতে বিএনপি প্রার্থীর ভরাডুবি হওয়ার আশঙ্কা করছেন নেতাকর্মীরা।
এছাড়া স্বতন্ত্র প্রার্থী ও বর্তমান মেয়র শফিকুল ইসলাম চৌধুরীও (প্রতীক-জগ) গণসংযোগ চালিয়ে যাচ্ছেন। তিনি তারাব পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। বিএনপির বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ায় ও দলীয় নিয়ম ভঙ্গের অভিযোগে দল থেকে তাকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
এদিকে, ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থী শিব্বির আহাম্মেদ (প্রতীক-হাতপাখা) ও স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী হাবিবুর রহমান হাবিবকে (প্রতীক-কম্পিউটার) তেমন কোনো প্রচার-প্রচারণা চালাতে দেখা যায়নি। তারা নিরব ভূমিকা পালন করছেন।
সব মিলিয়ে আওয়ামী লীগ প্রার্থী হাসিনা গাজী সুবিধাজনক অবস্থানে রয়েছেন। তার জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী নেতাকর্মীরা।
এছাড়া সাধারণ কাউন্সিলর প্রার্থী হিসেবে ২৪ জন ও সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর প্রার্থী হিসেবে পাঁচজন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এদের মধ্যে সংরক্ষিত মহিলা আসনের এক, দুই, তিন নম্বর ওয়ার্ডে লায়লা পারভিন, চার, পাঁচ, ছয় নম্বর ওয়ার্ডে আছমা বেগম, সাধারণ কাউন্সিলরের মধ্যে দুই নম্বর ওয়ার্ডে হোসেন আহাম্মেদ রাজিব, ছয় নম্বর ওয়া০র্ডে আশরাফুল ইসলাম ও সাত নম্বর ওয়ার্ডে আনোয়ার হোসেন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হতে যাচ্ছেন।
আওয়ামী লীগ প্রার্থী মিসেস হাসিনা গাজী বলেন, আল্লাহ তায়ালা আমাকে অনেক দিয়েছেন। সাধারণ মানুষের পাশে থেকে বাকি সময়টুকু পার করতে চাই। আমি সব সময় সাধারণ মানুষের কথা চিন্তা করেছি। পৌরবাসীর সুখে-দুঃখে আগেও ছিলাম, ভবিষ্যতেও থাকবো।
নির্বাচনের বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও রিটার্নিং অফিসার লোকমান হোসেন বলেন, অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিপুল সংখ্যক সদস্য নির্বাচনী এলাকায় উপস্থিত থাকবে। পাশাপাশি ম্যাজিস্ট্রেটরাও থাকবেন।
উল্লেখ্য, তারাব পৌরসভার মোট ৭৮ হাজার ৮৯৭ জন ভোটারের মধ্যে ৪১ হাজার ৪২৯ জন পুরুষ ও ৩৭ হাজার ৪৬৮ জন নারী। এখানে মোট ভোটকেন্দ্র ৩৭টি, বুথের সংখ্যা ২২২টি।
বাংলাদেশ সময়: ১৯০১ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৭, ২০১৫/আপডেট: ১৯০৯
এসআই