ঢাকা: আসন্ন পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র পদে আওয়ামী লীগ প্রার্থীদের নিরঙ্কুশ জয়ের আশা করছে দলটি। ভালো ফলাফলের জন্য কেন্দ্র থেকে চালানো হচ্ছে সব ধরনের তৎপরতা।
আর মাত্র দুই দিন পরই ২৩৪টি পৌর সভায় মেয়র পদে দলীয় প্রতিকে নির্বাচন হতে যাচ্ছে। দীর্ঘ ৭ বছর পর নৌকা ও ধানের শীষ প্রতীকের মধ্যে কোনো নির্বাচনী লড়াই অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। অন্য যেকোনো পৌর নির্বাচনের চেয়ে এবারের গুরুত্ব বেশি।
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ এ নির্বাচনকে বিশেষ গুরুত্বের সঙ্গে নিয়েছে। এ নির্বাচনের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ সরকারের প্রতি জনগণের সমর্থন প্রমাণের পাশাপাশি দলটির তৃণমূলকে স্থানীয়ভাবে ক্ষমতায়ন করতে চায় দলটি। সরকারবিরোধী জোট ভবিষ্যতে যেন আন্দোলন করতে সাহস না পায়, তারও জানান দিতে চায় দলটি।
পৌর নির্বাচন তদারকি করতে আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতাদের নিয়ে একটি কেন্দ্রীয় তদারক কমিটি প্রতিনিয়ত কাজ করে যাচ্ছে। আওয়ামী লীগ প্রার্থীদের সব ধরনের সহযোগিতা দেওয়া হচ্ছে কেন্দ্র থেকে। দুর্বল প্রার্থীদের আর্থিকভাবে সহায়তা করারও খবর পাওয়া যাচ্ছে।
নির্বাচনে সর্বশেষ মাঠের অবস্থা বিবেচনা করে আওয়ামী লীগ নেতারা আশা করছেন, এবারের পৌর নির্বাচনে মেয়র পদে নৌকা প্রতীকে আওয়ামী লীগ প্রার্থীদের অধিকাংশই জয়ী হবেন।
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ বলেন, সাংগঠনিক সম্পাদকদের সঙ্গে পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, ২০১টি পৌরসভায় আওয়ামী লীগ প্রার্থীরা এগিয়ে রয়েছেন।
আওয়ামী লীগ নেতারা মনে করেন, সরকার দলীয় কেউ নির্বাচিত হলে এলাকার উন্নয়নে বেশি অবদান রাখতে পারবেন। যেটা সরকারবিরোধী পক্ষের নির্বাচিত মেয়রদের জন্য কঠিন বলে মনে করেন মানুষ। সেজন্য নৌকা প্রতীকেই বেশি ভোট দেবেন ভোটাররা।
এছাড়া নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মাসেতু নির্মাণ কাজ শুরু, সীমান্ত সমস্যার নিরসন, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার সম্পন্ন ও রায় কার্যকরসহ বিভিন্ন বড় উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের পাশাপাশি বিভিন্ন জাতীয় সমস্যা সমাধানে সরকারের সফলতা আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থীদের জন্য ‘প্লাস পয়েন্ট’ হিসেবে কাজ করবে। পক্ষান্তরে বিএনপি-জামায়াত জোটের সহিংস রাজনীতির জন্য জনগণ তাদের ওপর বিরক্ত।
সর্বশেষ মুক্তিযুদ্ধ ও মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার বির্তকিত মন্তব্য ও শহীদ বুদ্ধিজীবীদের নিয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়ের আপত্তিকর মন্তব্য পৌর নির্বাচনে বিএনপির মেয়র প্রার্থীদের পরাজয়ের শেষ পেরেক ঠুঁকে দেবে বলে মনে করে আওয়ামী লীগ।
আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থীদের সংখ্যা কমিয়ে আনতে পারাও নির্বাচনে সফলতা আনতে ভূমিকা পালন করবে।
দলীয় সূত্রে জানায়, প্রার্থিতা প্রত্যাহারের পরও আওয়ামী লীগের যেসব বিদ্রোহী প্রার্থী ছিলেন, তাদের অনেকের সঙ্গে সমঝোতা করে নেওয়া হয়েছে।
এছাড়া নির্বাচনী মাঠে নেতাকর্মীদের সরব উপস্থিতির প্রভাব ও তাদের ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টা আওয়ামী লীগ প্রার্থীদের সুফল দেবে বলেও মনে করে আওয়ামী লীগ।
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য নূহ-উল আলম লেনিন বাংলানিউজকে বলেন, বিগত সময়ে সহিংস রাজনীতির কথা মানুষের মনে আছে। এবারের নির্বাচনে মানুষ তার জবাব দেবেন। তাছাড়া ব্যাপক উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে সরকারের প্রতি ব্যাপক জনসমর্থন রয়েছে।
খালেদা জিয়া ও গয়েশ্বর চন্দ্র রায়ের বক্তব্য প্রসঙ্গে তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধ ও মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে খালেদা জিয়ার বিভ্রান্তিকর বক্তব্য পৌর নির্বাচনে বিএনপি প্রার্থীদের ভোট কমাবে। বিএনপি পাকিস্তানকে খুশি করতে গিয়ে নিজের পায়ে কুড়োল মেরেছে।
এবারের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ প্রার্থীদের পক্ষে ব্যাপক সাড়া পাওয়া যাচ্ছে জানিয়ে লেনিন বলেন, নির্বাচনী প্রচারণায় গিয়ে দেখেছি, উঠান বৈঠক সমাবেশে রূপান্তরিত হচ্ছে।
আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থীদের নিরঙ্কুশ জয় আশা করে আওয়ামী লীগের এ নেতা বলেন, নিশ্চিতভাবে বলা যায়, আওয়ামী লীগ প্রার্থীরা নিরঙ্কুশভাবে বিজয় লাভ করবেন। প্রাথমিক প্রতিবেদনে আমরা দেখেছি, দু্ই শতাধিক পৌরসভায় আওয়ামী লীগ প্রার্থীরা এগিয়ে আছেন।
বাংলাদেশ সময়: ২০১৮ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৭, ২০১৫
এমইউএম/এএসআর